বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ে-দক্ষিণ আফ্রিকার চলমান টেস্টকে ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়তো ‘উইয়ান মুল্ডারের টেস্ট’ নামে মনে রাখবেন।

কেন? সেই উত্তর সবার জানা। ব্রায়ান লারার অপরাজিত ৪০০ রানের কীর্তি ভেঙে টেস্ট ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করার সুযোগ ছিল মুল্ডারের সামনে। কিন্তু কিংবদন্তি লারার প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রোটিয়া অধিনায়ক তা করেননি।

স্মরণীয় হতে যাওয়া এই টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে কুন্দাই মাতিগিমুর। কিন্তু জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে নিজের প্রথম ম্যাচে এখন পর্যন্ত মাতিগিমু যা করেছেন, সম্ভব হলে তা দ্রুতই ভুলে যেতে চাইবেন। বল হাতে ‘সেঞ্চুরি’ করা, ব্যাট হাতে ‘ডাক’ মারার পর জরিমানা গুনেছেন ২৭ বছর বয়সী এই পেসার।

আগে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা মুল্ডারের মহাকাব্যিক অপরাজিত ৩৬৭ রানের সৌজন্যে ৫ উইকেটে ৬২৬ রান তুলে প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে। সেই ইনিংসে বল হাতে ‘সেঞ্চুরি’ করেছেন জিম্বাবুয়ের চার বোলার। এ তালিকায় অভিষিক্ত মাতিগিমুও আছেন। তিনি দিয়েছেন ১২৪ রান, নিয়েছেন ২ উইকেট।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৭২তম ওভারে মাতিগিমু একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেন। নিজের বলে নিজেই ফিল্ডিং করে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বলটা ছুড়ে মারেন স্টাম্পের দিকে। কিন্তু স্টাম্পে না লেগে বল আঘাত করে স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটসম্যান লুয়ান-ড্রে প্রিটোরিয়াসের কবজিতে। এতে ব্যথায় কিছুক্ষণ কাতরাতে থাকেন প্রিটোরিয়াস।

রোববারের সেই ঘটনায় মাঠের দুই আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ ও জয়রমন মদনগোপাল ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাদুগালের কাছে অভিযোগ জানান। আর আজ এসেছে শাস্তির খবর। আইসিসির আচরণবিধির ২.

৯ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে মাতিগিমুর ম্যাচ ফির ১৫ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর নামের পাশে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়েছে। মাতিগিমু দোষ স্বীকার করে আইসিসির দেওয়া শাস্তি নেমে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি।

বোলিং করতে গিয়ে চোটেও পড়েন মাতিগিমু। রোববার নিজের সপ্তম ওভারের তৃতীয় বল করার পর হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগায় মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। ওভারের বাকি তিন বল করেন ডিও মায়ার্স। কিছুক্ষণ চিকিৎসা নেওয়ার পর আবার মাঠে ফেরেন মাতিগিমু।
জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ে নেমেও ব্যর্থ হন মাতিগিমু। গতকাল ৭ বল খেলেও কোনো রান করতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার অভিষিক্ত অফ স্পিনার প্রেনেলান সুব্রায়েনের বলে হন বোল্ড।

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭০ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে। দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমেও স্বাগতিকেরা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৬ ওভার শেষে জিম্বাবুইয়ানদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৬৯ রান। ইনিংস হার এড়াতে দরকার আরও ২৮৭। দুই ইনিংস মিলিয়ে মুল্ডারের সমান (৩৬৭*) রান করতে প্রয়োজন আরও ২৮।

মাতিগিমুকে খুব সম্ভবত আজই আরেকবার ব্যাটিংয়ে নামতে হতে পারে। দেখা যাক, তিনি কী করেন!

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের হতাশা এবং...

রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ