সোমবার নগর ভবন অবরোধের ঘোষণা ইশরাক সমর্থকদের
Published: 18th, May 2025 GMT
ঢাকার প্রগতি সরণিতে ভরদুপুরে পিচগলা সড়কের উপর অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে। কারও হাতে ব্যানার, কেউবা শ্লোগানে কণ্ঠ মেলাচ্ছেন। সবারই দাবি- ইশরাক হোসেনকে দ্রুত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।
রবিবার (১৮ মে) দুপুরে নগর ভবনের সামনে টানা চতুর্থ দিনের মতো চলা অবস্থান কর্মসূচির চিত্র এটি। এই কর্মসূচি থেকে সোমবার নগর ভবন অবরোধের ডাক দিয়েছেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা।
এই ঘোষণা দেন সাবেক সচিব ও ইশরাকপন্থী মশিউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার সকাল ১১টা থেকে নগর ভবন ও আশপাশের এলাকায় পুরোপুরি অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে সকাল ৯টা থেকেই রাজধানীর নগর ভবনের সামনের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন সমর্থকরা। পিচঢালা রাস্তায় বসে, দাঁড়িয়ে কিংবা ব্যানার হাতে তারা বলেন, “ভোট দিয়ে মেয়র বানিয়েছি, এখন দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।”
দুপুর ১২টার দিকে নগর ভবনের সামনে থেকে সচিবালয় অভিমুখে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। গুলিস্তান, জাতীয় প্রেসক্লাব, শিক্ষাভবন হয়ে আবারও নগর ভবনের সামনে ফিরে আসে মিছিলটি। এর প্রতিটি ধাপেই ছিল দৃপ্ত পদভঙ্গি আর স্লোগানের মুখরতা— “ইশরাকের জয় হোক, জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দাও”।
সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, ‘‘এই শহরের ভোটাররা যাকে মেয়র নির্বাচিত করেছে, তাকে কেন এখনো দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না? এ প্রশ্নের উত্তর প্রশাসনের কাছে নেই। তাই এবার জনগণ রাস্তায়। এই অবরোধ শান্তিপূর্ণ, কিন্তু সংকেত স্পষ্ট। গণতন্ত্র নিয়ে ছেলেখেলা বরদাশত করা হবে না।’’
নগর ভবনের চারপাশে দেখা গেছে অতিরিক্ত পুলিশ। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক অবস্থানে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
ইশরাকের সমর্থকরা বলছেন, ভোটে নির্বাচিত হয়েও দায়িত্ব না পাওয়ার বিষয়টি কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি এক প্রকার ‘গণরায়ের অবমাননা’। এ সময় একজন নাগরিক বলেন, ‘‘যদি দায়িত্বই না দেন, তবে ভোটের কী দরকার ছিল? গণতন্ত্র কি কেবল ব্যালটবাক্সে বন্দি থাকবে?’’
ঢাকা/এএএম//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ ইশর ক
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতি আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের বিষয়ে নাগরিকেরা মনে করেন, কী আর হবে, আগে যেমন ছিল, তেমনই হবে। এটা মনে করলে আর কিছুই বদলাবে না। আগে যেমন ছিল যাতে সে রকম না হয়, সে জন্য সাড়ে আট শ বাচ্চা প্রাণ দিয়েছে, সাড়ে চার শ বাচ্চা অন্ধত্ব বরণ করেছে। এসব আপনার, আমার বাচ্চা। কাজেই আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই।’
গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী দেশের রাজনীতির পরিস্থিতি নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ শনিবার এ কথা বলেন। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা মহানগরী ও উপজেলা এলাকার ৪৪টি খাসপুকুর ও জলাশয় সংস্কার, উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল আজ। এ উপলক্ষে দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাতীয় সম্পদ হিসেবে খাসপুকুর ও জলাশয় রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সংস্কারকাজের আওতায় সীমানা নির্ধারণ, সীমানা পিলার স্থাপন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পুনঃখনন, পাড়বাঁধাই, পানি প্রতিস্থাপন, দূষণমুক্তকরণ, ঘাট নির্মাণ, ওয়াকওয়ে, বেঞ্চ স্থাপন ও বৃক্ষরোপণ করা হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ জরুরি বলে উল্লেখ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা। ঢাকার অধিকাংশ জলাশয় দখল, ভরাট ও দূষণের চাপের মুখে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী ঢাকা মহানগরী ও জেলায় মোট ১১৩টি খাসপুকুর আছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৪৪টি জলাশয় চিহ্নিত করে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে বাকি জলাশয়গুলোর তালিকা তৈরি করে ধাপে ধাপে পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনসাধারণকে পলিথিন ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পলিথিন পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। সরকারি নজরদারি ও জনসচেতনতার কারণে সুপারশপগুলো এখন পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার কমিয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ববোধ অত্যন্ত জরুরি। সে জন্য সবাইকে পলিথিনের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
সিলেটে সাদাপাথর লুট প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘পাথর লুটপাটকারীরা বড় বড় স্লোগান দিয়ে আমাদের দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখেছিল। কিন্তু জনগণের বিক্ষোভ প্রকাশের কারণে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়।’
পরিবেশ রক্ষায় জনগণের আন্দোলনের প্রসঙ্গে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘গণতন্ত্রের শর্তে রয়েছে আপনার পরিবেশ আপনাকে রক্ষা করতে হবে। উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা যাবে না। এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়ার মানুষদের আন্দোলন সফল হয়েছে। আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর করা যাবে না, সেটি এলাকার মানুষ সোচ্চার হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।’
ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া প্রমুখ।