লক্ষ্মীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ। রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা মো. সৌরভ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সক্রিয় মৌসুমি বায়ু ও পূর্ণিমার প্রভাবের কারণে বৃষ্টি হচ্ছে। আরো কয়েক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।”

এদিকে, বৃষ্টির কারণে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে শহরের জেবি রোড, কলেজ রোড, বাঞ্ছানগর, মজুপুর ও শমসেরাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রিকশা চলাচলও সীমিত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন পৌরবাসী।

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান

সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা বহাল

পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ, পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলে শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দ্রুত ড্রেন পরিষ্কার করে পানি সরানো না হলে আরো দুর্ভোগ বাড়বে। বৃষ্টি এইভাবে অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কাও করছেন অনেকেই।

স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রশাসক মো.

জসীম উদ্দিন বলেন, “যেসব জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি সরানোর কাজ চলছে। ড্রেন পরিষ্কার করে দ্রুত সময়ে পানি সরানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য শহরের আশপাশে খাল পরিষ্কার করে পানি প্রবাহের কাজ করছে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসন।”

গত বছর আগস্ট মাসের শেষ দিকে প্রবল বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সে সময় অনেকের বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ফেনী-নোয়াখালী থেকে আসা বন্যার পানির কারণে প্রায় দেড় মাস পানিবন্দি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলার কয়েক লাখ মানুষ। এই বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগ থেকে জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকারের নির্দেশনায় জলাবদ্ধতা নিরসনে অভিযান পরিচালনা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লক ষ ম প র প রসভ র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ

চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।

এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।

অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ