ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর গুজব: যা বলছে পরিবার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
Published: 8th, July 2025 GMT
লালনসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েক দিন ধরে ঢাকার মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অসুস্থতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থার মধ্যেই গতকাল সোমবার রাত থেকে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ায়-এই গুণী শিল্পী নাকি আর নেই। কেউ কেউ তাঁর ছবি পোস্ট করে মৃত্যুর ভুয়া খবর ছড়াতে শুরু করেন।
বিষয়টি নিয়ে চরম বিব্রত এবং মর্মাহত শিল্পীর পরিবার। আজ দুপুরে শিল্পীর স্বামী, যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম সমকালকে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। ফরিদা এখনো জীবিত, আমরা তাঁকে ঘিরে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। এমন সংকটময় মুহূর্তে মানুষ দোয়া করবে-এই তো প্রত্যাশা। অথচ কেউ কেউ যাচাই না করেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটা কী ধরনের মানসিকতা!’
শিল্পী যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সেই ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা.
সংকটাপন্ন হলেও এখনো জীবিত এই শিল্পীর জন্য সবার কাছে প্রার্থনা চেয়েছেন গাজী আবদুল হাকিম। তাঁর ভাষায়,‘সার্বিকভাবে ফরিদার অবস্থা ভালো নয়। গত কয়েক মাসে তাঁকে তিনবার আইসিইউতে নিতে হয়েছে। ফুসফুস ও কিডনিজনিত জটিলতায় তিনি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছেন। হাঁটা বা দাঁড়ানোর শক্তিও নেই। আমাদের একটাই অনুরোধ—গুজব ছড়াবেন না। সবার দোয়া দরকার এখন।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত