কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া থানা মোড়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার সময় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা ক্লিনিকের মালিকের বাড়িতে হামলা করেছেন।

সোমবার (৭ জুন) রাত ৯টার দিকে উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড়ে অবস্থিত তারাগুনিয়া ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যু হয়। একই ক্লিনিকে গত ৮ জুন সিজারিয়ান অপারেশন করার সময় আরেক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল।  

রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রিফাইতপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা গ্রামের আইনাল আলীর স্ত্রী ও তারাগুনিয়া মন্ডলপাড়া গ্রামের মনজুর আলী শেখের মেয়ে মুন্নিকে (২২) সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য তারাগুনিয়া ক্লিনিকে সোমবার (৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টার দিকে অপারেশন করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেন ডা.

সফর আলী। রাত পৌনে ১১টার দিকে অপারেশন টেবিলে প্রসূতি মুন্নী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর কৌশলে ডা. সফর আলী ও ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন পালিয়ে যান। রোগীর স্বজনেরা রাতে ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেনকে না পেয়ে তার বাড়িতে চড়াও হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের শান্ত করে।

আরো পড়ুন:

রাজধানীতে চালককে মারধর করে অটোরিকশা ছিনতাই

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এসিড নিক্ষেপ, দগ্ধ ৩

স্থানীয়রা জানান, বার বার একটি ক্লিনিকে এমন ঘটনা ঘটবে, সেটা কারো কাম্য নয়।

চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই প্রসূতির রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা একেবারে কম ছিল এবং এ অবস্থায় রোগীর অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। যে কারণে অন্য ক্লিনিক তাকে অপারেশনের জন্য ভর্তি করেনি। ডা. সফর আলী একজন গাইনী চিকিৎসক হয়েও কীভাবে এই ঝুঁকি নিলেন তা তাদের বোধগম্য হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা জানান, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় উভয় পক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। 

গত ৮ জুন এই ক্লিনিকে ফিলিপনগর কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমন আলীর স্ত্রী আঁখি খাতুনের অপারেশন করার সময় মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. শেখ কামাল হোসেন বলেন, ‘‘এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি ত্রুটি পাওয়া যায়, ক্লিনিকের বিরুদ্ধে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’ 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত র ম ত য

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ