ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে রকেট প্রকল্প স্থগিত করল মার্কিন বিমানবাহিনী, কেন
Published: 8th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলের কঠোর সমালোচনা করার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে ইলন মাস্কের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। একে অপরের সমালোচনা করায় তাঁদের মধ্যে একসময়কার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখন আর নেই বললেই চলে। আর তাই গত জুনে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে থাকা সব সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার মার্কিন বিমানবাহিনী স্পেসএক্সের সঙ্গে প্রস্তাবিত হাইপারসনিক রকেট কার্গো ডেলিভারি প্রকল্প স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
মার্কিন বিমানবাহিনীর তথ্যমতে, বিজ্ঞানী ও বন্য প্রাণী অধিকারকর্মীদের উত্থাপিত পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে অংশীদারত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রশান্ত মহাসাগরের দূরবর্তী দ্বীপ অ্যাটলে বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করতে সক্ষম রকেট ও যানবাহনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল। প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপটি ১৪ প্রজাতির গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক পাখির আবাসস্থল। আর তাই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেই এলাকার পাখির জনসংখ্যা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে প্রতিবাদও জানিয়েছেন জীববিজ্ঞানী ও সংরক্ষণবাদীরা।
আরও পড়ুনইলন মাস্ক সম্পর্কে চমকপ্রদ ২১ তথ্য, যা হয়তো আপনার অজানা২২ নভেম্বর ২০২২অ্যাটলে দ্বীপটি ফ্রিগেটবার্ড ও বুবি পাখিদের ঘন উপনিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। মার্কিন বিমানবাহিনী এই এলাকায় ৯০ মিনিটের মধ্যে ১০০ টন পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম উচ্চ গতির পুনঃপ্রবেশকারী রকেট ও যানবাহন অবতরণ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট নির্মাণের অভিজ্ঞতার কারণে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির অংশীদার করা হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনী এখন পরিবেশগত সংঘাত এড়াতে বিকল্প পরীক্ষামূলক স্থান অনুসন্ধান করছে।
আরও পড়ুন২৬ বছর আগের ইলন মাস্কের যে ‘প্রলাপ’ এখন বাস্তব ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪পরিবেশগত প্রভাবের জন্য স্পেসএক্স আগেও বেশ কয়েকবার সমালোচনার মধ্যে পড়েছে। ২০২৩ সালে টেক্সাসের বোকা চিকাতে একটি স্টারশিপ উৎক্ষেপণের ফলে পাখির বাসা ধ্বংস হয়ে গেলে আইনি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। ইলন মাস্ক সেই সময়ে সমালোচনার জবাব দিলেও ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করেননি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক ন ব ম নব হ ন ইলন ম স ক র স প সএক স প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়েবসাইটের তথ্য জালিয়াতি প্রতারণার ফাঁদে ৭০০ শিক্ষক
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ওয়েবসাইটে অবৈধভাবে ভার্চুয়াল অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে তথ্য জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সিলেটের ১০ থেকে ১২ জনসহ দেশব্যাপী প্রায় ৭০০ শিক্ষক প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। এ নিয়ে চলছে তোলপাড়।
জালিয়াতিতে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরবি প্রভাষক ও লাইব্রেরিয়ান পদের শিক্ষকরা। উত্তীর্ণ শিক্ষকদের তথ্য দিয়ে প্রতারকরা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন করে টাকাও জমা দিয়ে ফেলেছে। এ অবস্থায় সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আবেদন করতে পারছেন না। আবেদন করার চেষ্টায় সংশ্লিষ্ট সাইটে প্রবেশই করতে পারছেন না তারা।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবেদনের শেষ তারিখ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দেশের প্রায় ৭০০ শিক্ষক। এদিকে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করাসহ বঞ্চিতদের পুনরায় আবেদনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি সম্পর্কে জানার পর তদন্ত শুরু করেছে এনটিআরসিএ। সূত্রের তথ্য মতে, সোমবার বগুড়া থেকে প্রতারণায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান-৩) মাইনুল ইসলাম। ওই ব্যক্তি লাইব্রেরিয়ান পদে বিভিন্নজনের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে জালিয়াতি করেন। বিষয়ভিত্তিক সবাই জানে কতটি পদ রয়েছে। যে বা যারা ভুয়া আবেদন করেছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ৪ জুন। যারা উত্তীর্ণ তথা চাকরির সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠান পছন্দ করে আবেদন দাখিলের জন্য ১৬ জুন ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ২২ জুন থেকে আবেদন শুরু করেন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। নিয়ম অনুযায়ী উত্তীর্ণ শিক্ষক তাদের রোল, ব্যাচ ও জন্ম তারিখ দিয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করে আবেদন জমা দেওয়ার কথা। সেটি করতে গিয়ে শত শত শিক্ষক ব্যর্থ হন। সে সময় ভার্চুয়াল জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
যাদের রোল, জন্ম তারিখ ও ব্যাচ ব্যবহার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশ সর্বোচ্চ নাম্বার প্রাপ্ত। এর মধ্যে একজন কুমিল্লার লাকসামের প্রভাষক রহমত আলী। তিনি ৯৫ মার্কস পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি সমকালকে জানান, তাঁর তথ্য দিয়ে অন্য একজন আবেদন করেছেন। যার সঙ্গে তাঁর ছবি, নাম ও স্বাক্ষরের মিল নেই। তাঁর মতো সাত শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের রাফি উদ্দিন, সিলেটের আব্দুর রাজ্জাক, আবুল কাশেমসহ একাধিক শিক্ষক এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন। তারা আবেদনে উল্লেখ করেন, চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করতে পারছেন না। হ্যাকার চক্র তাদের রোল, ব্যাচ ও জন্ম তারিখ ব্যবহার করে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দিয়ে আবেদন সাবমিট করে রেখেছে। এ বিষয়ে এনটিসিআরসিএর আরেক সহকারী পরিচালক এসএম আতিয়ার রহমান (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন-৩) সমকালকে জানান, বিষয়টি তারা জেনেছেন। শিক্ষকদের আবার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।