জাতিসংঘের তৃতীয় ওশেন কনফারেন্সে যোগ দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফ্রান্স সরকার। এছাড়া, জাতিসংঘের ফিন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট (এফএফডি৪) কনফারেন্সে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে স্পেন সরকার। তবে, প্রধান উপদেষ্টা বহুপক্ষীয় এ দুটি ফোরামে যোগ দিচ্ছেন না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ৯ থেকে ১৩ জুন ফ্রান্সের নিস শহরে তৃতীয় ওশেন কনফারেন্স হবে। ফ্রান্স ও কোস্টারিকা কনফারেন্সের কো-হোস্টের দায়িত্ব পালন করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ওশেন কনফারেন্সে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা কনফারেন্সে যোগ দেবেন না। তবে, বাংলাদেশ থেকে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কনফারেন্সে যোগ দেবে।

আগামী ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই স্পেনে জাতিসংঘের ফিন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট (এফএফডি৪) কনফারেন্স হবে। বাংলাদেশ এই কনফারেন্সে প্রতিনিধি পাঠাবে। আশা করা হচ্ছে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে একটি প্রতিনিধিদল কনফারেন্সে যাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি বহুপক্ষীয় ফোরামে যোগ দিতে বিদেশ সফর করেছেন। সেই সফরগুলোতে বাংলাদেশের চাওয়া-পাওয়ার বিষয় বিবেচনায় থাকে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আমন্ত্রণ জানানোর পর বাংলাদেশ কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক চেয়েছে। কিন্তু, ফ্রান্সের দিক থেকে সম্মতি পাওয়া যায়নি। শুধু একটা কনফারেন্সে যাওয়া তো ঠিক হবে না।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনফ র ন স

এছাড়াও পড়ুন:

জলবায়ু বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতে জর্জর বিশ্বে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

‘জলবায়ু বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত জর্জর’ এই সময়ে বিশ্বকে উন্নয়নের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আজ সোমবার স্পেনের সেভিয়ায় শুরু হওয়া চতুর্থ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিল সম্মেলনে (এফএফডি৪) তিনি এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘের চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে বিশ্বের অনেক নেতা ও চার হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।

তবে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ সম্মেলনে অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বৈশ্বিক সহযোগিতায় যে ভাঙন শুরু হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি তা আরও স্পষ্ট করে।

গুতেরেস উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, এসডিজির দুই-তৃতীয়াংশই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে আছে। এ লক্ষ্য পূরণে প্রতিবছর ৪ লাখ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ দরকার।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির বাজেট ব্যাপকভাবে কাটছাঁট করেছেন। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ালেও জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্সও উন্নয়ন সহায়তা কমাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফামের মতে, ১৯৬০ সালের পর এবারই উন্নয়ন সহায়তা সবচেয়ে বড় সংকোচনের মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে ৮০ কোটির বেশি মানুষকে দৈনিক ৩ ডলারের কম আয়ে জীবন ধারণ করতে হয়। বিশেষত, সাব-সাহারা আফ্রিকায় চরম দারিদ্র্য বাড়ছে।

বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের আমলে আরোপিত শুল্কনীতি, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ—সব মিলিয়ে দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তা পাওয়ার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। গুতেরেস বলেন, এসব সংকটের কারণে লাখ লাখ শিশু টিকাদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, স্কুল ছাড়ছে কন্যাশিশুরা, ক্ষুধার্ত থাকছে বহু পরিবার।

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘অসমতা, জলবায়ু বিশৃঙ্খলা আর সংঘাতে টালমাটাল বিশ্বে আমাদের উন্নয়নের ইঞ্জিন ঠিক করতে হবে, চালু রাখতে হবে।’

সেভিয়াতে এমন এক সময়ে এফএফডি৪ শুরু হচ্ছে, যখন দক্ষিণ ইউরোপ চরম তাপপ্রবাহে পুড়ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপপ্রবাহের মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

ঋণ বেড়ে তিন গুণ

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী উন্নয়নশীল বিশ্ব বা গ্লোবাল সাউথের সুপরিচিত নেতাদের মধ্যে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো, সেনেগালের বাসিরু দিয়োমায় ফায়ে, ইকুয়েডরের দানিয়েল নোবোয়া, অ্যাঙ্গোলার জোয়াও লরেন্সো এবং সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান অন্যতম।

প্রথম দিন আলোচনার মূল বিষয় ছিল: কীভাবে গরিব দেশগুলোকে বহির্বিশ্বের ঋণের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় অগ্রগতির সুযোগ করে দেওয়া যায়।

জাতিসংঘের হিসাব বলছে, বিগত ১৫ বছরে সবচেয়ে অনুন্নত দেশগুলোর বৈদেশিক ঋণ তিন গুণ বেড়েছে।

তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজের ফাঁকে পানীয় খেয়ে গরম থেকে স্বস্তি খুঁজছেন এক শ্রমিক। ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বোর্দো শহরে ‘পঁ দ্য পিয়ের’ সেতুতে। ৩০ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জলবায়ু বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতে জর্জর বিশ্বে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের