ব্যাংকের পরিচালক ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণ নেওয়া কঠোর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত ব্যাংকিং খাতে সুশাসন জোরদার করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন এই নীতিমালায় ব্যাংক পরিচালকদের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালক ওই ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ নিতে পারবেন না। তবে এক কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি লাগবে। পাশাপাশি এই ঋণের আওতায় আসবে পরিচালক–সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, বেনামি ও সুবিধাভোগী ঋণ। এর ফলে পরিচালকদের বেনামি ঋণ এই হিসাবের আওতায় আসবে। ফলে এসব ঋণ কমে আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ ছাড়া কোনো ব্যাংক তার টিয়ার–১ মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি ঋণ কোনো একক বা সম্মিলিতভাবে ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দিতে পারবে না। এই সীমা লঙ্ঘন হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে এবং একটি সংশোধনমূলক কর্মপরিকল্পনা দাখিল করতে হবে।
যদি ঋণ নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে, তবে অতিরিক্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক ও পর্ষদকে জানাতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে। এ ধরনের লেনদেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুস্পষ্ট অনুমতি ছাড়া নবায়ন বা পরিবর্তন করা যাবে না।

এ ছাড়া পরিচালকদের ৫০ লাখ টাকার বেশি প্রত্যক্ষ ঋণ অথবা এক কোটি টাকার বেশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ঋণের সুবিধার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে যেকোনো নবায়ন, পরিবর্তন বা জামানতের সমন্বয়ও অন্তর্ভুক্ত। আবেদনপত্রের সঙ্গে সিআইবি রিপোর্ট, পর্ষদের অনুমোদন ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের তুলনায় ন্যায্য আচরণের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে এবং বিদ্যমান সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে সাত কার্যদিবস আগে জমা দিতে হবে।

এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ক্ষেত্রে আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ব্যাংক তাদের বা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা তাদের সঙ্গে যুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার জামানতবিহীন ঋণ বা অগ্রিম দিতে পারবে না। যেহেতু এমডি ও সিইওরা চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা, তাই তাঁরা কর্মচারী ঋণ প্রকল্পের আওতার বাইরে থাকবেন। যদিও বিদেশি ব্যাংকের দেশীয় প্রধানেরা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসরণ করতে পারবেন। সাধারণ গ্রাহকের শর্তে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যেতে পারে, তবে তা ইস্যুর কমপক্ষে সাত কার্যদিবস আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়া এমডি–সিইও বা তাঁদের সহযোগীদের কোনো প্রকার আসল বা স্বীকৃত আয় (সুদ বা মুনাফা) মওকুফ করা যাবে না।

এ ছাড়া পরিচালক–সংশ্লিষ্ট সরাসরি বা সুবিধাভোগী ঋণের হিসাব আগামী সেপ্টেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২ কেন্দ্রে নেওয়া হবে রুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রথমবারের মতো অভিন্ন প্রশ্নপত্রে রুয়েটের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কেন্দ্রেও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রুয়েটের ১৫৪তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রুয়েটের উপাচার্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক এসএম আব্দুর রাজ্জাক।

আরো পড়ুন:

রুয়েট নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ

৩ দাবিতে আবারো রাস্তায় রুয়েট শিক্ষার্থীরা

সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, স্নাতক প্রথম বর্ষ (২০২৫-২৬) ভর্তি পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। রুয়েটের ১২ শতাধিক আসনের বিপরীতে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অশংগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বা কারিগরী শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২২ বা ২০২৩ সালে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ-৪.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।

প্রার্থীকে বাংলাদেশের যে কোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বা কারিগরী শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ-৫.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণসহ গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিষয়ে নূন্যতম জিপি-১৪ পেতে হবে।

এছাড়াও প্রার্থী জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় পাশ করে থাকলে, তার ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য জিসিই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে নূন্যতম ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাশ করতে হবে। জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে পৃথকভাবে কমপক্ষে ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাশ হতে হবে।

একইসঙ্গে প্রার্থীকে ২০২৪ সালের নভেম্বর বা তার পরে ‘এ’ লেভেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।

এ সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত ভর্তি পরীক্ষার জন্য গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির সভায় গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/মাহাফুজ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌদিতে বাস-ট্যাংকার সংঘর্ষ, ৪২ ভারতীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা
  • ২ কেন্দ্রে নেওয়া হবে রুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা
  • ভিজিটিং লেকচারার নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি
  • কাশ্মীরের শ্রীনগরে থানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৯