পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থবির, সচিব নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে
Published: 20th, May 2025 GMT
পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে মো. জসীম উদ্দিনকে না রাখার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রায় দুই সপ্তাহ আগে নিয়েছে সরকার। তবে নতুন পররাষ্ট্র সচিব নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। তাঁর উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন নতুন নিয়োগের বিষয়ে কয়েকজন কূটনীতিকের নাম প্রস্তাব করে সারসংক্ষেপ তৈরি করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন– যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড.
নাম না প্রকাশের শর্তে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে নতুন পররাষ্ট্র সচিবের নথি সই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র সচিব ১৫তম ব্যাচ থেকেই নেওয়া হবে বলে আভাস পাওয়া যায়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ-বদলি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে দাপ্তরিক প্রয়োজনে পররাষ্ট্র সচিবের থাকার কথা থাকলেও তাঁকে রাখা হয়নি। সে বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় জসীম উদ্দিন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে থাকছেন না। বিষয়টি তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। নতুন পররাষ্ট্র সচিব নিয়োগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন নিয়ে কোনো আদেশ জারি করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয় স্থবির হয়ে পড়েছে। মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে সমস্যা। এর প্রভাব পড়তে পারে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফরে। এমন পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড. মো. নজরুল ইসলামকে দিয়ে অনেক দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। গত ১৫ মে টোকিওতে জাপানের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন নজরুল ইসলাম।
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনকে কেন সরানো হচ্ছে– সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত সরকারের কোনো পর্যায় থেকে দেওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এর কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না। গতকাল মন্ত্রণালয়ে দিনভর এ নিয়ে কানাঘুষা চলেছে।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন গত সেপ্টেম্বরে পররাষ্ট্র সচিব পদে যোগ দেন। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে তাঁর অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখন পর্যন্ত তিনজনকে এক বছরের কম সময়ের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯৭২ সালে নিয়োগের ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয় পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ আনোয়ারুল করিমকে। ১৯৮৯ সালে এ কে এইচ মোরশেদকে সরানো হয় চার মাসের মাথায়। ২০০১ সালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে পররাষ্ট্র সচিবের পদ থেকে পাঁচ মাসের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হয়। সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে ২০০১ সালের মার্চে আওয়ামী লীগ সরকার নিয়োগ দেয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য না করার নির্দেশনা সিলেট জেলা বিএনপির
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য কিংবা তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। দলের কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম।
এদিকে দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচার–বহিভূর্ত মন্তব্য করায় গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবেদুর রহমানকে (আছকির) সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফখরুল ইসলামকে (ফারুক) সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন কিছু ইউনিটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কার্যক্রমে অনভিপ্রেত ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ উপজেলা, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, কটূক্তি ও বিভাজন সৃষ্টিকারী পোস্ট প্রচারিত হয়েছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী।
বিএনপি সব সময় সংগঠনের ঐক্য, শালীনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর কাছ থেকে বিভেদমূলক আচরণ, বিদ্বেষ ছড়ানো বা প্রকাশ্যে অপপ্রচার কখনোই কাম্য নয়। অতএব জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য বা শেয়ার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।
যোগাযোগ করলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু নেতা-কর্মীকে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি একটি নির্দেশনা দিয়েছে। তা অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।