লোহাগাড়া উপজেলার প্রধান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দরবেশ হাট ডিসি সড়ক। সড়কটি পার্বত্য বান্দরবান জেলার সঙ্গে সংযুক্ত। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের ৫ কিলোমিটার অংশে বৃষ্টির পানি জমে ৫০০ গর্ত তৈরি হয়েছে। সেসব গর্ত মাড়িয়ে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। বালুভর্তি ট্রাক চলার কারণে সড়কের এ অবস্থা হয়েছে।
পুটিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো.
সরেজিমন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বটতলী স্টেশনের মাঝখান দিয়ে পূর্ব দিকে চলে গেছে দরবেশ হাট ডিসি সড়ক। সড়কটি এখন ক্ষতবিক্ষত। বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি। এ অবস্থায় সড়কে যান চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে ডিসি সড়কে ঢোকার মুখে দুই পাশের বহুতল ভবনের দোকানদাররা নালা দখল করেছেন। ফলে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শতাধিক বালুভর্তি ট্রাক চলে এ সড়কে। গাছ, বাঁশের ট্রাকও চলে এ সড়কে। সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। বড় ট্রাকে করে ইট, কংক্রিট ও মাটি পরিবহন করা হয় এই সড়কে। ধারণক্ষমতার চেয়ে গাড়ির লোড বেশি হওয়ায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পুটিবিলার বাসিন্দা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও রোগীদের বেশি সমস্যা হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সময়ে সংস্কার করা জরুরি।’
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার লোহাগাড়া সদর থেকে পুটিবিলা ইউনিয়নের হাসনাপাড়া বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ। কোথাও কোথাও দুই থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত গর্ত তৈরি হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় উঠে গেছে পিচ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ইট-পাথরের খোয়া।
এমচর হাট বাজার, মাস্টারপাড়া টার্নিং, গৌড়স্থান লাকী পাড়ার আগে ও পরে, নয়াবাজার, গজালিয়া দিঘির পাড়, মনিরের টেক ও হাসনা ভিটা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশ যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক গজ পরপর সড়কে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সে গর্তে জমেছে বৃষ্টির পানি। অনেক জায়গায় যাত্রীদের যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে
যেতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০ বছর আগে সড়কটি পাকা করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের কাজের কারণে বছর দুই বছর পর সড়ক খারাপ হতে শুরু করে। সিএনজি অটোরিকশাচালক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘দিনের পর দিন গর্তের জন্য গাড়ি চালাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, কিছু অংশ সংস্কার করা হলেও ভারী ট্রাক চলার কারণে সেটা আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।’
গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি সোলাইমান বলেন, ‘সড়কটি এতই খারাপ যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে রোগী কিংবা গর্ভবতী নারীদের উপজেলা সদরে নিতে হলে সমস্যায় পড়তে হয়। বৃষ্টি হলে বড় গর্তে পানি জমে, ফলে যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।’
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ইফরাত বিন মুনির বলেন, ‘এমচর হাট বাজার থেকে হাসনাভিটা সেতু পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে, ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে দ্রুত কাজ শুরুর ব্যবস্থা করে হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দরব শ হ ট ড স সড়ক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার
সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এমনকি ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর এলাকার কর্মসূচিতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা সড়কটির কাজ যথাযথভাবে করার দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সূর্য নারায়ণপুরের আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে বক্তারটেক পর্যন্ত ২৮০ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে (সলিং) ৮ ফুট চওড়া করার কথা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় এ কাজের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সদর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আল আমিন পালোয়ান এ কাজের ঠিকাদার। কিন্তু এলাকাবাসী সড়কটিতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার ও বালু না দিয়েই কাজ শুরুর অভিযোগ করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আল আমিন পালোয়ান একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে কারণে গত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর একাধিক মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় এসে ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। নিম্নমানের সামগ্রী বসানোর প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির গুজব ছড়িয়েছেন তিনি। এমনকি নানা মাধ্যমে আল আমিন হুমকিও দিচ্ছেন।
সেখানে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার কাজল, মো. রানা শেখ প্রমুখ। তাদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আল আমিন পালোয়ানের নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি।
কাপাসিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. তামান্না তাস্নীম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরেজমিন পরিদর্শনে যেতে বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।