মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া আইনের শাসন, গণতন্ত্র কিছুই থাকে না
Published: 10th, May 2025 GMT
মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া আইনের শাসন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার– কোনোকিছুই থাকে না। বর্তমান সরকার সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। ফ্যাসিস্ট সরকার গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াত কায়েম করেছিল। সংবাদ সম্মেলনগুলোকে তারা প্রশংসা-স্তুতির বিষয়ে পরিণত করে দেশের মানুষকে অপমান করত।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড.
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে খুনের মামলা দেওয়া প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলার বাদীদের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যবস্থা তখনই নেওয়া যায়, যখন মামলাটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আমরা দায়িত্বে থাকলে ব্যবস্থা নেব, তা না হলে যারা ক্ষমতায় আসবে, আশা করি তারা নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে দলদাসে পরিণত করা হয়েছে। অথচ ৯০ দশকে স্বৈরশাসক এরশাদের পতনে এই সংগঠনগুলোর দারুণ ভূমিকা ছিল। তাদের নিরপেক্ষভাবে চলতে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, আমরা একটি স্বাধীন ও দলনিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পরিবেশ চাই এবং এই পরিবেশ আগামীতেও অক্ষুণ্ন থাকবে– এমন নিশ্চয়তা চাই। তিনি বলেন, বর্তমানে সংবাদপত্র নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। ছাপা পত্রিকার সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন বাজার ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নোয়াব সভাপতি জানান, করোনা মহামারির সময় সব শিল্প প্রণোদনা পেলেও সংবাদপত্র শিল্প কিছুই পায়নি।
নোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। কোনো সরকারকে আমরা বোঝাতে পারিনি, সমালোচকরাই আপনাদের সত্যিকারের বন্ধু। তারা কেবলই প্রশংসা পছন্দ করেন। তিনি বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার জন্য এরশাদ সরকারের পতনের পর থেকে আমরা চেষ্টা করছি। গত ১৫ বছর তার আরও অবনমন ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ২৬৬ জন সাংবাদিক খুনের মামলার আসামি হয়েছেন। এটা সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। মব কালচারের কারণে এসব সাংবাদিক অফিসে যেতেও ভয় পান। এই পরিবেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা হতে পারে না।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এ থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছি। পুলিশি তদন্ত সবসময় সঠিক গতিতে এগোয় না। অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করতে। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে নোয়াবের প্রতি আহ্বান জানান।
বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবদুল হাকিম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নোয়াবের সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান বাদল। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ওয়ার্দা আশরাফ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, মানবজমিনের সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ ও সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
বিশিষ্টজনের মধ্যে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান, সায়হাম গ্রুপের এমডি সৈয়দ শাফকাত আহমেদ, পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ, বাংলাদেশ চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রীতি চক্রবর্তী, ওরিয়ান গ্রুপের এমডি সালমান করিম, বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব দপত র অন ষ ঠ ন র রহম ন ব দ কত পর ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার টিপস
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের (বিজ্ঞান বিভাগের) জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা বছর এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না, তারা মনে করে এটা আবার পড়ার বিষয় নাকি! এ কারণে এই বিষয়ে তারা নম্বর কম পায়। তাই এ বিষয়ে সিরিয়াস হতে হবে।
সিলেবাস বড়
এ বিষয়ে মোট ১৬টি অধ্যায় রয়েছে। মনে রাখতে হবে, বিষয়টিতে ভূগোল, পৌরনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস মিলিয়ে রাখা হয়েছে। তাই সিলেবাস বড়, অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে এখানে। এ জন্য অনেক সতর্ক থাকতে হবে বিজ্ঞানের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর পুরো প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে। প্রশ্নে কী চেয়েছে, তা বুঝে নিয়ে উত্তর লিখবে। কোনো প্রশ্ন আংশিক পরিবর্তন করে দেওয়া হলো কি না, তা খেয়াল রাখবে।
আরও পড়ুনচীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মিলবে বই কেনারও অর্থ, আইইএলটিসে ৭ হলে আবেদন৩ ঘণ্টা আগেবহুনির্বাচনি অংশ
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে বহুনির্বাচনি অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা বইয়ের অনেক অধ্যায় মনোযোগ দিয়ে পড়বে। এ বইয়ে অনেক তথ্য–উপাত্ত ও নামের ব্যবহার রয়েছে, যা বেশি দরকারি। এ অংশে বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব। তবেই তুমি পরীক্ষায় এ+ পেতে পারো।
সৃজনশীল অংশ
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে সৃজনশীল অংশে ভালো করা জরুরি। সৃজনশীল উত্তরের ধাপগুলো মেনে উত্তর লিখবে। স্বাধীন বাংলাদেশ; সৌরজগৎ ও ভূমণ্ডল; বাংলাদেশ ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু; রাষ্ট্র, নাগরিকতা ও আইন; বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন; জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ; এসডিজি; জাতীয় সম্পদ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা; বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থা; বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন অধ্যায় থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন হতে পারে।
সময় ভাগ করে নাও
সৃজনশীল প্রশ্নের মান অর্থাৎ নম্বর অনুযায়ী কতটুকু লিখতে হবে, তা নির্ধারণ করেই লেখা শুরু করতে হবে। বেশি নম্বরের প্রশ্নগুলো যতটুকু সম্ভব ভালো করে দেওয়া উচিত, তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে অনেক সময় লাগবে, এটা মাথায় রেখেই তোমাকে সময় ভাগ করে নিতে হবে।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকে বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা০৩ মে ২০২৫লেখা অযথা বড় করবে না
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর বড় লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায়, এটি একটি ভুল ধারণা। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখবে না। প্রাসঙ্গিক ও যথাযথ ছোট উত্তরেই বেশি নম্বর পাওয়া যায়। অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখে খাতা ভরলে সময় নষ্ট হবে, বেশি নম্বর পাওয়া যাবে না। এতে পরীক্ষকেরাও বিরক্ত হন।
লেখা শেষে রিভিশন
উত্তর লেখা শেষে তোমাকে রিভিশনের জন্য শেষ ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় হাতে রাখতে হবে। কোথাও কোনো ভুল আছে কি না কিংবা কোনো প্রশ্ন বাদ পড়ল কি না, মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। ভুল ও অপ্রাসঙ্গিক কিছু থাকলে তা কেটে দেবে।
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষার দুই মাস বাকি, পরীক্ষার্থীদের করণীয় ১০ পরামর্শ০১ মে ২০২৫যা মনে রাখবে১. ভাষা আন্দোলন হলো বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলন।
২. ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই স্লোগান নূর হোসেনের বুকে লেখা ছিল।
৩. পৃথিবীর বৃত্তের মোট পরিধি হলো ৩৬০ ডিগ্রি।
৪. জোয়ার-ভাটা প্রতি ৬ ঘণ্টা ১৩ মিনিট পরপর হয়।
৫. ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
৬. কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়।
৭. বাংলাদেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ হাজার ৮৩৩ কিলোমিটার।
৮. রাষ্ট্রের প্রাথমিক উপাদান হলো জনসমষ্টি।
৯. সরকারের বিভাগ রয়েছে ৩টি।
১০. বাংলাদেশের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ।
১১. বাংলাদেশের প্রশাসনের স্তর রয়েছে দুটি।
১২. ইউনিয়ন পরিষদ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান।
১৩. গণতন্ত্রের একটি মৌলিক বিষয় হলো নির্বাচন।
১৪. বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্যপদ লাভ করে।
১৫. বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করবে।
১৬. উৎপাদনের উপকরণ তিনটি, যথা: ভূমি, শ্রম ও মূলধন।
১৭. প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে বড় বাধা।
১৮. মূল্যবোধ সমাজবদ্ধ জীবনের বৈশিষ্ট্য।
১৯. সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া।
২০. প্রযুক্তি হলো বিজ্ঞানের প্রায়োগিক দিক।
লেখক: মিজানুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক, ধানমন্ডি সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর রুটিন, কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা-২০২৫: ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার টিপস২৯ এপ্রিল ২০২৫