হাড়িভাঙ্গার রাজ্য খ্যাত রংপুরে এখনো আমের মৌসুম শুরু হয়নি। তবে, মৌসুম শুরুর আগেই নগরীর অলিগলি দখল করে নিয়েছে যশোর ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের আম। সাইকেল ও ভ্যানে করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ আম বিক্রি করছেন এখানে। ক্রেতাদের ধারণা, হিমসাগর আমের মৌসুম শুরু হতে এখনো অনেক দেরি। যেটি পাওয়া যাচ্ছে তা অপরিপক্ব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।   

মঙ্গলবার (১৩ মে) সরেজমিনে রংপুর শহরের জাহাজ কোম্পানি মোড়, শাপলা চত্বর, পায়রা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আম বিক্রি চলছে। আকার বড়, ঝকঝকে রঙ ও হালকা মিষ্টি সুবাসে পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ছে আম।

বিক্রেতারা জানান, তারা প্রতিকেজি আম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। কিছু বিক্রেতা ১২০ টাকা দরেও আম বিক্রি করছেন। দাম কিছুটা বেশি হলেও এই ফলটি কেনার প্রতি আগ্রহ ছিল ক্রেতাদের।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন

দুই বিমা কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা

সাতক্ষীরা থেকে আম এনে বিক্রি করছেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা গাছপাকা আম এনেছি। কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়নি। খেলে বুঝবেন, গাছপাকা ও অপরিপক্ব আমের ফারাক।” 

অপর বিক্রেতা আতিক হোসেন বলেন, “যশোরে এখন ভরা মৌসুম। গোবিন্দভোগ আম গাছে গাছে পেকে গেছে। হাড়িভাঙ্গা এখনো পাকেনি। তাই আম নিয়ে বাজার ধরছি। প্রতিদিন একেকজন বিক্রেতা দুই থেকে তিন মণ করে আম বিক্রি করছেন।”

রংপুর নগরীর কলেজ রোডের বাসিন্দা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “সন্দেহ ছিল, কিন্তু কিনে খেয়ে দেখি খারাপ না। হাড়িভাঙ্গার মতো মিষ্টি স্বাদ এখনো পাইনি।”

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী মুক্তা বেগম বলেন, “আমে অনেক সময় কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। যদি গাছপাকা হয় এবং কেমিক্যালের প্রমাণ না মেলে, তাহলে আম খাওয়ায় তেমন সমস্যা নেই।”

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (উদ্যান) হাবিবুর রহমান বলেন, “রংপুর অঞ্চলের আম জুনের শুরুতে বাজারে উঠবে। হাড়িভাঙ্গা আম আসবে জুনের তৃতীয় সপ্তাহে। যশোর ও সাতক্ষীরার আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত গরম হওয়ায় সেখানে আম আগে পাকে। তাই ওখানকার আম আগেই বাজারে আসছে।”

সব মিলিয়ে রংপুরে এখন চলছে এক প্রকার মৌসুমী আমের উৎসব। এখানকার মানুষ হাড়িভাঙ্গার মিষ্টি আমের অপেক্ষায় থাকলেও আগাম হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ দিয়ে শহরবাসী শুরু করেছেন আমের স্বাদ নিতে। জুনের মাঝামাঝি থেকে পুরো উত্তরাঞ্চলেই ছড়িয়ে পড়বে হাড়িভাঙ্গা আমের ঘ্রাণ।

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম ব ক র করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ