গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সুদীর্ঘ যাত্রায় এখনো শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত খাবার নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বারবার অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সত্ত্বেও ক্যান্টিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসেনি।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যান্টিনের দায়িত্ব একাধিকবার হস্তান্তর হলেও সমস্যার কোনো কার্যকর পরিবর্তন হয়নি। বরং কিছুদিন পরই পূর্বের দুরবস্থায় ফিরে গেছে। খাবারের দাম ও পরিমাণে রয়েছে অসঙ্গতি। নাস্তা ও দুপুরের খাবারের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়েও শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন নিম্নমানের খাবার। আর ক্যান্টিনের পরিবেশও চরম অস্বাস্থ্যকর, যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুকিতে ফেলেছে। রান্নাঘরের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও স্থান সংকট শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ক্যান্টিনে খাবার খোলাভাবেই রাখা হয়, ব্যবহৃত পোড়া তেল সংরক্ষণ করে পরদিন আবার রান্নায় ব্যবহার করা হয়। রান্নাঘর ভেজা ও দুর্গন্ধময় এবং কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না রাঁধুনিরা।

আরো পড়ুন:

‘আর্টিফিশিয়াল টিআর’ ব্যবহার না করেও চোখের শুষ্কতা কমাবেন কীভাবে

গরমে শিশুর শরীরে কি ময়েশ্চারাইজার দিতে হবে

ক্যান্টিন সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে একাধিক ফুড কোর্ট চালুর প্রস্তাব দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ক্যান্টিন স্থানান্তরের পরিকল্পনা থাকলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তবে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার বি ব্লকে একটি আধুনিক ডিজিটাল ক্যাফেটেরিয়া স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবি প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

ক্যান্টিনের পরিবেশ ও অব্যবস্থাপনার তীব্র সমালোচনা করে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী শান্ত আহমেদ বলেন, “ক্যান্টিনের রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নেই। ফলে সব সময় ভ্যাপসা পরিবেশ বিরাজ করে। খাবারে প্লাস্টিক, মুরগির পালক পাওয়া যায়। আসবাবপত্রে ময়লা লেগে থাকে। পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে খেতে বাধ্য হন।”

ক্যান্টিনের দায়িত্বে থাকা মো.

আরশেদ প্রথমে কয়েকটি অভিযোগ অস্বীকার করলেও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা প্রমাণ উপস্থাপন করলে ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ঈদের পরে ক্যান্টিনের দায়িত্ব ছেড়ে দেব।”

তবে ক্যান্টিন কমিটির সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, কর্মচারীদের টুপি, গ্লাভস পরা ও খাবার ঢেকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেতন না পাওয়ায় তারা নিজেদের প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য মনে করছেন না।

তারা আরো বলেন, শুধু সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থার কারণে অনেকেই ক্যান্টিন পরিচালনায় আগ্রহ দেখান না। শিক্ষার্থীরা যদি কোনো দক্ষ রাঁধুনির সন্ধান দেন, তবে যাচাই-বাছাই করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমার কাছে অভিযোগগুলো পৌঁছেছে। ক্যান্টিন কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবহিত করতে বলেছি।”

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ