সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কমিশন ৫ টাকা ১০ পয়সা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম। শনিবার রাজধানীর বিজয়নগর হোটেল একাত্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করা হয়। বর্তমানে ঘনমিটার প্রতি ৭.১২ টাকা কমিশন পেয়ে থাকেন সিএনজি মালিকেরা।

সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রকাশ ও প্যানেল পরিচিতির জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঐক্য ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে রেজাবুদ্দেৌলা চৌধুরী ও ফারহান নূর পরিষদ তাদের ৯ দফা ইশতেহার তুলে ধরেন।

রেজাবুদ্দেীলা চৌধুরী বলেন, বিগত সরকার এই খাতটিকে বন্ধ করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল। ২০১৭ সালে তৎকালীন উপদেষ্টা সিএনজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে কমিশন ২.

৯৮ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয়। এরপর মাত্র ১ টাকা বাড়ানো হয়, এতদিন পার হয়ে গেলেও পরে আর ১.৯৮ টাকা বাড়ানো হয়নি। এরপর কয়েক দফায় বিদ্যুতের বিল বাড়ানোর কারণে আমাদের খরচ বেড়েছে, কিন্তু কমিশন আর সমন্বয় করা হয়নি। এতে করে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া কষ্টকর হচ্ছে। অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে।

ইশতেহার পাঠ করেন মহাসচিব প্রার্থী ফারহান নূর। বিদায়ী কমিটির এই মহাসচিব বলেন, আমাদের সঙ্গে সব সময় বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে আমাদের খরচ বাড়ে কিন্তু কমিশন বাড়ে না। পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স নিতে গিয়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। তিনি বলেন, গ্যাস সরবরাহে রেশনিং প্রথা এ খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অনেক গণপরিবহন সিএনজি ব্যবহার বন্ধ করেছে। গণপরিবহনে পরিবেশবান্ধন সিএনজি ব্যবহারের বাধ্যতামূলক সরকারি নির্দেশনার দাবি জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ওপর অনেক চাপ থাকলে জনদুর্ভোগ হয়- এমন কোনো হঠকারি কর্মসূচিতে আমরা যাইনি। আমরা এখনও আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।

উল্লেখ্য, আগামী ১৭ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর বিজয়নগর আকরাম টাওয়ারে অবস্থিত সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ২৯৯ জন ভোটার অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। সংগঠনটির ৪০০ সদস্য থাকলেও যথা সময়ে চাঁদা পরিশোধ ও আনুসাঙ্গিক কাজপত্র জমা না দেওয়ায় ভোটার তালিকায় তাদের নাম রাখা হয়নি বলে জানা গেছে।

সিএনজি ফিলিং স্টেশন ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম থেকে নির্বাচনে লড়ছেন রেজাবুদ্দেীলা চৌধুরী- ফারহান নূর পরিষদ। ওই প্যানেল থেকে ২১টি পদের বিপরীতে লড়ছেন, জিএফ ফিলিং এর স্বত্বাধিকারী ইয়াসির মো. বি আজম খান, মেসার্স খন্দকার সিএনজি এণ্ড ফিলিং সেন্টারের নুর উদ্দিন খন্দকার, টিএস সিএনজি রিফুয়েলিং এন্ড কনর্ভাসন লিমিটেডের তানভীর রহমান, সাগর সৈকত সিএনজি ফিলিং স্টেশন সার্ভিসিং অ্যান্ড কনর্ভাসন সেন্টারের মো. ওয়াসিউল হুদা, এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্ক লিমিটেডের সাঈদ সাদত আহমেদ, স্টেপ নেট সলিউশন লিমিটেডের হুমায়ুন রশীদ সুমন, মক্কা সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সনের আব্দুল হাকিম প্রধান, নুহা এনার্জি রিসোর্স লিমিটেডের আল মামুন ভূইয়া, মেসার্স এনার্জি প্লাস লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী জিন্নাহ, হাইপ্রেসার সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের আব্দুল কাইয়ুম খান, সিটি ওভারসিস লিমিটেডের আজহার ইসলাম ঢালি, অন ইন ওয়ান সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের মো. ওয়াহিদ খান, ভূইয়া সিএনজি রিফুয়েলিং অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কসপের এবিএম সাত্তার ভুইয়া, গ্রীন ফুয়েল সিএনজি কনভার্সন সেন্টারের মো. হাসিন পারভেজ, হযরত রায়পুরী সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সনের আলী আফসার মোহাম্মদ ফাহিম, সুরমা সিএনজি কনভার্সন অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের সুব্রত ধর, সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ইফতেখার আহমেদ, স্টার সিএনজি ফিলিং স্টেশনের এমএনএইচ খাদেম দুলাল ও এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্কের কাজী মিনহাজুল ইসলাম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন স এনজ আম দ র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কন্টেইনমেন্টে

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় চলছে দেশের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালুর অপেক্ষায় আছে। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের কন্টেইনমেন্টের (সুরক্ষা ব্যুহ) অভেদ্যতা ও দৃঢ়তার পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা। পরীক্ষায় নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটম একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার মাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষাকালে নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি করা হয়। এর জন্য ব্যবহার করা হয় একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্প্রেসার। অবকাঠামোর দৃঢ়তা ও অভেদ্যতার পরীক্ষার লক্ষ্য হলো— কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কন্টেইনমেন্টের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পেলে তা কতটুকু সহ্য করতে সক্ষম। পরমাণু জ্বালানি লোডিংয়ের আগে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। কারণ, কোনো বিপর্যয় ঘটলে কন্টেইনমেন্টই হচ্ছে শেষ সুরক্ষা ব্যুহ।

আরো পড়ুন:

মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

৩০ ক্রাসার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

কন্টেইনমেন্ট মূলত একটি অতি সুদৃঢ় কাঠামো, যা নির্মাণে ব্যবহৃত হয় প্রিস্ট্রেসড রিইনফোর্সড কংক্রিট। এর ভেতরের দেয়ালে থাকে একটি শক্ত ইস্পাতের আবরণ। এর নকশা এমনভাবে করা হয়, যাতে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রিয়্যাক্টর কমপার্টমেন্টের বাইরে বের হতে না পারে এবং সমস্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ এই কন্টেইনমেন্টের ভেতরেই আবদ্ধ ও সুরক্ষিত অবস্থায় থাকতে পারে। বাহ্যিক বড় কোনো আঘাত ও বিপর্যয় রোধ করতেও সক্ষম এই কন্টেইনমেন্ট।

রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে শিগগিরই কিছু ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ চালানো হবে, যেমন: কুল্যান্ট সার্কিটকে নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা এবং বাষ্প উৎপাদন। অন্যান্য নিরাপত্তা প্যারামিটারগুলো চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা করা হবে, যেমন: সক্রিয় অবস্থায় বাষ্প নির্গমণকারী ডিভাইসের নিরাপত্তা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এ পরীক্ষার সময় বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ তৈরি হবে, যা সম্পূর্ণ পূর্বনির্ধারিত। এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। রসাটম নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, তাই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো সকল নিরাপত্তা চাহিদা পূরণ।

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুটি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ