রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবল ফেনী শহর, জলাবদ্ধতায় নাকাল জনজীবন
Published: 8th, July 2025 GMT
ফেনীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানির নিচে চলে গেছে। ভয়াবহ দুর্ভোগে নাকাল জনজীবন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) এ জেলায় ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
তিনি জানিয়েছেন, দুই দিন ধরে ফেনীতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী দুই-তিন দিন এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
টানা বৃষ্টিতে ফুলগাজী বাজারের শ্রীপুর রোডে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি দোকান ধসে পড়েছে। নিলক্ষ্মী-গাবতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেনী শহরের ডাক্তার পাড়া, সদর হাসপাতাল মোড়, শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক, পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস, রামপুর, একাডেমি, পাঠানবাড়ি, পেট্রোবাংলোসহ অন্তত ১২টি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালের পর থেকেই জলমগ্ন সড়কে চলতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। শহরের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, “ছেলেকে স্কুলে দিতে গিয়ে হাঁটু পানি পার হতে হয়েছে। রিকশাও চলে না।”
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আমজাদ হোসেন বলেন, “ট্রাংক রোড থেকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে আসতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। রাস্তায় হাটুসমান পানি। কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘‘মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে, উজানে ভারী বৃষ্টি হলে পানি বাড়তে পারে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।”
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র ঠেকিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন এমপি শিমুলের বেয়াই
নাটোরের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাহিদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
মাহিদুর রহমানের অভিযোগ, সাবেক এমপি শিমুলের বেয়াই মীর হাবিবুল আলম বখতিয়ার নামের ওই ঠিকাদার পাথর নিয়ে তাঁকে প্রায় চার কোটি টাকা দিচ্ছেন না।
মাহিদুরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদে। তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে ঠিকাদারদের কাছে সরবরাহ করতেন।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মীর হাবিবুর কনস্ট্রাকশনের নির্বাহী পরিচালক মীর হাবিবুর আলম বখতিয়ারকে মাহিদুর রহমান ১৯ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকার পাথর সরবরাহ করেন। লেনদেনের এক পর্যায়ে বখতিয়ার ৩ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা আর পরিশোধ করেননি।
টাকা চাইলে তাঁকে নাটোরে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নেন। সেখানে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করেন। এর পর তিন-চারজন মিলে ভয় দেখিয়ে একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। মাহিদুর সাধারণত যে স্বাক্ষর দিয়ে থাকেন, তা না দিয়ে শুধু নিজের নাম লিখে দিয়ে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসেন। পরে ওই স্ট্যাম্পে লেখা হয় যে, মাহিদুর তাঁর সব পাওনা বুঝে পেয়েছেন।
ওই ঘটনার পর মাহিদুর টাকার জন্য মোবাইল ফোনে বখতিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। তিনি টাকা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাকা দেননি। মামলা করলে টাকা আদায়ে বিলম্ব হবে, তাই মামলা না করে মাহিদুর আপসে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে সেনাবাহিনী, রাজপাড়া থানা, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছেও অভিযোগ করেন। এদিকে ঠিকাদার বখতিয়ার আত্মগোপনে থেকে এখনও রাজশাহী সওজ থেকে কোটি কোটি টাকার কাজের বিল তুলে যাচ্ছেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। এ সময় মাহিদুর বখতিয়ারকে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহিদুরের স্ত্রী ময়েদা বেগম ও ভাগনে জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ময়েদা বেগম বলেন, পাওনা টাকা না পেয়ে তারা ব্যাংক ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। এলাকায়ও অনেক পাওনাদার তৈরি হয়েছে। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাদের মাঠের জমিও দখল নিয়েছেন পাওনাদাররা।
এ বিষয়ে মীর হাবিবুর আলম বখতিয়ারকে ফোন করলে তিনি বলেন, মাহিদুর রহমানের সব টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি
শেষে এসে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পেতেন। কিন্তু দাবি করছেন ৪ কোটি টাকা। হিসাব করে পরে ৫০ লাখ করে চারটি চেকের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এতদিন পরে এসে মিথ্যা অভিযোগ আনছেন।
সাবেক এমপি শিমুলের প্রভাব খাটানোর বিষয়ে তিনি বলেন, শিমুল আমার বড় ভাইয়ের শ্যালক। এ ঘটনা যখন ঘটে তখন তিনি দেশেই ছিলেন না।