নিজ জীবনের সব কষ্টকে এক দিকে রেখে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকে একজন মায়ের। দিন শেষে সেই সন্তানের কোনো ভালো কাজ দেখে আনন্দটুকুতেই একজন মায়ের যেন তৃপ্তি। সেই তৃপ্তিকেই সম্মান জানিয়ে ৩৫ মাকে সম্মাননা দিয়েছে আজাদ প্রোডাক্টস।
২০০৩ সাল থেকে আজাদ প্রোডাক্টস এই সম্মাননা দিয়ে আসছে। গতকাল রোববার ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘রত্নগর্ভা মা ২০২৩-২৪’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ বছর মোট ৩৫ নারীকে রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। ২৫ নারীকে সাধারণ ক্যাটেগরি ও ১০ নারীকে বিশেষ ক্যাটেগরিতে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। ‘আমার মা, আমার ভালোবাসা’ স্লোগানে অনুষ্ঠান শুরু হয় জেমসের বিখ্যাত ‘মা’ গানটি দিয়ে।
সাধারণ ক্যাটেগরিতে সম্মানিত মায়েরা হলেন– মারতুজা নুসরাত, ফরিদা বেগম, রাশিদা বেগম, নাসিমা মান্নান চৌধুরী, বিবি মরিয়ম, রোকেয়া খানম, পিয়ারা বেগম, আফরোজা পারুল, রোকসানা আক্তার, হাসিনা আক্তার, সালেহা করিম, ফাতিমা নার্গিস, আঞ্জুমান আরা বেগম, সালমা আলম, জোবেদা খানম, রাজিয়া বেগম, মোছাম্মৎ মাহমুদা বেগম, কিশোয়ার জাহান, ফাতেমা বেগম, সুরাইয়া চৌধুরী, রাবেয়া পারভীন বানু, আদরিনী সরকার, হাছিনা আক্তার, মনোয়ারা বেগম ও অ্যাডভোকেট হালিমা আক্তার।
বিশেষ ক্যাটেগরিতে সম্মানিত মায়েরা হলেন– শাহানা সিরাজ, মুসলিমা খানম রানা, স্মৃতি কণা বড়ুয়া, খাদিজা খন্দকার, ফাতেমা আলম শাহানা, সাহানা আকতার চৌধুরী, অলকা ঘোষ, শামছুন্নাহার হোসেন, ফরিদা বেগম ও সৈয়দা দিলরুবা খানম। এ ছাড়া মাই ড্যাড ওয়ান্ডারফুল ক্যাটেগরিতে কথাসাহিত্যিক আরেফিন বাদল সম্মানিত হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এডাস্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড.
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে আজাদ প্রোডাক্টসের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মা একজন মহান শিল্পী। সুসন্তান গড়ার ক্ষেত্রে নিপুণ কারিগর।
এদিকে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা ১২ জনের মাকে সম্মাননা দিয়েছে ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে গতকাল ঢাকার মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে ‘গরবিনী মা-২০২৫’ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
সম্মাননা পাওয়া মায়েরা হলেন– জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরীন আফরোজের মা মনোয়ারা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের মা রেজিয়া বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খানের মা মোছাম্মৎ রেজিয়া খাতুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখার মা আয়েশা আক্তার, ডিএমপির উপকমিশনার কাজী নুসরাত এদীব লুনার মা ফরিদা আফরোজা, ল্যাপারোস্কপিক সার্জন সরদার এ নাঈমের মা রাজিয়া কাদের, প্রকৌশলী এ কে এম সাইফুল বারির মা মোছাম্মৎ হাজেরা বেগম, বাংলাভিশনের ডেপুটি হেড অব নিউজ মাহফুজুর রহমানের মা রাজিয়া খাতুন, সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনার মা লুৎফুন্নাহার লুৎফা, মডেল সুমাইয়া শিমুর মা লায়লা রহমান, অভিনেতা আব্দুন নূর সজলের মা কানিজ ফাতেমা এবং অদম্য মেধাবী বর্ষা রানী বীণার মা শৈল বালা।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মায়ের ঋণ কোনো সন্তানই শোধ করতে পারে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনা-৩: ‘বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন না করলে চাচা-ভাতিজার একজন স্বতন্ত্র হব’
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন বাতিল করে স্থানীয় নেতাকে প্রার্থী করার দাবিতে মশাল মিছিল ও পথসভা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে চাটমোহর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। পুরো শহর প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলটি জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধা-৪: ধানের শীষের প্রার্থী বদলের দাবিতে মশাল মিছিল
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল
সভায় বক্তব্য দেন- সাবেক সংসদ সদস্য ও চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কে এম আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা।
হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, “মাঝে মাঝে আপনারা বলেন, বহিষ্কার করে দেব, ওই ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের দমন পীড়ন ও পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আপনার পায়ে ভর করে দাঁড়িয়েছিলাম না। চাটমোহরবাসীর ভালবাসায় টিকে আছি, আগামীতেও থাকব ইনশাল্লাহ। জুজুর ভয় দেখাবেন না। বহিষ্কার করতে চান করে দেন। প্রয়োজনে রাজনীতি করব না। একটা কথা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, দল যদি প্রার্থী পরিবর্তন না করে তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে; তাহলে আপনারা নিশ্চিত থাকেন, হয় চাচা না হয় ভাতিজা, আমরা যে কোনো একজন নির্বাচন করব।”
তিনি বলেন, “দলে যদি ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না থাকে, তাহলে সেই দল কখনো ক্ষমতায় আসতে পারে না। আমার নেতা বারংবার বলেছিলেন, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করব। তাই বলছি, পাবনা-৩ এর মনোনয়ন বাতিল করে যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন, তাহলে সেই ব্যর্থতা আপনাদের। যদি তাই হয়, তাহলে আপনারা নিশ্চিত থাকেন চাটমোহর থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন চাচা না হয় ভাতিজা করবে। আমরা পাবনা-৩ এর কোনো ভোটারকে নিরাশ হতে দেব না। আমরা জীবনবাজি রেখে হলেও পাবনা-৩ এর সাধারণ মানুষের সঙ্গে আছি। প্রার্থী পরিবর্তন না করা পর্যন্ত আমাদের লাগাতার আন্দোলন চলবে, ইনশাল্লাহ।”
হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, “২২ নভেম্বর কৃষিবিদ তুহিন সাহেব চাটমোহরে একটি প্রোগ্রাম আহ্বান করেছেন। যেখানে কেন্দ্রীয় কৃষক দল থেকে সারাদেশে কৃষক দলের নেতাদের চিঠি দিয়ে ডাক দেওয়া হয়েছে পাবনা-৩ এর জন্য। সারাদেশ থেকে নেতাকর্মী নিয়ে এসে যদি পাবনা-৩ এ তার জন্য ভোট করতে হয়, তাহলে তার চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। পাবনা-৩ এ ভোট করতে হলে পাবনা-৩ এর মানুষকেই দরকার। বহিরাগত মানুষকে দিয়ে পাবনা-৩ আসন উদ্ধার হবে না। পাবনা-৩ উদ্ধার করতে হলে পাবনা-৩ এর লোকাল সন্তানকে দিয়েই উদ্ধার করতে হবে। তাই আমি সেন্ট্রাল নেতাদের বলব, এখনো সময় আছে আপনারা মাঠ জরিপ করে দেখে নিন, আপনারা ভুল জায়গায় ভুল মানুষকে মনোনয়ন দিয়েছেন। যদি নেতাকে খুশি করতে চান তাহলে তাকে কোনো টেকনোক্যাট মন্ত্রী বানিয়ে দিন। যদি আসন জিততে চান তাহলে পাবনা-৩ এর মনোনয়ন বাতিল করে নতুন করে মনোনয়ন দিতে হবে। যদি তা না করে আপনাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, তাহলে এই আসনে বিএনপির ভরাডুবি হবে। এর জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা। আমরা দায়ী থাকব না। কারণ সাধারণ মানুষ আমাদের কথায় ভোট দেবে না। তারা সবাই চাচ্ছে স্থানীয় সন্তানকে ভোট দিতে। ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে পাবনা-৩ উদ্ধার হবে না।”
“আমি ও আনোয়ার চাচা দলের হাই কমান্ডের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানেও আমরা একই কথা বলেছি। যার ৫ পার্সেন্ট জনসমর্থন নাই, তাকে যদি আপনারা মনোনয়ন দেন, তাহলে তিনি নির্বাচনে জিততে পারবেন না। যদি দলের কাছে একটা আসনের চাইতে একটা নেতা বড় হয়, তাহলে এই নেতাকে (কৃষিবিদ তুহিন) মনোনয়ন দেওয়া সঠিক আছে। আর যদি আসন জিততে হয় তাহলে পাবনা-৩ এর প্রার্থী পরিবর্তন করে স্থানীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। যদি প্রার্থী পরিবর্তন না করেন তাহলে নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য আমি সেন্ট্রাল নেতাদেরকে দায়ী করব” যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ