নির্মাণের মাত্র দুই মাসের মাথায় সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট সংযোগ সড়কের একাংশ। সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। শুধু এটি নয়, উপজেলার নতুন-পুরোনো প্রায় ৩০টি সড়ক এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। এসব সড়কের দ্রুত সংস্কার না হলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আনোয়ার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের কয়েকটি সড়ক যানবাহন ও জনচলাচলের অনুপযোগী হয়েছে। সেগুলো সংস্কারের জন্য দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’
উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা তাওহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পৌরসভার নামারবাজার মহাসড়কের আন্ডারপাস সড়টি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। জমে থাকা পানির কারণে সড়কে চলাচলে কষ্ট পাচ্ছেন মানুষ।’
উপজেলার যেসব সড়ক খারাপ সেগুলো হলো–মীরের হাট দক্ষিণের সড়ক, মহালংকা সড়ক, ছোট দারোগারহাট রোড় পশ্চিমে ভান্ডারী সড়ক, মীরারহাট হামিদুল্লাহ সড়ক, জাফর নগর স্কুল সড়ক, ছলিমপুর আদুল্লাঘাটা সড়ক, ভাটিয়ারী তুলাতলী-ইমামনগর সংযোগ সড়ক, মির্জানগর ছোঁয়াখালি ঘাটগর সড়ক, কদমরসুল শিপইয়ার্ড সড়ক, সোনাইছড়ি কেশবপুর সফিউল্লাহ নিজামী বাড়ি সড়ক, রাবিয়া বানু শাখা সড়ক। সৈয়দপুর ও বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের কমর আলী কমরদহ সড়ক ভুঁইয়া হাট টু বেঁড়িবাধ, বাদল গাজী সড়ক, সিরাজ সড়ক পূর্ব বাগখালী, বুড়া ইস্কুল সড়ক, পূর্ব বাগখালী সড়ক, মহানগর সৈয়দ জসিম উদ্দিন সড়ক, শাহ মোহাম্মদ ভূঁইয়া সড়ক, কদর ভূঁইয়া সড়ক, দক্ষিণ বগাচতল সি রোড, দক্ষিণ বগাচতল সোনা মিয়া ভূঁইয়া সড়ক, তাকিয়াপাড়া সড়কের অবস্থাও বেহাল।
ভাটিয়ারী ইমামনগরের বাসিন্দা, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকশ বছরের পুরোনো মির্জানগর ছোঁয়াখালি ঘাট সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। এই সড়কের প্রায় এক কিলোমিটারর অংশ চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।’
সরেজমিন দেখা যায়, নবনির্মিত বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট সড়কে সাগরের বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ৭০০ মিটার সড়কের ১০০ মিটার সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু অংশে ইট ও ব্লক সরে গেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, সড়কের উপরিতল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেটি সংস্কার করা হয়েছে।
গত ২৪ মার্চ সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দুই বিশেষ সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রবল জোয়ারে সংযোগ সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেটি এখন গাড়ি চলাচলে উপযোগী করা হয়েছে। সড়কের উপরিতলের ইট সরে গিয়ে কিছু অংশের মাটি সরে গেছে।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শন করেছি। বর্ষায় প্রবল ঢেউ থেকে কিভাবে সড়কটি রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা ও পৌরসভার যেসব সড়ক সংষ্কারের অবস্থা খারাপ সেগুলো পযায়ক্রমে সংষ্কার করা হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক উপজ ল সড়ক র হ সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ