দুর্দশা শহীদ হাসিবের পরিবারে, পাননি সরকারি সহায়তা
Published: 8th, July 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হাসিবুর রহমান (১৭) ‘শহীদ’ হিসেবে গেজেটভুক্ত হলেও সরকারী সহায়তা পায়নি পরিবার।
৬ জুলাই দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে হাসিবের পরিবার থেকে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাসিবের বড় চাচা তোতা মিয়া ঢালী।
তিনি জানান, শহীদ হাসিবের বাবা দেলোয়ার হোসেন ঢালী প্যারালাইসিসে আক্রান্ত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। তার দেখভাল করেন হাসিবের বৃদ্ধ দাদি, যিনি নিজেও শারীরিকভাবে অক্ষম। পরিবারটি বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তোতা মিয়া ঢালী বলেন, “ শহীদ হাসিব গেজেটভুক্ত হলেও আমরা অধিকাংশ সরকারি সাহায্য পাইনি। আমাদের পরিবারকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। যদিও হাসিব দেশের ছাত্রদের ন্যায্য অধিকারের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে।”
‘‘ভাতার জন্য বিভিন্ন স্থানে আমরা ঘুরেছি। শিঘ্রই হয়ে যাবে এমন আশ্বাস পেলেও জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনি।’’ অভিযোগ তোতা মিয়া ঢালীর।
শহীদ হাসিবুর রহমানের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার উত্তর কানাইপুর গ্রামে। অভাব অনটনের সংসারে বড় হয়েছিলেন হাসিব। প্রতিবন্ধী পিতা আর নিজের ভরণপোষণের জন্য রং মিস্ত্রির কাজ শুরু করেন ঢাকার সাভারে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তিনি ৫ আগস্ট সাভারে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট হাসিব মারা যান। পরে তাকে দাফন করা হয় পৈত্রিক ভিটায়। তার সরকারি গেজেট নং ৭৭৭।
দাদীর কাছে বড়ো হতে থাকেন মা-হারা হাসিব। নাতির মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না দাদী সিরাতুননেছা। তিনি বলেন, ‘‘আমার নাতি অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছিল। ওর বাবা প্রতিবন্ধী। আমি তাকে মুখে তুলে খাওয়াই। আমার নিজেরই বয়সের কারণে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়; তবু করি। এ অবস্থায় নাতিটা মারা গেলো। শহীদ পরিবারের সবাই ভাতা পেলেও আমার ছেলে দেলোয়ার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত।’’
এ বিষয়ে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন আক্তারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, হাসিবের পরিবারের প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা ও ভাতা প্রাপ্তির জন্য তিনি উদ্যোগ নিবেন।
বেলাল//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব র র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দলগুলো চুপ্পুকে সরাতে ভয় পেয়েছে: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘‘এই প্রজন্ম শেখ হাসিনাকে হঠাতে পেরেছে, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রেসিডেন্ট চুপ্পুকে সরাতে ভয় পেয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সাথে তারা প্রতারণা করেছে। জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে।’’
সোমবার (৭ জুলাই) রাতে পাবনার শহীদ চত্বরে জুলাই পদযাত্রার পথসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছিলাম, সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন দেশ গড়বো। দেশের তরুণরা যে গ্রাফিতি এঁকেছিল, সেই গ্রাফিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান লেখা হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার কথা লেখা হয়েছে। আগামীর সংবিধান আমরা-আপনারা সবাই একত্রে রচনা করবো। সেই সংবিধানের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।’’
তিনি বলেন, “আমরা আগামীর সংবিধান রচনা করবো। সেই সংবিধানের মাধ্যমেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। ৩ আগস্ট নতুন সংবিধান, বিচার ও সংস্কারের দাবিতে গণ-মানুষের মুক্তির ইতিহাস জাতির সামনে প্রস্তাব করবো। সেদিন সবাইকে আসার আহ্বান রইলো।”
সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক কমিটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আকাশে সংকট ঘণীভূত হয়েছে। নির্বাচন তারাই পিছিয়ে দিয়েছে, যারা সংস্কার পিছিয়ে দিয়েছে। আপনারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের রব তুলে নির্বাচনবিরোধী গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা নির্বাচন দ্রুততম সময়ের মধ্যে চাই। তবে সংস্কারসহ নির্বাচন দিতে হবে।’’
পথসভায় সংগঠনটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা যখন দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শুরু করেছি, উত্তরাঞ্চলের সকল জেলা পদযাত্রা শেষ করেছি, তখন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। আমরা দেশে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, মামলাবাজি, দখলবাজি চাই না। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’’
এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা সভায় বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘‘যে সংবিধান নিজের নাগরিককে খুন করতে পারে ,পঙ্গু করে দিতে পারে, অন্ধ করে দিতে পারে, ওই সংবিধান আমাদের দরকার নাই। আমাদের নতুন সংবিধান লাগবে, সেই নতুন সংবিধান আমরা আপনাদের সাথে করে নিয়ে আসবো।’’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আগ্বায়ক মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ, সংগঠক সোহেল রানা মানিক. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনা জেলা শাখার আহ্বায়ক বরকতুল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ।
এর আগে বিকেল ৫টায় পাবনার পথসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এনসিপি নেতৃবৃন্দ পাবনায় পৌঁছান রাত দশটার পরে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহীদ চত্বরে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষসহ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এনসিপি নেতাদের মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
শাহীন//