আমার বড় বোন যখন সবে ক্লাস টুয়ে পড়ে আর আমি মায়ের আঁচল ধরে হাঁটতে শিখছি, ঠিক তখনই আব্বু হঠাৎ মারা গেলেন। বাবার কোনো স্মৃতিই আমার নেই। যখন স্মৃতি জমতে শুরু করল, তখন বুঝলাম, সিঙ্গেল প্যারেন্ট হিসেবে মা আমাদের লালন–পালনের দায়িত্ব নিয়েছেন, সমাজের সব সংকীর্ণতা, প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আমাদের দুই বোনকে সামলে রাখছেন। তিনি শুধু মা নন, হয়ে উঠলেন বাবা, অভিভাবক, বন্ধু, শিক্ষক—সব।

প্রতিদিন সকালে উঠে, আমাদের জন্য সবকিছু গুছিয়ে অফিসে ছুটতেন। বিকেলে ফিরতেন ক্লান্ত হয়ে, কিন্তু মুখে হাসি লেগেই থাকত। যেন তিনি আমাদের শেখাতে চান—কোনো কিছুই অসম্ভব নয়, যদি মন থেকে চাও।

প্রাইমারি স্কুলে পড়ি তখন। ছোট্ট একটা ছেলেমানুষি ভুলে হয়তো মা একটু রেগে গিয়েছিলেন। স্কুলে যাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে তিনি আমাকে একটি চড় মারলেন। আমি চোখে জল নিয়ে, গাল ফুলিয়ে বেরিয়ে পড়লাম স্কুলের পথে। মনে রাগ, কষ্ট আর অভিমান। বারবার খালি মনে হচ্ছিল, ‘মা কেন এমন করলেন?’

সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য স্কুলে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই পেয়েছিলাম।

আমার মা, সংসারের হাজারটা দায়িত্ব সামলে সকালেই যার অফিসে যাওয়ার কথা, সেই মা হঠাৎ টিফিনের সময় আমাদের ক্লাসরুমে হাজির। হাতে খাবার নয়, মুখে হাসিও নয়, খালি চোখে একরাশ অপরাধবোধ। শুধু বললেন, ‘তুই ঠিক আছিস তো?’

ওই একটা প্রশ্নেই বুঝে গিয়েছিলাম—মা আমাকে মেরে নিজেকেই শাস্তি দিয়েছেন সারাটা সকাল। আমি যেভাবে গালে ব্যথা পেয়েছিলাম, মা ঠিক সেভাবেই ব্যথা পেয়েছিলেন মনে।

আরও পড়ুনএই মা প্রতিদিন ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন যে কারণে২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মায়ের সঙ্গে ইসরাত জাহান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ২৪ বন্দি মুক্তি পাচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, “আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে বন্দি অবশিষ্ট ২৪ জনকে অচিরেই মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এ তথ্য জানান।

আরো পড়ুন:

জাতীয় দলে বাইরে অস্থিরতা, ভেতরে ‘ওয়েল সেট’!

‘বাংলাদেশে পাটভিত্তিক উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন’

আসিফ নজরুলের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো, “আলহামদুলিল্লাহ। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমাদের প্রচেষ্টা অবশেষে সাফল্যর মুখ দেখেছে। আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে বন্দি অবশিষ্ট ২৪ জনকে অচিরেই মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি লিখেছেন, “ধন্যবাদ, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।”

উপদেষ্টা আরো লিখেছেন, “(উল্লেখ্য, এর আগে প্রাথমিকভাবে বন্দি ১৮৮ জনের সবাইকে গত বছর সেপ্টেম্বরে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি অনুরোধের কারণে)।”

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ