Prothomalo:
2025-07-05@01:38:16 GMT

মঙ্গল কেন মরু গ্রহ

Published: 4th, July 2025 GMT

দূর থেকে মঙ্গল গ্রহকে একটি বিশাল লোহার লাল বলের মতো মনে হয়। আর তাই লাল রঙের মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। অনেকেই মঙ্গল গ্রহে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান রয়েছে বলে ধারণা করলেও নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অতীতে মঙ্গল গ্রহে বিভিন্ন নদী বিক্ষিপ্তভাবে প্রবাহিত হলেও সেগুলো কোটি কোটি বছর আগে শুকিয়ে গেছে। নদীগুলোর পলি ও ধুলাবালুর কারণে মঙ্গলগ্রহ এখন প্রায় পুরোটাই মরুভূমির মতো একটি বিরান গ্রহ।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বর্তমানে দূর থেকে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে বিভিন্ন প্রাচীন নদী ও হ্রদের চলার পথ দেখা যায়। আর তাই ধারণা করা হচ্ছে, একসময় পৃথিবীর মতোই পানির প্রবাহ ছিল মঙ্গল গ্রহে। সেই গ্রহে বর্তমানে বেশ কয়েকটি রোভার প্রাণের আদি আবাসের সন্ধান করছে। লাখ লাখ বছর আগে মঙ্গলগ্রহ কতটা বাসযোগ্য ছিল, সেই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে রোভারগুলো। এরই মধ্যে মঙ্গল গ্রহে কার্বনেট খনিজ সমৃদ্ধ শিলার খোঁজ পেয়েছে কিউরিওসিটি রোভার। এই কার্বনেট পৃথিবীর চুনা পাথরে পাওয়া যায়।

মঙ্গল গ্রহের শিলা বিশ্লেষণের মাধ্যমে গ্রহটির অতীত সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহে তরল পানির উপস্থিতি ছিল স্বল্প সময়ের জন্য। সেই সময়ের ১০ কোটি বছর পর গ্রহটি মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তবে মঙ্গল গ্রহের গভীরে তরল পানির কিছু অংশ এখনো থাকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এডউইন কাইট জানিয়েছেন, মনে হচ্ছে মঙ্গল গ্রহ কিছু সময়ের জন্য বাসযোগ্য ছিল। গ্রহটিতে যেসব মরূদ্যানের খোঁজ পাওয়া গেছে, তা পৃথিবী থেকে কিছুটা আলাদা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইড আছে, যা গ্রহকে উষ্ণ করে। পৃথিবীতে দীর্ঘ সময় ধরে কার্বনেটের মতো পাথরে কার্বন ধারণের বিষয়টি খেয়াল করা যায়। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত গ্যাসকে বায়ুমণ্ডলে ফিরিয়ে আনে, যা ধারাবাহিকভাবে জলবায়ু চক্র তৈরি করে। একই ধরনের একটি চক্র মঙ্গল গ্রহেও ছিল। পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গল গ্রহের আগ্নেয়গিরির গ্যাস নির্গত হওয়ার হার দুর্বল ছিল বলে তাপমাত্রার ভারসাম্য দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র বন

এছাড়াও পড়ুন:

কলম্বোয় আজ সিরিজে ফেরার লড়াই

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলন অনেকটা কেতাবি ঢংয়ে হয়ে থাকে। প্রতিপক্ষ দল নিয়ে ভালো কথা বলেন দলীয় প্রতিনিধিরা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি সনাথ জয়াসুরিয়াও বললেন, ভালো খেলে বাংলাদেশের জয়ে ফেরার সুযোগ আছে। আসলে ভালো খেলতে জানলে যে কোনো দল, যে কোনো কন্ডিশনে জিততে পারে। কেউ ভুল বুঝবেন না, বাংলাদেশ ভালো খেলতে জানে না, তা বলা হচ্ছে না। গত দেড় বছরের জয়-পরাজয় এবং দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে আপনি নিজেই দেখতে পাবেন যে কোনো ম্যাচে আংশিক ভালো খেলা দল বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও আংশিক পারফরম্যান্স দেখেছেন। বোলিং ও ফিল্ডিং কাঙ্ক্ষিত মানে রাখতে পারায় স্বাগতিকদের ২৪৪ রানে বেঁধে ফেলা সম্ভব হয়েছে। ব্যাটিংয়ের শুরুটাও ভালো ছিল। ‘হঠাৎ ভুলে’ তা রঙচটে গেছে দ্রুতই। এই পারফরম্যান্সকে ক্রিকেটাররাও আংশিক ভালো বলছেন। আসলে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় এভাবে জেতা ম্যাচ হারতে দেখলে সমর্থকরা খুব হতাশ হন। 

লঙ্কানদের বিপক্ষে আজকের ম্যাচ নিয়ে তাই উচ্চাশা থাকার কথা না। ফলে চাপহীন ক্রিকেট খেলার জন্য মেহেদী হাসান মিরাজরা উপযুক্ত একটি পরিবেশ পাচ্ছেন। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে সোনার হরিণ হয়ে ওঠা জয় ধরাও দিতে পারে। 

প্রেমাদাসার উইকেট স্লো বলে বাংলাদেশ দলে যে চর্চা হচ্ছে, জয়াসুরিয়ার কথা সত্য হলে মিরাজরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতা আড়াল করতে ভালো দল উইকেটকে অজুহাত বানায় না। প্রথম ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকে লঙ্কান প্রধান কোচ জয়াসুরিয়া বলেন, ‘ব্যাটিং করার জন্য কন্ডিশন সত্যিই খুব ভালো ছিল। আউট ফিল্ড ও পিচ ভালো ছিল। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া কিছুটা সমস্যা করেছে। সেদিক থেকে আমরাও ব্যাটিংয়ে সংগ্রাম করছিলাম। এর পরও ২৪৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি।’ খুব বেশি মন্থর না হলেও প্রেমাদাসার উইকেটে বুঝেশুনে খেলতে হয় বলে সাবেক ক্রিকেটারদের দাবি। সেট হলে ইনিংস লম্বা করার কৌশল নেওয়ার পরামর্শ দেন জাতীয় দলের সাবেক প্রেস বোলিং কোচ চম্পকা রমানায়েকে। গেল ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত রানআউট হওয়ার পর এটা করতে হতো তানজিদ হাসান তামিমকে।

গত দুই দিনের টিম মিটিংয়ে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ডাক্তার দেখাতে ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে খেলোয়াড়দের গেম প্ল্যান দিয়ে গেছেন। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে যেটা তামিম তুলে ধরলেন, ‘আমাদের একটা লম্বা আলোচনা হয়েছে গেল ম্যাচ নিয়ে। সেখানে কোচ কিছু তথ্য দিয়েছেন। শেষ ম্যাচে আমরা যেভাবে কলাপস করেছি, সেদিক থেকে সবার জন্য বার্তা এখানে– যে সেট হবে, তাকে লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। ওদের ভালো মানের বোলার থাকায় এই মাঠে খেলা একটু কঠিন। সেক্ষেত্রে হাসারাঙ্গার বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটারদের বেশি খেলা উচিত। কারণ বাঁহাতিদের বিপক্ষে সে অতটা কার্যকর না, যতটা ডানহাতিদের ক্ষেত্রে। সব বিষয়েই কিছু কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে, আশা করি সবাই তা কাজে লাগাবে।’ 

গত নভেম্বরে শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এরপর টানা সাত ম্যাচে পরাজয়। এই ফল চোরা স্রোতের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ে নিচের দিকে টেনে নিচ্ছে টাইগারদের। এভাবে চলতে থাকলে ১০ থেকে ১১ নম্বরে যেতে বেশি সময় লাগবে না। মিরাজরা ভালো করেই জানেন এই সিরিজ দিয়ে জয়ের ছন্দে ফিরতে না পারলে ২০২৭ সালে সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন একটু একটু করে দূরে সরে যেতে পারে। এই ভয় থেকেই হয়তো লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ জিততে চান তামিমরা।

তিনি বলেন, ‘তিন ম্যাচের সিরিজে এখন দুই ম্যাচ আছে। আমরা চিন্তা করছি সামনের ম্যাচ নিয়ে। সিরিজে টিকে থাকার জন্য এই ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ আর গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচেই কিনা খেলবেন না তাসকিন আহমেদ। গোড়ালির চোট পরিচর্যা করে সদ্য জাতীয় দলে ফেরা ৩০ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারকে সফরে পাঁচ ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা আগেই দিয়েছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ। সে হিসেবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বিশ্রাম পাওয়ার কথা তাঁর।

জাতীয় দল সূত্রে জানা গেছে, শেষ ওয়ানডে এবং তিনটি টি২০ ম্যাচ খেলবেন। তাঁর জায়গায় হাসান মাহমুদ বা নাহিদ রানাকে খেলাতে পারে দল। তবে দুই পেসার খেলালে স্পিনার একজন বাড়বে। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের সঙ্গে বাঁহাতি তানভীর ইসলামকে রেখে দেওয়া হতে পারে। যদিও অভিষেক ম্যাচে ভালো করতে পারেননি তিনি। মিরাজের বোলিংয়ে ধার কমে গেছে। টানা পাঁচ ম্যাচে উইকেটশূন্য তিনি। সুতরাং লঙ্কানদের বিপক্ষে জিততে হলে অধিনায়ক এবং তাঁর দলকে অলআউট ক্রিকেট খেলতে হবে। সেটা না পারলে পরাজয়ের বৃত্তবন্দি থেকে কাল ক্যান্ডি যেতে হবে মিরাজদের। এত নেতিবাচকতার মাঝেও বলতে হয় তবুও আশায় ঘরবসতি মিরাজদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ