শেফিল্ড প্রিমিয়ার লিগে উঠলে হামজার কি হবে
Published: 10th, May 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটির হয়ে খেলতেন বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী। কাগজে কলমে এখনও তিনি ফক্সদের খেলোয়াড় তবে ধারে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেড। এই শেফিল্ড আবার বর্তমানে খেলছে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগ ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশীপে। তবে প্রিমিয়ার লিগে ফেরার খুব কাছাকাছি আছে তারা।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে-অফ ফাইনালের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে হামজার দল। এই রাতে শেফিল্ড সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে ব্রিস্টল সিটির বিপক্ষে।
লিডস এবং বার্নলির সরাসরি প্রমোশন পেয়ে প্রিমিয়ার লিগে উঠে যায়। ক্রিস ওয়াইল্ডারের শেফিল্ড চ্যাম্পিয়নশীপে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে। অ্যাশটন গেটে দুর্দান্ত সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে দাপুটে পারফরম্যান্সের পর, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আবারও শীর্ষ স্তরে ফেরার আশায় বুক বাঁধছে ব্লেডসরা।
শেফিল্ড যেখানে কয়েক সপ্তাহ আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে রেখেছিল, সেখানে ব্রিস্টল শেষ দিনের নাটকীয়তায় টপ সিক্সে জায়গা করে নেয় বার্নলির কাছে হেরে যাওয়ার পর। নিয়মিত মৌসুমে ২২ পয়েন্টের ব্যবধান ছিল এই দুই দলের মাঝে, আর সেটাই মাঠে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শেফিল্ড ছিল অনেক বেশি শক্তিশালী।
প্রথমার্ধের ঠিক আগে পেনাল্টি থেকে হ্যারিসন বুরোস শেফিল্ডকে এগিয়ে দেন। ম্যাচের শেষ দিকে বদলি হিসেবে নামা আন্দ্রে ব্রুকস এবং ক্যালাম ও'হেয়ার দুইটি গোল করে ব্যবধান আরও বাড়ান। সোমবার ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল। অন্য সেমিফাইনালের প্রথম লেগে শুক্রবার কোভেন্ট্রিকে তাদের মাঠেই ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে সান্ডারল্যান্ড।
হামজা এখন পর্যন্ত লেস্টারের জার্সিতে ১৩১টি ম্যাচ খেলেছে। যার মাঝে ৯১টি ছিল প্রিমিয়ার লিগে। তবে এত দীর্ঘ সময়ে (৬ মৌসুম) মাত্র ৯১টি ইপিএল ম্যাচে ২৫৯৩ মিনিট খেলার সুযোগ হয়েছিল হামজার। তবে আশা করা যাচ্ছে শেফিল্ড প্রিমিয়ার লিগে গেলে তারা হামজাকে পাকাপাকিভাবে নিতে চাইবে। সেক্ষেত্রে ইপিএলে প্রতি মৌসুমেই যথেষ্ট পরিমাণ সময় মাঠে খেলার সুযোগ পাবেন হামজা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল র ব যবধ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
মায়ের চাকরি পাওয়াটা আমার কাছে মনে হয় এ যুগের রূপকথা
১৯৬৮ সাল। কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানায় কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আমার দাদা। সার্কেল অফিসার একদিন দাদাকে বললেন, ‘টিএও সাহেব, ডিসি স্যারের কাছে আমার আর সম্মান থাকল না।’
এ এলাকায় ম্যাট্রিক পাস কোনো বউ পেলাম না, যাঁকে পরিবার পরিকল্পনার ভিজিটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায়। দাদা খুশি মনে বললেন, ‘আমার সেজ ছেলের বউ এসএসসি পাস। বাড়িতে গিয়ে আলাপ করে আপনাকে জানাব।’
কিন্তু সেদিনই নাম পাঠানোর শেষ তারিখ। বাড়িতে আলোচনা ছাড়াই নাম পাঠিয়ে দিতে দাদাকে একরকম বাধ্য করলেন সার্কেল অফিসার।
বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালেন দাদা। তাঁর সেজ ছেলের বউ মানে আমার মা তো মহাখুশি। কিন্তু দাদি রেগে গেলেন, গজগজ করে বললেন, ‘পরিবার আবার পরিকল্পনা করে হয় নাকি?’
আমার বাবা মাকে বলেছিলেন, ‘মার্ক টোয়েন নামের একজন মার্কিন লেখক কী বলেছেন জানো? এগিয়ে যাওয়ার রহস্য হচ্ছে শুরু করা।’
মা খুব খুশি হলেন। তিনি যে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা, খুশির আনন্দে সেটিও লুকিয়ে রাখলেন। চাকরিটা যদি হাতছাড়া হয়ে যায়, সেই ভয়ে।
৯ মাসের ট্রেনিংয়ে রাজশাহী এলেন মা। আর ওই যে বাবুটা পেটে ছিল, সে–ও বড় হতে থাকল। অন্য যেসব আন্টিরা মায়ের সঙ্গে ট্রেনিং করছিলেন, তাঁদের যেন কাজ হয়ে দাঁড়াল ভালোবেসে মায়ের বিভিন্ন কাজ করে দেওয়া।
প্রথম মা হচ্ছেন, এই আনন্দ ও আতঙ্কে অস্থির থাকতেন মা। বাবার সঙ্গে সময় কাটাতে ইচ্ছা হতো। নানির কাছে যেতে ইচ্ছা হতো, কিন্তু যেতে না পেরে মন খারাপ হতো। এমনই এক মনখারাপের দিনে হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেলেন। এ ঘটনায় তেমন কোনো ক্ষতি অবশ্য হলো না, তবে হতে পারত। সে রাতেই মাথাভর্তি চুল আর সুস্বাস্থ্য নিয়ে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হলো। খবর পেয়ে পরের দিনই ছুটে এলেন বাবা। কোলে নিয়ে তাঁর মনে হলো, এ তো সাক্ষাৎ পরির বাচ্চা, ভুলে পৃথিবীতে চলে এসেছে।
যে দেশে লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত বেকার, সে দেশে আমার মায়ের চাকরি পাওয়াটা আমার কাছে মনে হয় এ যুগের রূপকথা।
আরও পড়ুনশহরে ফ্ল্যাট আমি ঠিকই নিয়েছি, কিন্তু মা আর কোনো দিন এলেন না১০ ঘণ্টা আগে