কুড়িগ্রামের হিমাগারে আলু রাখার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় আলু ফেলে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা। 

মঙ্গলবার ( ৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে প্রায় দেড় ঘণ্টা কুড়িগ্রাম-রংপুর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় সড়কে চলা গাড়ির চালক ও যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে।

অবরোধকারীরা জানান, বাজারে আলুর দাম কম থাকা সত্ত্বেও চলতি মৌসুমে অযৌক্তিকভাবে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধি করেছে মালিকেরা। পরে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।  

আরো পড়ুন:

মঙ্গলবার থেকে সিলেটে শ্রমিকদের ধর্মঘটে গণপরিবহন বন্ধ

ময়মনসিংহে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত

তারা আরো জানান, আলুর বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধির ফলে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে ২২ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি আলুতে হিমাগার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ টাকা ৭৫ পয়সা। এ বছর উৎপাদন খরচ ও হিমাগার ভাড়াসহ সব মিলে প্রতি কেজি আলুতে খরচ পড়বে ২৯ টাকা। আর বর্তমানে বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। এতে প্রতি কেজি আলুতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৪ টাকা। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়ায় হিমাগারে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৫ টাকা নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

সদরের কাঁঠালবাড়ী এলাকার আলু চাষি হাসু জানান, গত বছর যে বস্তা ৩৫০ টাকায় হিমাগারে রাখা হয়েছিল, সেই বস্তা এবার ৪৫০ টাকারও উপরে। এমনিতে আলুর দাম কম, তারপরও যদি হিমাগার ভাড়া এত বেশি হয়, কীভাবে কৃষক বাঁচবে?

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈদা পারভীন জানান, বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। পরে কৃষকরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। তাদের আগামীকাল বুধবার (৯ জুলাই) ডাকা হয়েছে, তারা আসলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঢাকা/বাদশাহ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল রেলস্টেশনে নামা কিশোরী ‘ধর্ষণের শিকার’, যুবক গ্রেপ্তার

মায়ের সঙ্গে সিলেট থেকে ট্রেনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফিরছিল এক কিশোরী (১৭)। সিলেট থেকে ভানুগাছ স্টেশন পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কাটেন তারা। ট্রেনের বগিতে ভিড় থাকায় ভুল করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নেমে পড়ে কিশোরী। কিন্তু মাকে খুঁজে না পেয়ে তার সন্দেহ হয়। তবে তার মধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দেয়।

বাড়িতে ফিরতে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই কিশোরী। তখন আক্তার আলী (২৮) নামের এক গাড়িচালকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি কিশোরীকে জিম্মি করে তার স্বজনের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।

এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পরে আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আক্তারের বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্থ গ্রামে। তিনি পেশায় প্রাইভেটকারের চালক। কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সিলেটে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও কিশোরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিশোরীর পরিবার হতদরিদ্র। সিলেটের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক স্বজনকে দেখে গত ৩০ জুন মায়ের সঙ্গে সে বাড়িতে ফিরছিল। ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে মাকে হারিয়ে ফেলে। ভুলে কুলাউড়া রেলস্টেশনে নামার পর গাড়িচালক আক্তার আলী তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। এতে কিশোরী রাজি হয়ে গাড়িতে ওঠেন। আক্তার তাকে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।

এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের সময় কিশোরীর কাছে একটি মোবাইল ফোন ছিল। সিলেটে যাওয়ার পর আক্তার তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। ওই মোবাইল ফোনে থাকা কিশোরীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে কথা বলেন। তখন তিনি নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে জানান, কিশোরী তাঁর হেফাজতে আছে। তাকে ফেরত পেতে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় সোমবার রাতে নগরের কদমতলী এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুলাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার আলী অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিশোরীকে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ