গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর পুরোনো খেলায় ট্রাম্প–নেতানিয়াহু
Published: 8th, July 2025 GMT
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন। সেখানে তাঁরা আবারও গাজা উপত্যকা থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক অন্যত্র পাঠানোর বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরই বিতর্কিত এই পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
গতকাল সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের ব্লু রুমে নৈশভোজের সময় গাজা পরিকল্পনা নিয়ে দুজনের আলোচনা হয়। তাঁরা এমন সময়ে এসব বিতর্কিত ও পুরোনো খেলায় মেতেছেন, যখন কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। ওই আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একসঙ্গে কিছু দেশের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের ‘ভবিষ্যৎ ভালো হয়’। তাঁর ইঙ্গিত ছিল, গাজার মানুষ চাইলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে চলে যেতে পারে।
ইহুদিবাদী এই নেতা বলেন, যদি কেউ থাকতে চায়, থাকতে পারে। তবে যদি কেউ চলে যেতে চায়, তার সুযোগ থাকা উচিত। গাজা যেন কোনো কারাগার না হয়, বরং খোলা জায়গা হয়। মানুষ যেন নিজের পছন্দ বেছে নিতে পারে, সেই সুযোগ থাকা উচিত।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এমন সব দেশ খুঁজে বের করতে, যারা আগে থেকেই বলে আসছে—তারা চায় ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে। আমার মনে হয়, কয়েকটি দেশ পাওয়া যাচ্ছে।’
ট্রাম্প বলেছেন, ‘চারপাশের দেশগুলো থেকে দারুণ সহযোগিতা’ পাওয়া গেছে। আর তাতে ‘ভালো কিছু হবে’।
বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে ওই অঞ্চলকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ (মধ্যপ্রাচ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উপকূলীয় এলাকা) বানানো যেতে পারে। তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
‘জাতিগত নিধনের পথ’
আল–জাজিরার জর্ডানের আম্মানের সাংবাদিক হামদাহ সালহুত বলেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কথা বলে আসছে। এটাকে তারা ‘স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ’ বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এটি একধরনের জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা।
সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক অ্যালন পিনকাস বলেন, কে কী বলল, সেটা দিয়ে বোঝা যাচ্ছে না যে সত্যিই কোনো বাস্তব পরিকল্পনা আছে। প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট অনেক সময় মুখে অনেক কথা বলেন। পরে তা কেবল মতামত হয়ে থাকে, বাস্তব পরিকল্পনা নয়।
অ্যালন বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজায় ‘ফিলিস্তিনি রিভেরা’ হবে। কিন্তু ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে তাড়ানো হবে।
অ্যালন আরও বলেন, ‘মার্কিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরির চেষ্টা করলেও সেটা বাস্তবে কার্যকর হবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। বরং এটা গাজা নিয়ে ভবিষ্যতের কোনো শান্তিচুক্তিকে অনিশ্চিত করে তুলবে।’
ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর বৈঠকের মধ্যেই কাতারে ইসরায়েল ও হামাস টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পরোক্ষ আলোচনা করেছে। সেখানে আলোচনায় আছে—৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, হামাসের কাছে থাকা বন্দীদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং পুরো যুদ্ধ শেষ করার উপায়।
তবে কথা হচ্ছে, এই যুদ্ধবিরতির পরে কি যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হবে? হামাস বলছে, তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণ সরানোর শর্তে সব বন্দীর মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
কিন্তু নেতানিয়াহু বলছেন, হামাস আত্মসমর্পণ করলে এবং গাজা ছেড়ে গেলে কেবল যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েলের এই শর্ত হামাস মানতে রাজি নয়।
নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, এই সপ্তাহেই হয়তো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি পূর্ণ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মানেন না এবং ইসরায়েল গাজার ওপর সব সময় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।
গতকাল সোমবার কাতারের বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ কাতারে আলোচনায় যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, ‘আলোচনা সময় নেবে। আমি এখনই কোনো সময়সীমা দিতে পারছি না।’
নোবেল পুরস্কারের লোভ
এই আলোচনার কিছুদিন আগেই ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার নির্দেশ দেন। এরপর ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাত অবসানে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
গতকাল ওয়াশিংটনে বৈঠককালে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে একটি চিঠি দেন, যা দিয়ে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ট্রাম্প বিষয়টি শুনে খুশি হয়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
আল–জাজিরার ওয়াশিংটন সংবাদদাতা ফিল ল্যাভেল বলেন, সবকিছুই অনেকটা লোক দেখানো। নেতানিয়াহু নিজ দেশে এই বৈঠককে বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে চান। তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখাতে আগ্রহী।
এর আগেও ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তিনি নোবেল পুরস্কার পেতে আগ্রহী। ভারত-পাকিস্তান ও কঙ্গো-রুয়ান্ডার মধ্যে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তিগুলোকে নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা আলোচনার তারিখ ঠিক করেছি। তারা আলোচনা চায়। তারা বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে।’
ট্রাম্পের উপদেষ্টা উইটকফ বলেন, আলোচনা সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হতে পারে।
এর আগে গতকাল সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তেহরান বিশ্বাস করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সব দ্বন্দ্বের সমাধান সম্ভব।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একই দিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং দূত উইটকফের সঙ্গেও বৈঠক করেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র স ট র ম প বল ইসর য় ল র বল ছ ল ন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর পুরোনো খেলায় ট্রাম্প–নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন। সেখানে তাঁরা আবারও গাজা উপত্যকা থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক অন্যত্র পাঠানোর বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরই বিতর্কিত এই পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
গতকাল সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের ব্লু রুমে নৈশভোজের সময় গাজা পরিকল্পনা নিয়ে দুজনের আলোচনা হয়। তাঁরা এমন সময়ে এসব বিতর্কিত ও পুরোনো খেলায় মেতেছেন, যখন কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। ওই আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের উগ্রবাদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একসঙ্গে কিছু দেশের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের ‘ভবিষ্যৎ ভালো হয়’। তাঁর ইঙ্গিত ছিল, গাজার মানুষ চাইলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে চলে যেতে পারে।
ইহুদিবাদী এই নেতা বলেন, যদি কেউ থাকতে চায়, থাকতে পারে। তবে যদি কেউ চলে যেতে চায়, তার সুযোগ থাকা উচিত। গাজা যেন কোনো কারাগার না হয়, বরং খোলা জায়গা হয়। মানুষ যেন নিজের পছন্দ বেছে নিতে পারে, সেই সুযোগ থাকা উচিত।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এমন সব দেশ খুঁজে বের করতে, যারা আগে থেকেই বলে আসছে—তারা চায় ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে। আমার মনে হয়, কয়েকটি দেশ পাওয়া যাচ্ছে।’
ট্রাম্প বলেছেন, ‘চারপাশের দেশগুলো থেকে দারুণ সহযোগিতা’ পাওয়া গেছে। আর তাতে ‘ভালো কিছু হবে’।
বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে ওই অঞ্চলকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ (মধ্যপ্রাচ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উপকূলীয় এলাকা) বানানো যেতে পারে। তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
‘জাতিগত নিধনের পথ’
আল–জাজিরার জর্ডানের আম্মানের সাংবাদিক হামদাহ সালহুত বলেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কথা বলে আসছে। এটাকে তারা ‘স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ’ বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এটি একধরনের জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা।
সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক অ্যালন পিনকাস বলেন, কে কী বলল, সেটা দিয়ে বোঝা যাচ্ছে না যে সত্যিই কোনো বাস্তব পরিকল্পনা আছে। প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট অনেক সময় মুখে অনেক কথা বলেন। পরে তা কেবল মতামত হয়ে থাকে, বাস্তব পরিকল্পনা নয়।
অ্যালন বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজায় ‘ফিলিস্তিনি রিভেরা’ হবে। কিন্তু ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে তাড়ানো হবে।
অ্যালন আরও বলেন, ‘মার্কিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরির চেষ্টা করলেও সেটা বাস্তবে কার্যকর হবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। বরং এটা গাজা নিয়ে ভবিষ্যতের কোনো শান্তিচুক্তিকে অনিশ্চিত করে তুলবে।’
ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর বৈঠকের মধ্যেই কাতারে ইসরায়েল ও হামাস টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পরোক্ষ আলোচনা করেছে। সেখানে আলোচনায় আছে—৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, হামাসের কাছে থাকা বন্দীদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং পুরো যুদ্ধ শেষ করার উপায়।
তবে কথা হচ্ছে, এই যুদ্ধবিরতির পরে কি যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হবে? হামাস বলছে, তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণ সরানোর শর্তে সব বন্দীর মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
কিন্তু নেতানিয়াহু বলছেন, হামাস আত্মসমর্পণ করলে এবং গাজা ছেড়ে গেলে কেবল যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েলের এই শর্ত হামাস মানতে রাজি নয়।
নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, এই সপ্তাহেই হয়তো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি পূর্ণ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মানেন না এবং ইসরায়েল গাজার ওপর সব সময় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।
গতকাল সোমবার কাতারের বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ কাতারে আলোচনায় যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, ‘আলোচনা সময় নেবে। আমি এখনই কোনো সময়সীমা দিতে পারছি না।’
নোবেল পুরস্কারের লোভ
এই আলোচনার কিছুদিন আগেই ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার নির্দেশ দেন। এরপর ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাত অবসানে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
গতকাল ওয়াশিংটনে বৈঠককালে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে একটি চিঠি দেন, যা দিয়ে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ট্রাম্প বিষয়টি শুনে খুশি হয়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
আল–জাজিরার ওয়াশিংটন সংবাদদাতা ফিল ল্যাভেল বলেন, সবকিছুই অনেকটা লোক দেখানো। নেতানিয়াহু নিজ দেশে এই বৈঠককে বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে চান। তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখাতে আগ্রহী।
এর আগেও ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তিনি নোবেল পুরস্কার পেতে আগ্রহী। ভারত-পাকিস্তান ও কঙ্গো-রুয়ান্ডার মধ্যে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তিগুলোকে নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা আলোচনার তারিখ ঠিক করেছি। তারা আলোচনা চায়। তারা বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে।’
ট্রাম্পের উপদেষ্টা উইটকফ বলেন, আলোচনা সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হতে পারে।
এর আগে গতকাল সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তেহরান বিশ্বাস করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সব দ্বন্দ্বের সমাধান সম্ভব।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একই দিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং দূত উইটকফের সঙ্গেও বৈঠক করেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।