মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে উপেক্ষা করে মধ্যপ্রাচ্যে ঐতিহাসিক সফর করছেন। চার দিনের এ সফরের প্রথম দিন গত মঙ্গলবার তিনি সৌদি আরবে যান। সেখানে অস্ত্র ও বাণিজ্যচুক্তি করেন। পরে বুধবার কাতারে পৌঁছান। সেখানে দুই দেশের মধ্যে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চুক্তি হয়। মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ৯৬ বিলিয়ন ডলার খরচে ২১০টি বিমান কিনতে যাচ্ছে কাতার। ওই অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক জটিলতার প্রেক্ষাপটে হোয়াইট হাউস এটিকে ট্রাম্পের চুক্তি করার সক্ষমতা প্রদর্শনের সফর হিসেবে বর্ণনা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা এর চেয়ে বেশি কিছু।     

গতকাল বৃহস্পতিবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সফরকালে ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে আবার নতুন সুযোগ দিয়েছেন। তবে তাঁর পদেক্ষেপ ট্রাম্পের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যনীতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। হোয়াইট হাউস ট্রাম্পকে যেভাবে বিশাল করে ‍তুলে ধরে, তাতে তাঁর অনেক প্রচেষ্টাই বর্ণনার আড়ালে চাপা পড়ে যায়। ট্রাম্প সিরিয়ার নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে রিয়াদে বৈঠক করেছেন। কিন্তু কাতারের কাছ থেকে লাখো বিলিয়ন ডলার দিয়ে বিলাসবহুল বিমান কেনার বিষয়টি ওই বৈঠকের কিচ্ছাকে চাপা দিয়েছে। কার্যত এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা; ২৫ বছর পর সিরিয়ার কোনো নেতার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈঠক। ট্রাম্পের সফরের এটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই শারা এক সময় আলকায়দার নেতা ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই তাঁর মাথার মূল্য ১ কোটি ডলার ঘোষণা করেছিল। 
শুধু সিরিয়াকে দিয়েই ট্রাম্পের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলের চেষ্টা থেমে যায়নি। তিনি নতুন করে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন, তারা যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত থাকে। সেই সঙ্গে তিনি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য ইরান তাঁর হুমকি আমলে নেয়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ান বুধবার বলেছেন, তাঁর দেশ কারও গুন্ডামিতে মাথা নোয়াবে না। বিছানায় শুয়ে মরার চেয়ে শহীদ হওয়া অনেক উত্তম। এ সফর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের দূরত্বকে স্পষ্টভাবে সামনে এনেছে। 
আরব আমিরাতে ট্রাম্প 

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে ব্যাপক সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেন আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। মধ্যপ্রাচ্যে এটাই তাঁর শেষ গন্তব্য। এবার তিনি ইসরায়েল সফর করবেন না।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রায় ঘোষণার পর জুলাই যোদ্ধাদের উচ্ছ্বাস

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সেই সঙ্গে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায় ঘোষণার পরপরই হাইকোর্টের সামনে অপেক্ষারত জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বিভিন্ন স্লোগানে তারা রায়কে স্বাগত জানান।

এদিকে, রায় ঘোষণার পরে উল্লাস প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মিষ্টি বিতরণ করেন।

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ