প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের ২০২২-২৩ (ডিগ্রি ও ফাজিল ১ম বর্ষ) শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, টিউশন ফি দেবে। এ জন্য নিচের সময়সূচি ও নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সফটওয়্যারে নিচের তারিখ ও সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।

বিশেষ নির্দেশনা—

১.

স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (ডিগ্রি ও ফাজিল ১ম বর্ষ) শিক্ষার্থীদের সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করার তারিখ ও সময়: ১৫ মে ২০২৫ রাত ১১.৫৯টা পর্যন্ত।

২. সফটওয়্যারে এন্ট্রি করা শিক্ষার্থীদের আবেদনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ও বাছাই কমিটির রেজল্যুশন অনলাইনে সফটওয়্যারে আপলোড করে PMEAT’র ই-স্টাইপেন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে forward করার তারিখ ও সময়: ১৬ মে ২০২৫ সকাল ৯টা থেকে ২৭ মে ২০২৫ রাত ১১.৫৯টা পর্যন্ত।

৩. বর্ণিত নির্ধারিত সময়ের পরে কোনো শিক্ষার্থীর আবেদন এন্ট্রি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে PMEAT’র ই-স্টাইপেন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে forward করা যাবে না।

আরও পড়ুনকম খরচ এবং সহজে ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় বেছে নিতে পারেন এই ৫ দেশ০৮ মে ২০২৫

৪. উল্লেখ্য, উপবৃত্তি প্রদানের নিমিত্ত শিক্ষার্থী নির্বাচনের লক্ষ্যে সফটওয়্যারে তথ্য এন্ট্রির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আবেদন ফরমে শিক্ষার্থী/পিতা/মাতার অ্যাকাউন্ট নম্বর হিসাবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর আওতাধীন ডাক অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস হিসেবে শুধু সচল ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট নম্বর এন্ট্রি করতে হবে।

৫. শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির আবেদন–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যাদি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ওয়েবসাইট এবং PMEAT’এর ই-স্টাইপেন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারের নোটিশ বোর্ডে পাওয়া যাবে।

৬. স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের উপবৃত্তি সংক্রান্ত হেল্প লাইন: ০২-৫৫০০০৪২৮, ০১৭৭৮৯৬৪১৫৬ ও ০১৭২৪৫৯৬৬৭৬ (অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত হেল্প লাইন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে)।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনজাপানের স্টাডি সাপোর্ট স্কলারশিপ, ইংরেজি ও জাপানিজ দুই ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন০৮ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফটওয় য র র উপব ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

তিব্বত, ভূগোল ও সংস্কৃতির বিস্ময়

তিব্বতকে বলা হয় ‘পৃথিবীর ছাদ’। এটি হিমালয়ের উচ্চ মালভূমিতে অবস্থিত, যার গড় উচ্চতা ১২ থেকে ২০ হাজার ফুট। প্রায় ১২ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত তিব্বত, যা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮ দশমিক ৩ গুণ বড়। এখানে বাতাসে অক্সিজেনের ঘনত্ব ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত কম। ফলে শ্বাস নিতে হয় ধীরে ও সচেতনভাবে। উচ্চতাজনিত অসুস্থতা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা কিংবা বমিভাব অনেক সময় দেখা গেলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক মহিমার কাছে এসব যেন তুচ্ছ।
তিব্বতের ভ্রমণ: কঠোর নিয়ন্ত্রণ, সুশৃঙ্খল অভিজ্ঞতা
তিব্বতে প্রবেশ করতে গেলে চাই চীনের বিশেষ ভিসা, অনুমোদিত ট্যুর গাইড, নির্দিষ্ট রুট ও হোটেল সংরক্ষণ। প্রত্যেক পর্যটক প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে থাকেন, যা কখনও কখনও রূঢ় মনে হলেও নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত কার্যকর।
তিব্বত ভ্রমণের এই জটিল প্রক্রিয়া সহজ করে দেন ‘বেঙ্গল ভিস্তা’র সালাহউদ্দিন সুমন ও তাঁর সঙ্গী নিলয়। তাদের সহায়তায় গত ৩ জুন আমরা তিব্বতের উদ্দেশে রওনা হই। পরদিন, ২০২৫ সালের ৪ জুন, আমরা পৌঁছাই লাসায়। এক ঐতিহাসিক নগরীতে।
লাসা গঙ্গার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর: এক বৈশ্বিক রেকর্ডধারী
লাসা গঙ্গার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Lhasa Gonggar International Airport) পৃথিবীর অন্যতম উচ্চতম বাণিজ্যিক বিমানবন্দর। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৬০০ মিটার বা ১১ হাজার ৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, যা প্রথমবারের যাত্রীদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জের। বিমানবন্দরটির প্রধান রানওয়ে প্রায় ছয় হাজার মিটার দীর্ঘ, যা বিশ্বের দীর্ঘতম রানওয়েগুলোর একটি। উচ্চতার কারণে বিমানের টেকঅফ ও ল্যান্ডিং সহজ করতে এত দীর্ঘ রানওয়ে ব্যবহৃত হয়। এই বিমানবন্দরের অবস্থান ইয়ারলুং জাংবো নদীর তীরে। লাসা শহর থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এ বিমানবন্দরটি তিব্বতকে চীনের মূল ভূখণ্ড এবং আন্তর্জাতিক গন্তব্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করে রেখেছে। সম্প্রতি দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে এটি আরও সক্রিয় ও সক্ষম হয়ে উঠেছে।
অতীশ দীপঙ্করের মন্দির: বাংলার ঐতিহ্য লাসার বুকে
৪ জুন ২০২৫, লাসায় অবতরণের পর আমরা প্রথমেই গেলাম লাসার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান স্মৃতিমন্দির ও সমাধি চত্বরে। অতীশ দীপঙ্কর (৯৮২-১০৫৪ খ্রি.) বাংলাদেশের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৌদ্ধ পণ্ডিত ও আচার্য। তিনি বঙ্গ, বিহার, নেপাল হয়ে তিব্বতে আসেন ১১শ শতকে, বৌদ্ধ ধর্মের মহাযান শাখা পুনরুজ্জীবনের জন্য। তাঁর প্রভাব এত গভীর যে তাঁকে তিব্বতের ধর্মীয় জাগরণের অন্যতম পথপ্রদর্শক হিসেবে গণ্য করা হয়। এই মন্দিরে রয়েছে তাঁর সমাধি, কিছু প্রাচীন হস্তলিখিত পুঁথি ও তাঁর ভিক্ষুজীবনের প্রতীকচিহ্ন। তিব্বতিরা তাঁকে ‘জো তুন’ নামে ডাকে, যার অর্থ ‘আদর্শ গুরু’। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান, যেখানে তিব্বতিরা হৃদয় দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয়, বাংলাদেশের ইতিহাস যেন তিব্বতের হৃদয়ে চিরস্থায়ীভাবে গাঁথা।
পোটালা প্রাসাদ: তিব্বতের আত্মা ও স্থাপত্যশৈলীর মহাকাব্য
৫ জুন ২০২৫, আমরা গেলাম তিব্বতের সর্বাধিক আইকনিক ও ঐতিহাসিক স্থাপনায়, পোটালা প্রাসাদে।
পোটালা প্রাসাদ, লাল পাহাড়ের (Marpo Ri) ওপর নির্মিত, একসময় ছিল দলাই লামাদের শীতকালীন আবাস। এটি ৩৭০ ফুট উঁচু এবং ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো একটি অসাধারণ স্থাপত্য, যা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত। প্রাসাদে আছে প্রায় ১,০০০ কক্ষ, অসংখ্য ধর্মগ্রন্থ, তাংকা চিত্র, ধাতব মূর্তি এবং স্বর্ণমণ্ডিত স্তূপা, যেখানে একাধিক দলাই লামার মরদেহ সংরক্ষিত। বাইরের বিশ্ব এই প্রাসাদের কথা প্রথম জানতে পারে ১৯০৪ সালে, একজন সাহসী পশ্চিমা পর্যটকের গোপন অভিযানের মাধ্যমে। এই প্রাসাদের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয়, যেন ইতিহাস, ধর্ম ও রাজকীয় ঐতিহ্য একসঙ্গে মিশে গিয়েছে একটি স্থাপত্যে।
লাসা–হিমালয়ের ছায়ায়, হৃদয়ের উচ্চতায়
লাসা শহর, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩ হাজার ৬৫০ মিটার (১১ হাজার ৯৭৫ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। এই উচ্চতায় সাধারণত গাছপালা জন্মায় না, তবুও চীন সরকার মাইক্রোচিপ ব্যবহার করে প্রতিটি গাছের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করে শহরকে সবুজ রাখছে। প্রতিদিন হাজার হাজার বড় বড় গাছ লাগানো হচ্ছে এখানে। এই সব গাছের মাধ্যমে একসময় তিব্বত আরও বেশি পর্যটনবান্ধব হয়ে উঠবে।
লাসার প্রতিটি ভবনে দেখা মেলে তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর ছাপ। রাস্তার পাশের ঘরবাড়ি, দোকান, মন্দির এমনকি সরকারি ভবনগুলোও তিব্বতির ধর্ম, ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। লাসা কেবল একটি শহর নয়, এটি এক চলমান প্রাচীন ইতিহাস।
মানুষ ও সংস্কৃতি
তিব্বতিরা তাদের ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতিকে গভীরভাবে ভালোবাসে। যদিও তিব্বতি ভাষা বিদেশিদের কাছে দুর্বোধ্য, তবে গাইডদের আন্তরিকতা আর স্থানীয়দের উষ্ণতা ভ্রমণকে করে তোলে আনন্দময়। হাসিমুখে অভ্যর্থনা ও নির্লিপ্ত গাম্ভীর্য–এই দুই মিলে গড়ে ওঠে তিব্বতিরা।
মুগ্ধকর এক তিব্বতি গান
আমার জীবনশক্তি–বরফে ঢাকা পাহাড়ে
আমার রক্তে প্রবাহিত–হিমের নির্মল জল
আমার নাম–বরফের দেশ
আমার আনন্দ–বৌদ্ধধর্মে
আমার আনন্দ–তিব্বতের ঐতিহ্যে
আমার নাম–ধর্মভূমি তিব্বত
আমি তিব্বতি তাই তিব্বতি ভাষায় কথা বলি।
লাসা না দেখলে, অভিজ্ঞতা থাকে অসম্পূর্ণ
তিব্বত শুধু একটি অঞ্চল নয়–এটি এক অভিজ্ঞতা, এক ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক চেতনার উচ্চতা; যেখানে শরীর, মন এবং আত্মা একসঙ্গে নতুন এক জগতে পৌঁছায়। লাসা এমন এক শহর; যেখানে ইতিহাস নিঃশব্দে হাঁটে, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি আর প্রকৃতি একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে সম্মানের সঙ্গে। তাই বলতেই হয়–পৃথিবীর অনেক শহর দেখা হয়েছে, কিন্তু লাসা না দেখলে সেই অভিজ্ঞতা থেকে যেত অসম্পূর্ণ। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক রাত অপেক্ষার পর সেঞ্চুরিতে রুটের যত কীর্তি
  • চার বছরের মধ্যে পাসের হার সর্বনিম্ন, অকৃতকার্যের রেকর্ড
  • এআই কি অভিজ্ঞ কর্মীদের কাজের গতি কমিয়ে দিচ্ছে, কী বলছে গবেষণা
  • পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুণ্যের ক্ষমতায়ন
  • আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রির দৃশ্য
  • তিব্বত, ভূগোল ও সংস্কৃতির বিস্ময়
  • যশোর বোর্ডে এসএসসিতে ৭৫ স্কুলে শতভাগ পাস, ফেল ২ প্রতিষ্ঠানে
  • যশোর বোর্ডে এসএসসিতে শতভাগ পাস ৭৫ স্কুল, ফেল ২ প্রতিষ্ঠান
  • ভারতে সেতু ভেঙে নিহত ৯
  • কৃষিতে নারীর শ্রম সস্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেই অধিকার