মেট্রোরেলে চড়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাতায়াতে ঢাকাবাসীর অপেক্ষা বাড়ছে। আগামী মাসে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে মেট্রোরেল চালুর কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে যাচ্ছে। ঠিকাদারের বেশি দর প্রস্তাবের কারণে আগামী বছরেও এই সোয়া কিলোমিটার পথ চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

মেট্রোরেল প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ঠিকাদার নিয়োগ করতে গিয়ে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসন অ্যান্ড টুব্রু যে দর প্রস্তাব করেছে, তা প্রাক্কলনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। অন্তর্বর্তী সরকার এত বেশি দরে কাজ করাতে আগ্রহী নয়। এ অবস্থায় বিকল্প ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ অথবা নতুন করে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মতিঝিল–কমলাপুর অংশের ভৌতকাজ, অর্থাৎ উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণের অগ্রগতি খুবই কম। অন্যদিকে রেললাইন, বৈদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজের (ইলেকট্রোমেকানিক্যাল) ঠিকাদার এখনো নিয়োগ দেওয়া যায়নি।

মেট্রোরেল কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২২ সালে। উড়ালপথ ও কমলাপুরে স্টেশন নির্মাণকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয় পরের বছর, ২০২৩ সালে। চুক্তি অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাসে এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে কাজের গতি কম হওয়ায় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশের কাজের জন্য আলাদা দরপত্র আহ্বান না করে মতিঝিল-উত্তরা অংশে কাজ করা ঠিকাদারদের দিয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এ ক্ষেত্রে তা বাড়তি কাজ (ভেরিয়েশন) হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ভৌতকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। এর বাইরে রেললাইন, বিদ্যুতিক ও সংকেতব্যবস্থা স্থাপনসহ অন্যান্য কাজে ভারতীয় ঠিকাদারকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রায় এক বছর চেষ্টা চালায় তারা। তবে তাতে সফল হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঠিকাদারের বেশি দর প্রস্তাবের বিষয়টি সামনে আসে।

মেট্রোরেল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব মত ঝ ল র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী জেলা এনসিপির কমিটি পুনর্গঠনের দাবি একাংশের নেতাদের

রাজশাহী জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একাংশ সংবাদ সম্মেলন করেছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় রাজশাহী নগরের সিএন্ডবি মোড়ের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।। সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা এনসিপির সদ্যঘোষিত কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাজু। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য রাজশাহী এনসিপিকে নিয়ে যে নোংরামি চলছে, সেটি আমরা বরদাশত করব না। আমাদের ক্লিয়ার মেসেজ, এনসিপি আপনারা রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত বা পরিচিত করেননি। এনসিপি প্রতিষ্ঠায় আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী জেলার প্রতিটি ভাইয়ের শ্রম, ঘাম, পরিশ্রম ও ত্যাগ রয়েছে। এ দলটিকে সামনে রেখে নোংরামি বন্ধ করুন। তা না হলে, কালো শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে এবং তাদের রাজশাহী থেকে বিতাড়িত করা হবে।’’ 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ জনকে শোকজ

এনসিপিসহ তিন দলের নির্বাচনি জোট ঘোষণা বিকেলে 

লিখিত বক্তব্যে জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজু আরো বলেন, ‘‘একটা প্রশ্ন প্রিয় কেন্দ্রীয় ভাইদের কাছে, যোগ্যতা কি বয়সের মাপকাঠিতে হয়? যদি হতো, তাহলে তো নাহিদ ইসলাম ভাইয়ের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা লাভ করত না। প্রিয় ভাইয়েরা ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, আর আমরা রাজশাহীতে, পার্থক্য এটাই। আফসোস যারা নিজের জন্য রাজনীতি করে, তারাই আজ যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে, মাঠে ময়দানে লড়াই সংগ্রামে না থেকেও।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘আমরা তরুণ প্রজন্ম রাজশাহীতে এনসিপি নিয়ে সম্ভাবনা ও সুন্দর স্বপ্ন দেখি। ব্যক্তি স্বার্থের জন্য দলটাকে ধ্বংস করবেন না। কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ, রাজশাহী জেলা কমিটি যোগ্যতার ভিত্তিতে পুনঃমূল্যায়ন করবেন এবং যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেগুলো সমাধান করবেন। অন্যথায় আমাদের ছুটি দিবেন। আমরা কোনো কালো শক্তি, লোভ লালসা ও ক্ষমতার চেয়ারের জন্য নিজেদের আদর্শকে বিসর্জন দিতে চাই না।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী জেলা এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফাত উদ্দিন আবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি আব্দুল বাসির, এনসিপির জেলার সদস্য নিজাম উদ্দিন রাজা, আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলটির একটি অংশ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের অভিযোগে জেলার আহ্বায়ক সাইফুলকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। এরই মধ্যে কর্মসূচি ও পাল্টা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজশাহী জেলা ও মহানগর। এসব ঘটনায়  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৫ জনকে বিশৃঙ্খলার দায়ে শোকজও করেছে। শোকজের পরদিনই এই সংবাদ সম্মেলন করল জেলা এনসিপির একাংশ। 

ঢাকা/কেয়া/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ