কুমিল্লার চান্দিনায় সফিউল্লাহ (১৫) নামের এক হোটেল কর্মচারীর গায়ে ভাতের গরম মাড় ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবুর্চির বিরুদ্ধে। এতে ওই কর্মচারীর শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় হোটেল বাবুর্চি মো. কাশেম মিয়াকে (৩৫)আটক করে পুলিশে দেন হোটেল মালিক ও কর্মচারীরা।

গতকাল রোববার দুপুরে চান্দিনা উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারের রনি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে। আহত হোটেল কর্মচারী সফিউল্লাহ দেবিদ্বার উপজেলার ভানী ইউনিয়নের খিরাইকান্দি গ্রামের অলিউল্লাহ’র ছেলে। হোটেল বাবুর্চি কাশেম মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপজেলার নূরপুর গ্রামের মো.

কাদের মিয়ার ছেলে।

হোটেল মালিক সফিকুল ইসলাম বলেন, হোটেলের রান্নাঘরে ভাতের মাড় ছাঁকার সময় কর্মচারী সফিউল্লাহ’র সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ভাতের গরম মাড় ঢেলে দেন বাবুর্চি কাশেম মিয়া। চিৎকার শুনে আমি পিছনে গিয়ে এ ঘটনা দেখি। তাৎক্ষণিক সফিউল্লাহকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই এবং বাবুর্চিকে আটক করে থানায় ফোন করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

আহত সফিউল্লাহর বাবা কৃষক অলিউল্লাহ জানান, আমার চার সন্তানের মধ্যে সফিউল্লাহ দ্বিতীয়। মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়া অবস্থায় লেখাপড়ায় অমনোযোগী হওয়ায় গত তিন মাস আগে তাকে চান্দিনার রনি হোটেলে দেই। আমার ছেলে যদি অপরাধ করতো; হোটেলের মালিক বা আমাকে বলতে পারতো বাবুর্চি। এভাবে আমার ছেলের শরীরে ভাতের মাড় ঢেলে শাস্তি দিল কেন?

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা. ফারজানা আক্তার জানান, আহতের শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনা শুনার পরপর পুলিশ পাঠিয়ে বাবুর্চিকে হেফাজতে আনা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনিব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভুয়া এআই ভিডিও তৈরির টুল দিয়ে ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে হ্যাকাররা

ভুয়া এআই ভিডিও তৈরির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে নতুন এক তথ্য চুরির ম্যালওয়্যার ‘নুডলোফাইল’। আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরির ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, পাসওয়ার্ড ও ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে এই ক্ষতিকর সফটওয়্যার।

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান মরফিসেক সম্প্রতি জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভুয়া ওয়েবসাইটের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ওয়েবসাইটে বলা হয়, ব্যবহারকারী তাঁর পছন্দের ছবি, ভিডিও বা লেখা প্রকাশ করলেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি হবে স্বয়ংক্রিয় ভিডিও। তবে বাস্তবে এসব সাইটে আপলোডের পর ব্যবহারকারীকে একটি জিপ ফাইল দেখানো হয়। যার ভেতরে ‘ভিডিও ড্রিম মেশিনএআই.এমপিফোর.এক্সই’ নামে একটি ফাইল থাকে। অনেক ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে ফাইল এক্সটেনশন দেখা না যাওয়ায় এটি দেখতে একটি ভিডিও ফাইলের মতো মনে হয়।

এ কৌশলে ব্যবহারকারীদের সন্দেহ কমে যায় এবং কিছু অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারও একে ম্যালওয়্যার হিসেবে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। ফাইলটি চালু করার পর একাধিক ধাপে একটি সংক্রমণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে একটি ব্যাচ স্ক্রিপ্ট চালু হয়ে উইন্ডোজের ‘সার্টইউটিল’ নামের বৈধ টুল ব্যবহার করে একটি পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রার ফাইল ডিকোড করে। এটি একটি পিডিএফ ফাইলের মতো মনে হয়। একই সময়ে উইন্ডোজ রেজিস্ট্রিতে একটি নতুন কি সংযোজন করা হয়। যার মাধ্যমে ম্যালওয়্যারটি কম্পিউটার চালুর সময় নিজে থেকেই সক্রিয় হতে পারে। পরবর্তী ধাপে ‘এসআরসিএইচওএসটি.এক্সই’ নামে একটি ফাইল চালু হয়। যা একটি নির্দিষ্ট সার্ভার থেকে ‘র‍্যান্ডমইউজার২০২৫.টিএক্সটি’ নামে একটি পাইথন স্ক্রিপ্ট ডাউনলোড করে এবং সরাসরি মেমোরিতে চালায়। এই স্ক্রিপ্টের মাধ্যমেই ‘নুডলোফাইল’ নামে ম্যালওয়্যার সক্রিয় হয়।

কম্পিউটারে যদি অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস চালু থাকে, তাহলে ম্যালওয়্যারটি ‘আরইজিএএসএম.এক্সই’ ফাইলের মধ্যে প্রবেশ করে ‘পিই হোলোয়িং’ কৌশল ব্যবহার করে। আবার ‘শেলকোড ইনজেকশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে এটি মেমোরিতে সক্রিয় থাকে। নুডলোফাইল মূলত ওয়েব ব্রাউজারে সংরক্ষিত লগইন তথ্য, পাসওয়ার্ড, সেশন কুকি, টোকেন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটের সংবেদনশীল ফাইল চুরি করতে ব্যবহৃত হয়। প্রয়োজনে এটি দূর থেকে যন্ত্রে ঢোকার (অ্যাকসেস) সুবিধাও দিতে পারে, অর্থাৎ হ্যাকার আক্রান্ত কম্পিউটারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

মরফিসেক জানিয়েছে, ম্যালওয়্যারটি এখনো কোনো পাবলিক নিরাপত্তা ডেটাবেজে নথিভুক্ত নয়। এটি ‘গেট কুকি ও পাসওয়ার্ড’ নামে একটি সেবার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘ম্যালওয়্যার-এ-সার্ভিস’ আকারে ডার্ক ওয়েবের বিভিন্ন ফোরামে বিক্রি হচ্ছে। গবেষকদের ধারণা, এর সঙ্গে ভিয়েতনামি ভাষার একটি সাইবার অপরাধী চক্র যুক্ত।

চুরি করা তথ্য ‘টেলিগ্রাম’ মেসেজিং অ্যাপের একটি বটের মাধ্যমে হ্যাকারদের কাছে পাঠানো হয়। বটটি কার্যত একটি ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’ সার্ভার হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে হ্যাকাররা তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগীর তথ্য গ্রহণ করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নুডলোফাইলের সঙ্গে যুক্ত থাকে ‘এক্সওয়ার্ম’ নামে আরেকটি দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ ট্রোজান। যার মাধ্যমে তথ্য চুরির পাশাপাশি আক্রান্ত কম্পিউটার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব হয়।

সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার

সম্পর্কিত নিবন্ধ