ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় সম্মত পুতিন
Published: 11th, May 2025 GMT
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ছোটাছুটি করছেন বিশ্বনেতারা। তারা এ নিয়ে নানা আলাপ-আলোচনা তুলছেন। সর্বশেষ রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী বৃহস্পতিবার তুরস্কে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। এতে আশার আলো দেখছেন বিশ্বনেতারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, তারা পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রস্তুত। তিনি আগে যুদ্ধবিরতি, পরে আলোচনা চান। দু’পক্ষকে আলোচনায় বসাতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে তুরস্কও। নতুন পোপ লিও রোববার তাঁর প্রথম বার্তায় বিশ্বের প্রধান শক্তিগুলোকে আর যুদ্ধ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার ভোরে ক্রেমলিনে এক ভাষণে পুতিন আলোচনায় বসার কথা তোলেন। তিনি ২০২২ সালের স্থগিত হয়ে যাওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা ফের শুরু করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই আমরা কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে ফের শান্তি আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিচ্ছি। আগামী বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে আলোচনা শুরু করা যেতে পারে।
এর আগে শনিবার পুতিনকে ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানান ইউরোপের প্রভাবশালী চারটি দেশ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ড। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফরকালে ইউরোপীয় নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, রাশিয়া যদি সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতি না মানে তাহলে পুতিনের ওপর আরও কঠোর চাপ সৃষ্টি করা হবে।
এদিকে শনিবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে ঘোষিত তিন দিনের একতরফা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়। নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে পুতিন ওই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও হামলার অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। আর যুদ্ধবিরতির শেষে হামলা শুরুর কথা জানিয়েছে মস্কো।
তুরস্কে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে পুতিন রাজি হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের জন্য সম্ভবত একটি দুর্দান্ত দিন আসতে যাচ্ছে। তিনি এই আলোচনা ফলপ্রসূ করতে উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে রাজি। ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগ বলেছেন, শান্তি আলোচনা শুরুর আগে উভয় পক্ষকে প্রথমে নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে।
আলোচনায় বসার আগে মস্কোকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এ ব্যাপারে ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করেনি। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া অবশেষে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে, যুদ্ধ অবসানের চিন্তা করছে, এটা ইতিবাচক লক্ষণ। সমগ্র বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরে এই সম্মতির জন্য অপেক্ষা করছিল। এক দিনের জন্যও আর হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার কোনো মানে হয় না– বলেন তিনি। তাঁর চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক বলেন, মস্কো সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেই কিয়েভ আলোচনায় বসবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পুতিনের আলোচনায় বসার ঘোষণায় ‘কৌশল’ দেখছে যুক্তরাজ্য। কিয়ার স্টারমারের এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে রাশিয়া একমত নয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ইউক্রেন পুতিনের বক্তব্যকে সঠিকভাবে বুঝতে পারেনি। তাঁর মতে, পুতিন মূলত সংঘাতের মূল কারণ নিয়ে আলোচনা চান। তারপর যুদ্ধবিরতির আলোচনা হতে পারে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আজ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে বলেছেন, পুতিনের ঘোষণার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টায় একটি ঐতিহাসিক মেরূকরণ এসেছে। সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। এরদোয়ানের কার্যালয় জানিয়েছে, স্থায়ী শান্তি আনতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনার আয়োজনসহ সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত তুরস্ক। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র বল ছ ন র জন য ত রস ক প রস ত
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের হাতে ‘মারণাস্ত্র’ থাকবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পুলিশের হাতে চাইনিজ রাইফেল, সাব মেশিন গান, ৯ এমএম পিস্তলের মতো ‘মারণাস্ত্র’ না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) কাছে। পুলিশের কাছে থাকা মারণাস্ত্র জমা দেবে।
আজ সোমবার আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভা শেষে সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্ত জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ছাত্র–জনতার অভুত্থ্যানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন মহল থেকে পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র না রাখার দাবি ওঠে। গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনেও একাধিক ডিসি পুলিশের হাতে এ ধরনের অস্ত্র না রাখার সুপারিশ করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মারণাস্ত্র শুধু থাকবে এপিবিএনের হাতে। পুলিশের অভিযানে যেতে মারণাস্ত্রের প্রয়োজন নেই।’
কবে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজ শুধু সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেকোনো সিদ্ধান্ত সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়ন হয় না। কিছুটা সময় লাগবে।’
পুলিশের হাতে কোন কোন ধরনের অস্ত্র রাখা যাবে, কীভাবে কাজ করবে সেসব বিষয় ঠিক করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
র্যাব পুনর্গঠন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, র্যাব এখনকার নামে থাকবে কি না, বর্তমান পোশাক থাকবে কি না, পুনর্গঠন কীভাবে হবে–এসব পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজকে। এ কমিটি হবে পাঁচ থেকে ছয় সদস্যের। বিভিন্ন বাহিনী থেকে কমিটির সদস্য করা হবে। এ কমিটি চাইলে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারবে। এই কমিটি র্যাবের নাম থাকবে কি থাকবে না, তাদের কার্যক্রম কেমন হবে এসব ঠিক করবে।