কাবা প্রত্যেক মুসলিমের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও পবিত্র স্থান। একে আল্লাহর ঘর বলা হয়। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মুসলিম মসজিদুল হারামে এসে আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে কাবা প্রদক্ষিণ করেন। এখানে কাবা সম্পর্কে ৯টি তথ্য উপস্থাপন করা হলো, যা হয়তো আপনার জানা নেই।

১.কাবা বহুবার পুনর্নির্মিত হয়েছে: কাবা প্রথমে আদম (আ.

), দ্বিতীয়বার শিস (আ.) এবং তারও পরে নবী ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) কাবা নির্মাণে ভূমিকা রাখেন। তবে এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহুবার পুনর্নির্মাণের মধ্য দিয়ে গেছে। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগে এটির উল্লেখযোগ্য সংস্কার হয়। সর্বশেষ বড় ধরনের পুনর্নির্মাণ হয় ১৯৯৬ সালে, যখন অনেক পাথর প্রতিস্থাপিত হয় ও ভিত্তি আরও মজবুত করা হয়।

২. কাবার দুটি দরজা ও একটি জানালা: কাবার মূলত দুটি দরজা ছিল—একটি প্রবেশের জন্য, অপরটি বের হওয়ার জন্য। এ ছাড়া এক পাশে একটি জানালাও ছিল। বর্তমানে শুধু একটি দরজা রয়েছে এবং অন্যটি কালো রঙে ঢাকা, যা ঝড়ের সময় গিলাফ সরে গেলে দৃশ্যমান হয়।

৩. কাবা একসময় বহুরঙা ছিল: কাবার কালো কাপড়ের ঐতিহ্য আব্বাসীয় খিলাফতের সময় থেকে শুরু হয়, যাদের প্রিয় রং ছিল কালো। এর আগে কাবা শরিফকে সবুজ, লাল ও সাদা রঙে সাজানো হতো।

আরও পড়ুনঅতি মূল্যবান ও পবিত্র হাজরে আসওয়াদ১০ জুন ২০২৩

৪. কাবার চাবি: মহানবী মুহাম্মদ (সা.) মক্কা বিজয়ের পর বানি শাইবা পরিবারের ওসমান ইবনে তালহা (রা.)-কে কাবার চাবি দিয়েছিলেন। এই পরিবার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আজও কাবার চাবির দায়িত্ব পালন করেন।

৫. কাবা একসময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল: অতীতে কাবা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল, যে কেউ এর ভেতরে প্রবেশ করতে পারত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন শুধু সৌদি বাদশাহ, প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়।

৬. মক্কায় সাঁতার কেটে তাওয়াফ: অতীতে মক্কায় পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় বৃষ্টির সময় কাবার চারপাশে পানি জমে যেত। তখন মানুষ সাঁতার কেটে তাওয়াফ করত।

৭. ‘হাজরে আসওয়াদ’ পাথরটি ভাঙা: হাজরে আসওয়াদ কেন রুপার আবরণে রাখা হয়, তা অনেকের কৌতূহল। বাহরাইন থেকে আগত ৩১৭ হিজরিতে (৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ) ইসমাইলি গোষ্ঠী কারামিতা তাওয়াফকে কুসংস্কার মনে করে হাজিদের ওপর হামলা চালায়, হাজারো মানুষকে হত্যা করে এবং তাদের দেহ জমজম কূপে ফেলে দেয়। তখন পাথরটি ভেঙে কয়েকটি টুকরায় পরিণত হয়। তারা হাজরে আসওয়াদ ইরাকের কুফায় নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। আব্বাসীয় খিলাফতের সময় টুকরাগুলো ফেরত আনা হয় এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় জোড়া লাগানো হয়।

৮. কাবার ভেতরে যেকোনো দিকে নামাজ পড়া যায়: কাবায় প্রবেশ করলে বা ওপরে উঠলে আপনি যেকোনো দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে পারবেন। কারণ, কাবা নিজেই কিবলা।

৯. দরজা খোলার সময়: কাবার দরজা বছরে মাত্র দুবার খোলা হয়—সাধারণত পরিচ্ছন্নতা ও সুগন্ধি ছড়ানো জন্য।

 সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম

আরও পড়ুনকাবা শরিফ মার্বেল পাথরের অপূর্ব কাহিনি১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য র সময

এছাড়াও পড়ুন:

কাবা সম্পর্কে যে ৯টি তথ্য জানা উচিত

কাবা প্রত্যেক মুসলিমের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও পবিত্র স্থান। একে আল্লাহর ঘর বলা হয়। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মুসলিম মসজিদুল হারামে এসে আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে কাবা প্রদক্ষিণ করেন। এখানে কাবা সম্পর্কে ৯টি তথ্য উপস্থাপন করা হলো, যা হয়তো আপনার জানা নেই।

১.কাবা বহুবার পুনর্নির্মিত হয়েছে: কাবা প্রথমে আদম (আ.), দ্বিতীয়বার শিস (আ.) এবং তারও পরে নবী ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) কাবা নির্মাণে ভূমিকা রাখেন। তবে এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহুবার পুনর্নির্মাণের মধ্য দিয়ে গেছে। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগে এটির উল্লেখযোগ্য সংস্কার হয়। সর্বশেষ বড় ধরনের পুনর্নির্মাণ হয় ১৯৯৬ সালে, যখন অনেক পাথর প্রতিস্থাপিত হয় ও ভিত্তি আরও মজবুত করা হয়।

২. কাবার দুটি দরজা ও একটি জানালা: কাবার মূলত দুটি দরজা ছিল—একটি প্রবেশের জন্য, অপরটি বের হওয়ার জন্য। এ ছাড়া এক পাশে একটি জানালাও ছিল। বর্তমানে শুধু একটি দরজা রয়েছে এবং অন্যটি কালো রঙে ঢাকা, যা ঝড়ের সময় গিলাফ সরে গেলে দৃশ্যমান হয়।

৩. কাবা একসময় বহুরঙা ছিল: কাবার কালো কাপড়ের ঐতিহ্য আব্বাসীয় খিলাফতের সময় থেকে শুরু হয়, যাদের প্রিয় রং ছিল কালো। এর আগে কাবা শরিফকে সবুজ, লাল ও সাদা রঙে সাজানো হতো।

আরও পড়ুনঅতি মূল্যবান ও পবিত্র হাজরে আসওয়াদ১০ জুন ২০২৩

৪. কাবার চাবি: মহানবী মুহাম্মদ (সা.) মক্কা বিজয়ের পর বানি শাইবা পরিবারের ওসমান ইবনে তালহা (রা.)-কে কাবার চাবি দিয়েছিলেন। এই পরিবার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আজও কাবার চাবির দায়িত্ব পালন করেন।

৫. কাবা একসময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল: অতীতে কাবা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল, যে কেউ এর ভেতরে প্রবেশ করতে পারত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন শুধু সৌদি বাদশাহ, প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়।

৬. মক্কায় সাঁতার কেটে তাওয়াফ: অতীতে মক্কায় পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় বৃষ্টির সময় কাবার চারপাশে পানি জমে যেত। তখন মানুষ সাঁতার কেটে তাওয়াফ করত।

৭. ‘হাজরে আসওয়াদ’ পাথরটি ভাঙা: হাজরে আসওয়াদ কেন রুপার আবরণে রাখা হয়, তা অনেকের কৌতূহল। বাহরাইন থেকে আগত ৩১৭ হিজরিতে (৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ) ইসমাইলি গোষ্ঠী কারামিতা তাওয়াফকে কুসংস্কার মনে করে হাজিদের ওপর হামলা চালায়, হাজারো মানুষকে হত্যা করে এবং তাদের দেহ জমজম কূপে ফেলে দেয়। তখন পাথরটি ভেঙে কয়েকটি টুকরায় পরিণত হয়। তারা হাজরে আসওয়াদ ইরাকের কুফায় নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। আব্বাসীয় খিলাফতের সময় টুকরাগুলো ফেরত আনা হয় এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় জোড়া লাগানো হয়।

৮. কাবার ভেতরে যেকোনো দিকে নামাজ পড়া যায়: কাবায় প্রবেশ করলে বা ওপরে উঠলে আপনি যেকোনো দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে পারবেন। কারণ, কাবা নিজেই কিবলা।

৯. দরজা খোলার সময়: কাবার দরজা বছরে মাত্র দুবার খোলা হয়—সাধারণত পরিচ্ছন্নতা ও সুগন্ধি ছড়ানো জন্য।

 সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম

আরও পড়ুনকাবা শরিফ মার্বেল পাথরের অপূর্ব কাহিনি১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ