চ্যাম্পিয়ন কিশোরগঞ্জের মিষ্টি ও বরিশালের শাকিব
Published: 10th, May 2025 GMT
দীপ্ত স্টার হান্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কিশোরগঞ্জের মিষ্টি ঘোষ এবং বরিশালের সাকিব হোসেন। প্রথম রানার্সআপ যশোরের ফারিহা রহমান এবং বরিশালের শফিউল রাজ। দ্বিতীয় রানার্সআপ হয়েছেন সিলেটের সানজিদা চৌধুরী এবং বরিশালের হাফিজ রহমান।
গতকাল শুক্রবার রাত ১০টায় দীপ্ত টিভিতে প্রচার হয়েছে দীপ্ত স্টার হান্টের গ্র্যান্ড ফিনালে। দীপ্ত স্টার হান্ট গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে ছিল টপ ৬ প্রতিযোগীর নাচ, কমেডি স্কিট এবং মিউজিক ম্যাশআপ পরিবেশন করেন সন্ধি, সভ্যতা ও কর্নিয়া।
এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রিয়েলিটি শোর জুরি তারিক আনাম খান, শিহাব শাহীন এবং রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। দীপ্ত টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, পরিচালক কাজী জাহিন হাসান, দীপ্ত টিভির সিইও তাসনুভা আহমেদ টিনা, চলচিত্র নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম, নির্মাতা অনিমেষ আইচ, নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী এবং অন্যান্য অভিনয়শিল্পীগণ ও নাটক র্নিমাতাগণ।
প্রতিযোগিতার শুরুতে অংশ নেন তিন হাজারের বেশি প্রতিযোগী। বাছাইপর্বের নানা ধাপ পেরিয়ে বিচারকমণ্ডলী বেছে নেন সেরা দশ প্রতিযোগীকে—শফিউল রাজ, হাফিজ রহমান, শাকিব হোসেন, শিমুল বিশ্বাস, এম এস এইচ লাবন, সানজিদা চৌধুরী, নূপুর আহসান, মিষ্টি ঘোষ, ফারিহা রহমান ও শেখ ফারিয়া হোসেন। গ্র্যান্ড ফিনালের কমেডি রাউন্ডে অংশ নেন এই ১০ জন।
দুই বছরের বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে বিজয়ীরা কাজের সুযোগ পাবেন সিনেমা, ওয়েব ফিল্ম, ওয়েব সিরিজ ও টিভি সিরিজে। তাদের পরিচালনা ও প্রচারের দায়িত্বে থাকবে কাজী মিডিয়া লিমিটেড। সুপারস্টার হওয়ার পথে এটি তাদের জন্য হতে যাচ্ছে এক বড় পদক্ষেপ।
বিজয়ী শাকিব হোসেন বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ক্যামেরার পেছনে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা শাকিব এরই মধ্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। অথচ অভিনয়ের প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকা সত্ত্বেও দীপ্ত স্টার হান্টের ফেসবুক পোস্ট দেখে নিবন্ধন করেন তিনি।
প্রথম দিনেই নার্ভাস হয়ে সিরিয়াল মিস করেছিলেন, তবুও আত্মবিশ্বাসে ভর করে পৌঁছে যান সেরা দশে। শাকিব বলেন, ‘আমি জানি আমি সেরা। ছোটবেলা থেকে স্টেজে পারফর্ম করেছি, তাই নার্ভাস হইনি। ক্যামেরার পেছনের কাজের অভিজ্ঞতা আমার অনেক কাজে দিয়েছে। বড় জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই, সামনে-পেছনে দুই জায়গাতেই নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।’
অপর বিজয়ী মিষ্টি ঘোষ স্নাতকোত্তর শেষ করে ঢাকার একটি ফ্যাশন হাউসে ডিজিটাল বিপণন বিভাগে কাজ করছেন। প্রতিযোগিতার একটি রাউন্ডে খারাপ পারফর্ম করে বাদ পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিচারকদের বিশেষ বিবেচনায় ফিরে আসেন। সেই প্রত্যাবর্তনেই বাজিমাত। তিনি বলেন, ‘আশা করিনি। ফিরে আসার পর প্রচণ্ড চাপ ছিল। আমার ওপর বিশ্বাস রেখেই আবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সবাই এত ভালো করছিল, তাই চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কি না, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। যখন আমার নাম ঘোষণা হলো, তখন সত্যিই বিশ্বাস করতে পারিনি—আমি চ্যাম্পিয়ন!’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী