আইইউবিতে ক্যারিয়ার ডে: চাকরি ও ইন্টার্নশিপের পরামর্শসহ নানা সুযোগ
Published: 9th, May 2025 GMT
প্রায় ৬০টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যারিয়ার ও নেটওয়ার্কিং ডে ২০২৫’। গত মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবির নিজস্ব ক্যাম্পাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার গাইডেন্স, প্লেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই রিলেশনস (সিজিপি অ্যান্ড এআর) কার্যালয়।
দিনব্যাপী আয়োজনে আইইউবির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টলে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ক্যারিয়ার বিষয়ে সরাসরি কথা বলার পাশাপাশি চাকরি ও ইন্টার্নশিপের জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন এবং প্রশিক্ষণ সেশন ও ওয়াক-ইন ইন্টারভিউতে অংশ নেন।
উদ্বোধনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয় আইইউবির মাল্টিপারপাস হলে। এতে উপস্থিত ছিলেন আইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিদার এ হোসেইন, উপাচার্য অধ্যাপক ম.
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দিদার এ হোসেইন বলেন, ‘যা করতে ভালো লাগে, সেটা করো। অর্থ উপার্জনই শেষ কথা নয়। নিজের জন্য একটা জায়গা তৈরি করতে হবে, বুঝতে হবে তুমি কোথায় যাচ্ছ।...সিদ্ধান্ত নাও কোন কাজটা তুমি করতে চাও।’
উপাচার্য ম. তামিম বলেন, ‘পাস করার পর শিক্ষার্থীরা যেন একটা ভালো জায়গায় কাজের সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় দায়িত্ব। আইইউবিতে আমরা “ক্যারিয়ার ডে” –কে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখি, যেখানে একাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সংযোগ তৈরি হয়। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করা, যেন তারা চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারে।’
মুনশি এইচআর সল্যুশনস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আগে বুঝতে হবে তারা কী চায়, কী করতে ভালো লাগে। ক্যারিয়ার সব সময় সরল পথে চলে না। আমি কম্পিউটার সায়েন্স দিয়ে শুরু করেছিলাম, পরে এসে দেখি আমার ভালো লাগছে মানবসম্পদ। তাই বলি, নেটওয়ার্কিং এবং নিজেকে জানাটা খুব জরুরি।’
আইইউবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং এডুকো পাথওয়েজ বাংলাদেশের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা কাজী ইয়ামিন কবীর তুষার বলেন, ‘এখনকার চাকরির বাজারে বহু কাজ একসঙ্গে জানতে হয়, করতে হয়। শুধু ইঞ্জিনিয়ার বা কোডার হলেই হবে না, সবকিছুতেই কিছুটা দক্ষতা দরকার।’
এই আয়োজনে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি, সিটি ব্যাংক পিএলসি, বিকাশ লিমিটেড, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি।
এফএমসিজি খাত থেকে অংশ নেয় স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, এসিআই পিএলসি এবং এম এম ইস্পাহানি লিমিটেড। অন্যান্য খাত থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শেভরন বাংলাদেশ, একমি ল্যাবরেটরিজ, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, ইফাদ গ্রুপ, এসকয়ার ইলেকট্রনিকস, অ্যাসোসিয়েটেড বিল্ডার্স করপোরেশন লিমিটেড, এইচএস এন্টারপ্রাইজ (হোন্ডা পাওয়ার প্রোডাক্টস বাংলাদেশ), সামিট কমিউনিকেশনস, সুপারস্টার গ্রুপ, টিচ ফর বাংলাদেশ, ফকির অ্যাপারেলস, হা-মীম গ্রুপ, রহিমআফরোজ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, বিএসআরএম, এপেক্স ফুটওয়্যার, অগমেডিক্স বাংলাদেশ, জেনেক্স ইনফোসিস পিএলসি, এটিএন নিউজ এবং পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।
আয়োজক আইইউবির সিজিপি অ্যান্ড এআর–এর উপপরিচালক শারমিন ইসলাম বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। প্রতিটি আলাপ এবং জমা দেওয়া সিভি তাদের পেশাগত লক্ষ্যের এক ধাপ কাছাকাছি নিয়ে যায়। আইইউবির শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনায় যাঁরা আস্থা রেখেছেন, তাঁদের প্রতি আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত আইইউব র ক প এলস র জন য অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব
ইসলামে অসুস্থতা একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা মুমিনের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসাকে শক্তিশালী করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা রোগীর জন্য শান্তি ও সুস্থতা নিয়ে আসে এবং দোয়াকারীর জন্য আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।
মহানবী (সা.) অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে।
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়াইসলামে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) কয়েকটি নির্দিষ্ট দোয়া শিখিয়েছেন। এই দোয়াগুলো রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রধান দোয়া উল্লেখ করা হলো:
১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়া পড়তেন:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, আযহিবিল বাস, ইশফি আনতাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফাউক, শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামা।
অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু, রোগ দূর করো, সুস্থতা দাও, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতা নেই, এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগ রাখে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪৩)
পড়ার নিয়ম:
রোগীর ডান হাত দিয়ে তার কপাল বা শরীরের ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া পড়া।
তিনবার বা সাতবার পড়া উত্তম।
রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন।
আরও পড়ুননববিবাহিতদের জন্য তিনটি দোয়া২১ জুলাই ২০২৫২. সুরা ফাতিহা পড়া
সুরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে আছে, সুরা ফাতিহা শিফা বা নিরাময়ের জন্য পড়া যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন, এবং নবীজি (সা.) এটি অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)
যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২পড়ার নিয়ম:
সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁ দেওয়া।
রোগীর কপালে বা ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।
৩. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
এই তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস: ১১২, সুরা ফালাক: ১১৩, সুরা নাস: ১১৪) অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য পড়া হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ হলে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং শরীরে ফুঁ দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫,০১৭)
তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।
পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে রোগীর শরীরে মুছে দেওয়া।
৪. সাধারণ দোয়া
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নিজের ভাষায়ও দোয়া করা যায়। উদাহরণ: ‘হে আল্লাহ! আমার/তার রোগ দূর করো, সুস্থতা দান করো, তুমি সব ক্ষমতার মালিক।’ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)
নিজের ভাষায় দোয়া করার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা জরুরি।
আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আমলনবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন: তুমি পবিত্র হও, তোমার পথ পবিত্র হোক এবং তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৮)
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে মুমিন ধৈর্যের সঙ্গে অসুস্থতা সহ্য করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৫২)
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।’’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)
এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।
দোয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণ করা, কারণ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৭৮)
দোয়া করার সময় শিরক বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি এড়ানো দরকার। শুধু কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করব আমরা।
আরও পড়ুনদোয়া কীভাবে করতে হয়২০ এপ্রিল ২০২৫