সাগর উত্তাল থাকায় সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম রুটে নৌযান চলাচল রোববার থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে মারাত্মক অসুস্থাবস্থায় এর মধ্যে এক কিশোরকে চট্টগ্রাম শহরে আনার সময় মাঝ সাগরে সে মারা গেছে। ওই কিশোরের নাম আবদুর রহমান। সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় সে মারা যায়। 

আজ মঙ্গলবার সকালে সন্দ্বীপের উপজেলার কালাপানিয়ার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় রহমানকে। সে স্থানীয় মো.

মানিকের ছেলে।

স্বজনরা জানান, রহমান এক সপ্তাহ ধরে জ্বরসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিল। সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় মিলছিল না নৌযান। প্রায় ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করে সাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিতে তারা ছোট একটি নৌকা ভাড়া করেন। কিন্তু মাঝ সাগরেই রহমান মারা যায়। 

সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানস বিশ্বাস বলেন, খুবই অসুস্থ অবস্থায় ওই কিশোরকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তখন তার মলদ্বার দিয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এ রোগীর চিকিৎসা দিতে একজন সার্জনের প্রয়োজন। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বড়পুকুরিয়ায় পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শিশুর নাম ইলিয়াস হোসেন (১০)। সে কয়লা খনি-সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। 

জানা যায়, গতকাল দুপুরে কয়লা খনির ডাম্পিং এলাকা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইলিয়াস একটি ধাতব বস্তু পেয়ে খেলতে খেলতে তা বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইল ফোনের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ইলিয়াসের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত শিশুর বাবা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ইলিয়াস খনির পাশ থেকে ওই ধাতব জিনিসটি কুড়িয়ে এনে বাড়িতে খেলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে গিয়ে দেখি আমার ছেলের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, কয়লা খনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা ডাম্পিং এরিয়া রয়েছে। সেখানে খনির বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এলাকার লোকজন সেখানে ঢুকে এসব বর্জ্য থেকে কয়লা সংগ্রহ করে বিক্রি করে। এসব বর্জ্যের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বিস্ফোরক ডিভাইসও মেলে। অনেক সময় শিশুরা এগুলো বাড়িতে নিয়ে খেলা করে।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এক শ্রমিক জানান, খনির ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয় না, সেখানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ৫০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হয়।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা বলছেন, খনি কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য খনির ব্যবহৃত বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্য অপসারণে প্রশাসনের আরও সাবধান হওয়া উচিত।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক বলেন, ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে পরিত্যক্ত ডেটোনেটর গ্রামবাসীর সংগ্রহ করার বিষয়টি আগে কেউ আমাদের নজরে আনেনি। ঘটনার পর জানতে পেরেছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। ডেটোনেটর বিস্ফোরণের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আহত শিশুর চিকিৎসার বিষয়ে খনি কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে এবং তার পাশে থাকবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ