স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত মেঘলার মৃত্যু, ২ শিশু আশঙ্কাজনক
Published: 14th, May 2025 GMT
কুষ্টিয়া শহরে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে আহত মেঘলা খাতুন মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হোসেন ইমাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, ওই ঘটনায় গুরুতর আহত মেঘলার চার বছর বয়সী মেয়ে কুলসুম ও দেড় বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরো পড়ুন: কুষ্টিয়ায় স্ত্রী-দুই সন্তানকে ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে সংঘর্ষে আহত ৪, কৃষকের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন
দুই মাথা নিয়ে জন্মানো শিশুর ২ ঘণ্টা পর মৃত্যু
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে আহত করেন মামুন আলী। পরে তিনি নিজেও গলায় ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাদের চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত মামুন কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।
মামুনের পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, মামুনের স্ত্রী মেঘলা পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এরই জেরে মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীকে মারধর ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন মামুন। পরে তিনি তারা দুই মেয়েকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন। মামুন ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
প্রতিবেশী স্বপ্না খাতুন বলেন, “মামুনের স্ত্রী পরকীয়া করত। পরপুরুষের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলত। কয়েকদিন আগে পালিয়ে গিয়েছিল। তারপর ফিরে আসে। মঙ্গলবার রাতে মামুন তার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে তিনি তার দুই মেয়েকেও আহত করেন। এরপর মামুন নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও হোসেন ইমাম বলেন, “মারধর ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চারজন গুরুতর আহত হন। মেঘলা নামে এক নারী মারা গেছেন। বাকিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আহত অভ য গ ম রধর অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘের প্রতিবেদন ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা কেন নয়, রুল হাইকোর্টের
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্ঞান আহরণ বা গবেষণার উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি কেন সংরক্ষণ করা হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
সম্পূরক এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন।
এর আগে ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখা এবং গণহত্যায় (জুলাই-আগস্ট) দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ গত বছরের ১৩ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দেন। দেশজুড়ে গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিরীহ মানুষ হত্যার জন্য অপরাধীদের বিচারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুলে জানতে চাওয়া হয়।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ ও গুরুতর আহতসহ অনেক বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলে ইতিমধ্যে প্রতিবেদন দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। ওই প্রতিবেদন গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়। জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি যুক্ত করে চলতি মাসে সম্পূরক আবেদনটি করেন রিট আবেদনকারী।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জড়িতদের বিচারের জন্য গত বছরের আগস্টে রিটটি করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে রুল দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইন সংশোধন করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন দল কাজ করছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিবেদনে দেখা যায় ১ হাজার ৪০০ মানুষকে খুন করা হয়েছে। এখানে কীভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছে, এখানে রাজনৈতিক প্রভাব কেমন ছিল এবং সে সময় বিচারব্যবস্থা কেমন ছিল অর্থাৎ প্রতিবেদনটি যথাযথ। এ প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। তাই তিনটি উদ্দেশ্যে প্রতিবেদনটি সংরক্ষণ করা উচিত। শুনানি নিয়ে আদালত ওই রুল দেন।
আরও পড়ুনদায়ীদের সুবিচার নিশ্চিতের তাগিদ ফলকার টুর্কের০৫ মার্চ ২০২৫