অতীতের মুসলিম শাসকদের দয়া ও মহানুভবতা স্মরণ করুন: ভারতকে ওমানের প্রধান মুফতি
Published: 14th, May 2025 GMT
অতীতে দেশটির মুসলিম শাসকেরা কতটা ‘দয়ালু ও সদাশয়’ ছিলেন, ভারত সরকারকে তা স্মরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ওমানের প্রধান বা গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আহমদ বিন হামাদ আল-খলিলি।
একই সঙ্গে শেখ আহমদ ‘আক্রমণকারীদের ওপর বিজয়’ অর্জন করার জন্য পাকিস্তানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
চার দিন ধরে উভয় পক্ষের গোলাবর্ষণ এবং আকাশ থেকে নজিরবিহীন পাল্টাপাল্টি হামলার পর গত শনিবার একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হয় ভারত ও পাকিস্তান।
ওমানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা শেখ আহমদ বিন হামাদ আল-খালিলি গত সোমবার এক বিবৃতিতে ‘আক্রমণকারীর ওপর বিজয় অর্জনের জন্য’ পাকিস্তানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, তারা (পাকিস্তান) তাদের নির্যাতনের শিকার মুসলিম ভাইদের পাশে অবিচল দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়াবে, বিশেষ করে আল-আকসার (জেরুজালেমের) পবিত্র ভূমিতে।’
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের গোয়াদর বন্দর ১৭৮৪ থেকে ১৯৫০–এর দশক পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী ধরে ওমানের অধীন ছিল। ১৯৫৬ সালে ওমান ভারতের কাছে গোয়াদর বন্দর বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু জওহরলাল নেহরু সরকার তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের কাছে গোয়াদর বন্দর বিক্রি করে ওমান।আরবি ভাষায় দেওয়া ওই বিবৃতিতে শেখ আহমদ আরও বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারকে মুসলমানদের প্রতি বৈরিতা পরিত্যাগ করতে আহ্বান জানাই; তাদের মুসলিম শাসকেরা অতীতে ধর্মনির্বিশেষে জনগণের প্রতি যে দয়া ও মহানুভবতা দেখিয়েছিল তা স্মরণ করতে বলি।’
ব্রিটিশ শাসন শুরুর আগে ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক জায়গায় মুসলিম শাসকেরা শাসন করতেন। ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের বেশির ভাগ অঞ্চল মোগল শাসনের অধীন ছিল।
ওমান সরকার শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের সঙ্গেই ওমানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। পাকিস্তানের সঙ্গে ওমানের সমুদ্র সীমান্ত রয়েছে।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের গোয়াদর বন্দর ১৭৮৪ থেকে ১৯৫০–এর দশক পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী ধরে ওমানের অধীনে ছিল। ১৯৫৬ সালে ওমান ভারতের কাছে গোয়াদর বন্দর বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু জওহরলাল নেহরু সরকার তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের কাছে গোয়াদর বন্দর বিক্রি করে ওমান।
‘আমরা ভারত সরকারকে মুসলমানদের প্রতি বৈরিতা পরিত্যাগ করতে আহ্বান জানাই; তাদের মুসলিম শাসকেরা অতীতে ধর্মনির্বিশেষে জনগণের প্রতি যে দয়া ও মহানুভবতা দেখিয়েছিল তা স্মরণ করতে বলি।’শেখ আহমেদ বিন হামাদ আল-খলিলি, ওমানের গ্র্যান্ড মুফতি।ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের সূত্রপাত হয় গত ২২ এপ্রিল, ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই ভারতীয় পর্যটক ছিলেন।
ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে, অন্যদিকে ইসলামাবাদ বলেছে, এ ঘটনায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলা চালিয়ে জবাব দেয় পাকিস্তান।
সর্বশেষ এই সংঘাতে পাকিস্তানে বেসামরিক নাগরিকসহ অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। ভারত বলেছে, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তাদের অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকরাও রয়েছেন।
চার দিন ধরে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আকাশযুদ্ধ ও গোলাবর্ষণের পর গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুনবিশ্বের প্রথম ‘ড্রোন যুদ্ধ’: ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন ঘটাল১১ মে ২০২৫আরও পড়ুন‘অপারেশন সিঁদুরের’ জবাবে পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনইয়ান-উন-মারসুস’ শুরু১০ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব শ খ আহমদ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দাবি জানিয়েছে নাগরিক কোয়ালিশন। শনিবার কোয়ালিশনের এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম নাগরিক কোয়ালিশন। বিবৃতিতে এই কোয়ালিশন বলেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়াত সম্মেলনে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য ও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশের কিছু বড় ও মূলধারার রাজনৈতিক দল আসন্ন নির্বাচনে ভোটের প্রতিযোগিতায় তুষ্টিবাদী রাজনীতির অংশ হিসেবে আহমদিয়াদের প্রতি বিষোদ্গার করছে। এটি খুবই আশঙ্কাজনক ব্যাপার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অনুরোধ করছি, এই সংকটকালে বাংলাদেশের জাতীয় জীবনকে অস্থিতিশীল করতে পারে এমন যেকোনো গোষ্ঠীর ব্যাপারে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে; বিশেষ করে যারা ধর্মকে অবলম্বন করে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ও সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করে।’
দেশের অন্য যেকোনো নাগরিকের মতোই সংবিধানে আহমদিয়াদের ধর্ম পালনের অধিকার সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত রয়েছে বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য এই অধিকার রক্ষায় আমরা অবিচল থাকব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হলো শ্রেণি, বর্ণ, লিঙ্গ, জাতিসত্তা এবং ধর্মীয় পরিচয়–নির্বিশেষে সব নাগরিকের মৌলিক অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা বিষয়ে সরব থাকা। আমরা বিশ্বাস করি, এই মৌলিক সাম্যই হতে হবে জুলাই ২০২৪–পরবর্তী বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর।’
আরও পড়ুনখতমে নবুওয়তের মহাসম্মেলন থেকে ১ দফা দাবিতে বছরজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা৮ ঘণ্টা আগে