উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের যাত্রায় অংশীদার হতে জাপানসহ বিশ্বের ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

রবিবার (১১ মে) বিকেলে ওসাকার কানসাই এ ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২৫ এর "বাংলাদেশ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগ অন্বেষণ করে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একসাথে কাজ করতে হবে।”

আরো পড়ুন:

বাণিজ্য উপদেষ্টা
জাপানে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন, বাংলাদেশ এ সুযোগ নিতে পারে

জাপান সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

দর্শকদের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ভিজিট করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে।ঐতিহ্যের সাথে ভবিষ্যৎ সমাজের সেতুবন্ধের প্রতীক হিসেবে প্যাভিলিয়ন কাঠের কাঠামো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে যা শূন্য কার্বন ও টেকসই অনুশীলনের উদাহরণ।”

তিনি বলেন, “বিশ্বে বাংলাদেশ এখন প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের এক অনন্য উদাহরণ। আর্থ-সামাজিক ব্যাপক উন্নয়নের সাথে সাথে দেশটি এখন ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করছে।”

ক্রমবর্ধমান তরুণ জনসংখ্যা এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি দেশের মানুষকে সমৃদ্ধির স্তরে উন্নীত করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি, আসিয়ান দেশগুলোর কৌশলগত কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে এই অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বাণিজ্য অংশীদার হওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।”

তরুণদের দ্বারা সংগঠিত জুলাই আগস্ট বিপ্লব বাংলাদেশে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে বিশ্বের উন্নত দেশসমূহ তৈরি পোশাক, চামড়া, ওষুধ, হালকা প্রকৌশল, আইটি, পাট ও পাটজাত পণ্য, সিরামিক শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকি বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে জাপান বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কে আবদ্ধ আছে। প্রতিনিয়ত এ সম্পর্ক গতিশীল হচ্ছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়ায়ও জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.

দাউদ আলী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকি "বাংলাদেশ দিবস’ উদযাপনের অংশ হিসেবে নিজ নিজ দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড স্মিফনি অব বাংলাদেশ। 

পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও জাপানের প্রতিমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে জাপান প্যাভিলিয়ন ও বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন এবং দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলেন। 

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ণ জ য উপদ ষ ট অন ষ ঠ ন মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়াও সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে ‘স্বীকৃতি দেবে’

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার মতো অস্ট্রেলিয়াও সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।

আলবানিজের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কাছ থেকে কয়েকটি প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিরস্ত্রীকরণ, সাধারণ নির্বাচন আয়োজন এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে অব্যাহতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া।

সোমবার (১১ আগস্ট) ঘোষণা করা এই পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতার চক্র ভাঙা এবং গাজায় সংঘাত, ভোগান্তি ও অনাহারের অবসান ঘটানোর জন্য মানবতার সর্বোত্তম আশা।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

‘আমরা মরে যাচ্ছি’, গণঅনাহারে বৈশ্বিক নীরবতায় গাজার ধিক্কার

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে থাকা ইসরায়েল বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, শনিবার (৯ আগস্ট) থেকে গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যা নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে।

প্রসঙ্গত, গাজা যুদ্ধের প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনি ‘গণহত্যা’ ও ‘গাজায় দুর্ক্ষিভ’ শব্দ ব্যবহার করে না ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন-বিবিসি। এর জন্য মানবাধিকারকর্মীদের কঠোর সমালোচনার মুখে রয়েছে ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত সাংবাদমাধ্যমটি।

ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এর আগে বলেছে, রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া তাদের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থনকে তুলে ধরে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ জানান, তার সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ভবিষ্যতের কোনো রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

তিনি আরো বলেন, গত দুই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের সঙ্গে আলোচনার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “এখানে একটি সুযোগের মুহূর্ত এসেছে এবং অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে এটি কাজে লাগাবে।”

গত রবিবার ফিলিস্তিনের পক্ষে হাজার হাজার মানুষ সিডনি হারবার ব্রিজে পদযাত্রা করে। এই কর্মসূচির জন্য আদালতের রায় নিতে হয় আয়োজকদের।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই পথে হাঁটবে না। তারা মনে করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা।

রবিবার (১০ আগস্ট) মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স পুনরায় বলেন, কার্যকর সরকার না থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।

এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনাকারী দেশগুলোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “ইউরোপীয় দেশগুলো এবং অস্ট্রেলিয়ার এভাবে সেই গর্তে ঝাঁপিয়ে পড়া হতাশাজনক এবং আমার মনে হয়, এটা আসলে লজ্জাজনক।”

“তারা জানে, যদি মেলবোর্নের পাশেই বা সিডনির পাশেই এমন ভয়াবহ হামলা হতো, তবে তারা কী করত। আমি মনে করি, আপনারা অন্তত আমরা যা করছি, তা-ই করতেন।”

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েল তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। যদিও নেতানিয়াহুর দাবি, এটিই যুদ্ধ শেষ করার ‘সেরা উপায়’।

গত বছর স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তাদের আশা ছিল, এটি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি উৎসাহিত করবে।

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের মর্যাদা একটি ‘স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে। এই মর্যাদায় জাতিসংঘের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া যায় কিন্তু ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যায় না।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের শুল্ক শাস্তি, মোদির ভারতের সামনে সহজ কোনো পথ নাই
  • অস্ট্রেলিয়াও সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে ‘স্বীকৃতি দেবে’