সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কমিশন ৫ টাকা ১০ পয়সা বাড়ানো দাবি
Published: 10th, May 2025 GMT
সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কমিশন ৫ টাকা ১০ পয়সা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম। শনিবার রাজধানীর বিজয়নগর হোটেল একাত্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করা হয়। বর্তমানে ঘনমিটার প্রতি ৭.১২ টাকা কমিশন পেয়ে থাকেন সিএনজি মালিকেরা।
সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রকাশ ও প্যানেল পরিচিতির জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঐক্য ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে রেজাবুদ্দেৌলা চৌধুরী ও ফারহান নূর পরিষদ তাদের ৯ দফা ইশতেহার তুলে ধরেন।
রেজাবুদ্দেীলা চৌধুরী বলেন, বিগত সরকার এই খাতটিকে বন্ধ করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল। ২০১৭ সালে তৎকালীন উপদেষ্টা সিএনজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে কমিশন ২.
ইশতেহার পাঠ করেন মহাসচিব প্রার্থী ফারহান নূর। বিদায়ী কমিটির এই মহাসচিব বলেন, আমাদের সঙ্গে সব সময় বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে আমাদের খরচ বাড়ে কিন্তু কমিশন বাড়ে না। পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স নিতে গিয়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। তিনি বলেন, গ্যাস সরবরাহে রেশনিং প্রথা এ খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অনেক গণপরিবহন সিএনজি ব্যবহার বন্ধ করেছে। গণপরিবহনে পরিবেশবান্ধন সিএনজি ব্যবহারের বাধ্যতামূলক সরকারি নির্দেশনার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওপর অনেক চাপ থাকলে জনদুর্ভোগ হয়- এমন কোনো হঠকারি কর্মসূচিতে আমরা যাইনি। আমরা এখনও আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৭ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর বিজয়নগর আকরাম টাওয়ারে অবস্থিত সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ২৯৯ জন ভোটার অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। সংগঠনটির ৪০০ সদস্য থাকলেও যথা সময়ে চাঁদা পরিশোধ ও আনুসাঙ্গিক কাজপত্র জমা না দেওয়ায় ভোটার তালিকায় তাদের নাম রাখা হয়নি বলে জানা গেছে।
সিএনজি ফিলিং স্টেশন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম থেকে নির্বাচনে লড়ছেন রেজাবুদ্দেীলা চৌধুরী- ফারহান নূর পরিষদ। ওই প্যানেল থেকে ২১টি পদের বিপরীতে লড়ছেন, জিএফ ফিলিং এর স্বত্বাধিকারী ইয়াসির মো. বি আজম খান, মেসার্স খন্দকার সিএনজি এণ্ড ফিলিং সেন্টারের নুর উদ্দিন খন্দকার, টিএস সিএনজি রিফুয়েলিং এন্ড কনর্ভাসন লিমিটেডের তানভীর রহমান, সাগর সৈকত সিএনজি ফিলিং স্টেশন সার্ভিসিং অ্যান্ড কনর্ভাসন সেন্টারের মো. ওয়াসিউল হুদা, এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্ক লিমিটেডের সাঈদ সাদত আহমেদ, স্টেপ নেট সলিউশন লিমিটেডের হুমায়ুন রশীদ সুমন, মক্কা সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সনের আব্দুল হাকিম প্রধান, নুহা এনার্জি রিসোর্স লিমিটেডের আল মামুন ভূইয়া, মেসার্স এনার্জি প্লাস লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী জিন্নাহ, হাইপ্রেসার সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের আব্দুল কাইয়ুম খান, সিটি ওভারসিস লিমিটেডের আজহার ইসলাম ঢালি, অন ইন ওয়ান সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের মো. ওয়াহিদ খান, ভূইয়া সিএনজি রিফুয়েলিং অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কসপের এবিএম সাত্তার ভুইয়া, গ্রীন ফুয়েল সিএনজি কনভার্সন সেন্টারের মো. হাসিন পারভেজ, হযরত রায়পুরী সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সনের আলী আফসার মোহাম্মদ ফাহিম, সুরমা সিএনজি কনভার্সন অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের সুব্রত ধর, সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ইফতেখার আহমেদ, স্টার সিএনজি ফিলিং স্টেশনের এমএনএইচ খাদেম দুলাল ও এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কের কাজী মিনহাজুল ইসলাম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন স এনজ আম দ র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
গরমে খাবারে অরুচি, পানিশূন্যতা
সারাদেশে চলছে মৃদু তাপপ্রবাহ। চৈত্রের কাঠফাটা রোদে চট্টগ্রামে ক’দিন ধরে তাপমাত্রা উঠছে প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। বাড়তি এই তাপমাত্রায় তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে হাঁসফাঁস জনজীবন। কাঠফাটা এই গরম কষ্ট বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় খাঁচায় বন্দি থাকা সাড়ে ছয় শতাধিক পশুপাখির। খরতাপে বাড়ছে অস্বস্তি। অনেক পশু-প্রাণীর শরীরে দেখা দিচ্ছে পানিশূন্যতা। এতে আচরণগত পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে পশুপাখির মধ্যে। গরমের কারণে খাবার গ্রহণেও দেখা দিচ্ছে অরুচি। অনেক পশু-পাখি গরমে শুধু হাঁপাচ্ছে। দুঃসহ এ গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে এখন বেশির ভাগ সময় পানিতেই কাটছে বাঘ, সিংহ, ভালুকসহ বেশির ভাগ পশু প্রাণীর।
চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পশু-প্রাণীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে বাড়ানো হয়েছে যত্ন ও নজরদারি। পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য গরম থেকে কিছুটা হলেও প্রশান্তি দিতে প্রতিদিন বাড়তি পানি দেওয়া হচ্ছে। খাবারের তালিকায় আনতে হচ্ছে ভিন্নতা। দেওয়া হচ্ছে বাড়তি স্যালাইন, ভিটামিন সি, গ্লুকোজ জাতীয় তরল খাবার। সরেজমিন গিয়ে গরমের তীব্রতায় মাংসাশী প্রাণীগুলোকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ের মতো বাঘ-সিংহের সেই হুঙ্কার তেমন চোখে পড়েনি। স্বাভাবিক সময়ে চিড়িয়াখানার প্রবেশমুখে
থাকা সিংহের হুঙ্কার শুনতেন দর্শনার্থীরা; চোখে পড়তো বাঘ ও সিংহের খাঁচার চারপাশে রাজার মতো ঘুরে বেড়ানো ও ছুটোছুটির দৃশ্য। তবে গরম থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে এখন বেশিরভাগ সময় কাটছে খাঁচার ভেতরে থাকা পানির চৌবাচ্চায়। মাথাসহ পুরো শরীর ভিজিয়ে বসে থাকে প্রাণীগুলো। কখনও খুনসুটি করে; পানিতে ডুব দিয়ে সময় কাটছে বাঘ করোনা, জয়া, জো বাইডেন, শুভ্রার। স্বাভাবিক সময়ের মতো চিৎকার, চেঁচামেচি এখন তেমন নেই ম্যাকাউ, টিয়াসহ বেশিরভাগ পশু-পাখির। ভালুক কখনো পানিতে কখনও খাঁচায় বসে পার করছে সময়। খাঁচার এক কোণে বসে থাকে মায়া হরিণ।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘চট্টগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে ভয়াবহ গরম পড়ছে। তীব্র তাপদাহের কারণে পশু-পাখিদেরও কষ্ট হচ্ছে। গরম থেকে স্বস্তি পেতে পানিতেই বেশিরভাগ সময় থাকতে স্বাছন্দবোধ করছে তারা। এখন প্রতিদিন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়তি পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। গরমের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পশু-প্রাণীদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শারীরিক সুস্থতা ঠিক রাখতে বাড়তি স্যালাইন, ভিটামিন সি, গ্লুকোজ, ইলেক্ট্রলাইটসহ নানা তরল খাবার বেশি দেওয়া হচ্ছে।’
পতেঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তারা বলছেন, জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে চট্টগ্রামে তাপমাত্রা বাড়ছে। যা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় গরমের তীব্রতা বেশি অনুভব হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টি হলেও এতে তেমন কমবে না গরমের তীব্রতা। এপ্রিলের চেয়ে মে মাসে গরমের তীব্রতা আরও বাড়বে।
চট্টগ্রাম নগরের খুলশী এলাকা থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় আসা মো. ইরফান বলেন, ‘বাঘ-সিংহসহ পছন্দের কিছু পশু-প্রাণী দেখতে দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছি। তবে এখানে এসে স্বাভাবিক সময়ের মতো বাঘ, সিংহসহ বেশিরভাগ পশু-প্রাণীর দৌড়ঝাঁপ চোখে পড়ছে না। মানুষের মতো গরমে হাঁসফাঁস প্রাণীরাও।’ বড় ছেলে মো. ইমরুল বলেন, ‘এসেছিলাম বাঘ-সিংহ মামার হুঙ্কার দেখতে, তাদের ছুটোছুটি দেখতে। ইচ্ছা ছিল খাঁচার সামনে বাঘ, কিংবা সিংহের সাথে একটি ছবি তোলার। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও তাদের দেখা পায়নি। কারণ তাদের বেশিরভাগ সময় কাটছে পানির চৌবাচ্চায়। গরমে আমাদের মতো ভালো নেই তারাও।’