Prothomalo:
2025-07-08@17:47:56 GMT

স্তনে ব্যথা কেন হয়, কী করবেন

Published: 8th, July 2025 GMT

কেন ব্যথা হয়

মাসিক চলাকালে বা আগে–পরে নারীদের স্তনে ব্যথা স্বাভাবিক। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এ ব্যথা হয়। পিরিয়ড শেষ হলে ব্যথা থাকে না।

গর্ভধারণের সময় নারীরা স্তনে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। সাধারণত গর্ভধারণের তৃতীয় মাসে ব্যথা শুরু হয়। কারণ, তখন স্তনের আকার বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় স্তনের ওপর নীল শিরা দেখা যায়। এর কারণ তখন অনেক বেশি পরিমাণে রক্তপ্রবাহ হয় এবং হরমোনের অনেক পরিবর্তন ঘটে।

নারীদের স্তনে প্রদাহজনিত সমস্যার ফলে স্তনে ব্যথা হতে পারে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের আক্রমণে এটি হয়ে থাকে। এ ব্যথায় জ্বর আসতে পারে। এ সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অনেক সময় স্তনে একধরনের সিস্ট হয়, যার ভেতর তরলজাতীয় পদার্থ থাকে। এর নাম ব্রিজ সিস্ট। স্তনের গ্রন্থি বৃদ্ধি পেলে অনেক সময় এই সিস্ট দেখা যায়। এর কারণে ব্যথা হয়। সিস্ট অনুভব করতে পারলে যত দ্রুত সম্ভব স্তনবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

সন্তান জন্মদানের পর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও স্তনে ব্যথা হতে পারে। এ সময় পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। শিশুকে দুধ খাওয়ানোর আগে ও পরে স্তন পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো। কারণ, এতে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।

স্তনে ঘা বা ইনফেকশন থেকে স্তনে ব্যথা হতে পারে। স্তনের নিপলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। এতে প্রচণ্ড ব্যথা ও ফোড়ার মতো হয়।

স্তন ক্যানসার দীর্ঘদিন পার হলে স্তনসহ বুকের পাঁজর ও পেশিতে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত শুরুর দিকে কোনো ব্যথা থাকে না।

আরও পড়ুনদিনে কতবার পুশআপ করলে পার্থক্য চোখে পড়বে৮ ঘণ্টা আগেপ্রতিকার ও করণীয়

স্তনের মাপ অনুযায়ী ব্রা পরুন। ছোট মাপের আঁটসাঁট ব্রা এড়িয়ে চলুন।

কম চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করবেন।

দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

ভিটামিন বি৬, ভিটামিন ই১ (থায়ামিন) ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান।

খুব ব্যথা হলে পিরিয়ডের আগে–পরে ব্যথা কমানোর ওষুধ খাওয়া যায়।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ড্যানাজোলের প্রয়োগ করা যায়।

ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা ও লবণ কম খাওয়া উচিত।

এরপরও স্তনে মৃদু ব্যথার সঙ্গে চাকা অনুভব করা, নিঃসরণ বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অধ্যাপক ডা.

রওশন আরা বেগম, রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ, আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনপুরুষের কারণে দাম্পত্য সমস্যা, চিকিৎসা কী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিনামূল্যের ওষুধ পান না রোগী

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে এক্স-রেসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ করা হলেও তা রোগীর হাতে পৌঁছায় না। জ্বালানি তেলের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ায় চালু হয় না জেনারেটর।
দুই লাখের বেশি মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান দিন দিন নাজুক রূপ নিচ্ছে। জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মে বিপর্যস্ত হাসপাতালটি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে প্রতিদিন রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা ক্লিনিকের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
কাগজ-কলমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু কাজ করছেন ছয়জন। প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী হাসপাতালে আসেন। এত রোগীর সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক ও স্টাফদের হিমশিম অবস্থা। ফলে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত রোগীরা বারবার ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতাল বা নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সার্জারি, শিশুস্বাস্থ্য, চক্ষু, নাক-কান-গলা, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিকস, গাইনি, ডেন্টালসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য। ফলে অন্তঃসত্ত্বা, হৃদরোগসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। বাধ্য হয়ে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, যার খরচ জোগানো অনেকেরই সাধ্যের বাইরে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগ কার্যত চিকিৎসকশূন্য। ওই সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো), কিছু চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করেন। আইন অনুযায়ী, এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কারও চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি নেই। ফলে প্রতিনিয়ত ভুল চিকিৎসার ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা।
শান্তিনগর এলাকার আহসান হাবিব গত সপ্তাহে জরুরি বিভাগে এসে এমবিবিএস চিকিৎসক পাননি। বাধ্য হয়ে স্যাকমোর শরণাপন্ন হন। 
শুধু চিকিৎসক সংকট নয়; অন্যান্য জনবলের ক্ষেত্রেও একই দশা। ১৯৪ কর্মচারীর মধ্যে ৯৩টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। নার্সিং সেবাসহ প্রতিটি বিভাগে চলছে তীব্র সংকট। নার্সের অভাবে ওয়ার্ডে রোগীর সঠিক দেখভাল হয় না। স্যানিটেশন ব্যবস্থা এতটাই করুণ, দুর্গন্ধে রোগী ও স্বজনের থাকা দায়। 
আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে, ইসিজি মেশিন ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষিত টেকনোলজিস্ট নেই। পড়ে থেকে এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় অস্ত্রোপচার প্রায় ছয় বছর ধরে বন্ধ। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেই পুরো হাসপাতালে নেমে আসে অন্ধকার। আইপিএস অকেজো। 
বোড়াই গ্রামের আনজুমান গত মঙ্গলবার তাঁর স্ত্রী রহিমাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। তিনি বলেন, ‘রাতে লোডশেডিং হয়েছিল। স্ত্রীকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হয়েছে সারারাত। 
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি ওষুধ স্টোর থেকে উত্তোলন করা হলেও রোগীদের হাতে পৌঁছায় না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল চক্র। তারা কমিশনের আশায় রোগী ভাগিয়ে নেন।
ধুনট গ্রামের আসমা বেগম বলেন, এ হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় তিনি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বানদিঘী গ্রামের তাজরুল ইসলাম জানান, তাঁর সন্তানের চিকিৎসার জন্য সব পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়েছে। ওষুধও মেলে না। 
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুব উল আলম জানান, মাত্র কয়েকজন চিকিৎসক 
আর সীমিত সরঞ্জাম নিয়ে প্রতিদিন শত শত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা 
তাদের। মানসম্পন্ন চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে 
না। বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে; কাজ হয়নি। রাতে জরুরী বিভাগে চিকৎসক থাকেনা কেন?–জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা 
বলেন, অবশ্যই একজন চিকিৎসক থাকেন। সঙ্গে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারও থাকেন। বাইরে ওষুধ বিক্রির অভিযোগও অস্বীকার করেন এ কর্মকর্তা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ