যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলের কঠোর সমালোচনা করার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে ইলন মাস্কের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। একে অপরের সমালোচনা করায় তাঁদের মধ্যে একসময়কার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখন আর নেই বললেই চলে। আর তাই গত জুনে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে থাকা সব সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার মার্কিন বিমানবাহিনী স্পেসএক্সের সঙ্গে প্রস্তাবিত হাইপারসনিক রকেট কার্গো ডেলিভারি প্রকল্প স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।

মার্কিন বিমানবাহিনীর তথ্যমতে, বিজ্ঞানী ও বন্য প্রাণী অধিকারকর্মীদের উত্থাপিত পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে অংশীদারত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রশান্ত মহাসাগরের দূরবর্তী দ্বীপ অ্যাটলে বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করতে সক্ষম রকেট ও যানবাহনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল। প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপটি ১৪ প্রজাতির গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক পাখির আবাসস্থল। আর তাই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেই এলাকার পাখির জনসংখ্যা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে প্রতিবাদও জানিয়েছেন জীববিজ্ঞানী ও সংরক্ষণবাদীরা।

আরও পড়ুনইলন মাস্ক সম্পর্কে চমকপ্রদ ২১ তথ্য, যা হয়তো আপনার অজানা২২ নভেম্বর ২০২২

অ্যাটলে দ্বীপটি ফ্রিগেটবার্ড ও বুবি পাখিদের ঘন উপনিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। মার্কিন বিমানবাহিনী এই এলাকায় ৯০ মিনিটের মধ্যে ১০০ টন পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম উচ্চ গতির পুনঃপ্রবেশকারী রকেট ও যানবাহন অবতরণ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট নির্মাণের অভিজ্ঞতার কারণে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির অংশীদার করা হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনী এখন পরিবেশগত সংঘাত এড়াতে বিকল্প পরীক্ষামূলক স্থান অনুসন্ধান করছে।

আরও পড়ুন২৬ বছর আগের ইলন মাস্কের যে ‘প্রলাপ’ এখন বাস্তব ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পরিবেশগত প্রভাবের জন্য স্পেসএক্স আগেও বেশ কয়েকবার সমালোচনার মধ্যে পড়েছে। ২০২৩ সালে টেক্সাসের বোকা চিকাতে একটি স্টারশিপ উৎক্ষেপণের ফলে পাখির বাসা ধ্বংস হয়ে গেলে আইনি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। ইলন মাস্ক সেই সময়ে সমালোচনার জবাব দিলেও ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করেননি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র ক ন ব ম নব হ ন ইলন ম স ক র স প সএক স প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ