অন্তবর্তীকালীন সরকার সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে : টিপু
Published: 8th, July 2025 GMT
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৬টি বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় ছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় দেশে এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করলেন, মানুষের ভোটের অধিকার ও বাকস্বাধীনতাকে হরণ করলেন। এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপরে তিনি ইস্টিমরোলার চালালেন।
সর্বশেষ তিনি হত্যা, গুন খুন ও আয়না করে প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। যেই শেখ হাসিনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে প্রতিবাদ করত তাকে রাতের অন্ধকারে তাকে গ্রেফতার করে আয়না ঘরে বন্দী করতো। তার উপরে চলতো নির্মল অত্যাচার অবিচার ।
তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিত। আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে নেতাকর্মীদেরকে সুসংগঠিত করে আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল।
ঠিক তখনই কি আসলো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যখন ডিবি হারুন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কে গ্রেফতার করে ডিবি অফিসের নিয়ে গেল তখন তারা আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিল ঠিক তখনই আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত রপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাকি ৬৫ জন সমন্বয়কদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সুসংগঠিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের পাশাপাশি ২০ দলীয় নেতাকর্মীদেরকে তিনি রাজপথে নামিয়ে দিলেন। পরবর্তীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের কোটা আন্দোলন থেকে সেই আন্দোলন এক দফা আন্দোলনে রূপান্তরিত হলে সেটি চূড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস শেখ হাসিনার পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদল ও বন্দর থানা ছাত্রদলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
মঙ্গলবার ( ৮ জুলাই) দুপুরে মদনপুরের কেওঢালায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময়ে জুলাই -আগস্টে আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের বাক স্বাধীনতা চাই ভোটের অধিকার ফিরে চাই। আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চাই। আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটা চাইতে চাই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই।
শেখ হাসিনা পলিয়ে যাওয়ার পর আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তবর্তী কালীন সরকার আসবে তারা এসে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বিগত ১৬ টি বছর আওয়ামী লীগ যে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল সে অধিকার তারা ফিরিয়ে দিবে। কারণ ফ্যাসিস শেখ হাসিনার দিনের ভোট রাতে সরকারি সংস্থাদের দিয়ে সীল মেরে নিয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করেছি এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচনের আয়োজন করবে কিন্তু আমরা কি দেখলাম এই সরকার সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিচ্ছে। নতুন করে বাংলাদেশ মানুষকে আর আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েন না।
কারণ বাঙালি জাতি ৫২ ভাষা আন্দোলন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধসহ ২৪ শে ফ্যাসিস শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করতে সুতরাং আপনার সেই ভুল করবে না যাতে করে আপনার বিরুদ্ধে আমরা আবারো আন্দোলন সংগ্রাম করি এবং আপনি ক্ষমতা চূর্ণ হন। সুতরা অতি শীঘ্রই আপনি নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।
বন্দর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আল আমিনের সভাপতিত্বে ও মদনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ূন কবির, শাহিন আহমেদ, বন্দর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাওলাদ মাহমুদ, বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধান, টঅবিএনপি নেতা আমান উল্লাহ, গিয়াস উদ্দিন, আবু হানিফ, বন্দর ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আনন্দসহ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ছ ত রদল র স ব এনপ র স আম দ র র আহ ব সরক র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
বইয়ের ভুবনের এক উজ্জ্বল আলোকশিখা
মাত্র ক’টি বই আর সীমিত পুঁজি নিয়ে শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালের ১৭ জুন। চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ের মোড়ে একটি ঘরে যাত্রা শুরু করা বাতিঘর একে একে পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। সেই ক্ষুদ্র পরিসরের স্বপ্ন আজ একুশ বছরে পা রেখেছে। বাতিঘর এখন শুধু একটি বইয়ের দোকান নয়; এ এক মনন ও সৃজনশীলতার আলোকদ্যুতি, পাঠকের ভালোবাসার ঠিকানা।
এই দীর্ঘ পথচলার গৌরব উদযাপনে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় ‘আলাপ, আড্ডা, আবৃত্তি ও গান’-এর। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে জড়ো হতে থাকে বইপাগল মানুষ। লেখক, পাঠক, শিল্পী, সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের মিলনে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, পণ্য হিসেবে বইয়ের বিক্রি অনেক বেশি না। তবে বইবিক্রেতা হিসেবে বাতিঘরের টিকে থাকা তো মননশীলতা-সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি আশাজাগানিয়া ঘটনা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাংলাদেশে বইয়ের ব্যবসায় এখন দ্বিতীয় প্রজন্ম চলছে। বাতিঘর দ্বিতীয় প্রজন্মের বই ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। বইয়ের দোকানও যে আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় হতে পারে, তার একটা দৃষ্টান্ত ও মানদণ্ড তৈরি করে দিয়েছে বাতিঘর।
বইয়ের বিক্রি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বই কতজন পড়ল, সেটি বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে, যারা বই পড়ে, তারাই দেশ-সমাজ-রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর বলেন, প্রকাশক বাতিঘর অনেক ভালো বই প্রকাশ করেছে। পরেও নিশ্চয় করবে। কিন্তু বাংলা সাহিত্যকে বিকশিত করার জন্য অনুবাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার। অনেক আগেই করা দরকার ছিল। বাতিঘরের মতো প্রকাশকরা অনুবাদে গুরুত্ব দিলে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুভেচ্ছাবার্তায় বলেন, বাতিঘর একটি সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বড় শহরগুলোর সুসজ্জিত বই বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতেও এ সৃজনশীলতার পরিচয় মেলে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, লেখক আনিসুল হক, অধ্যাপক মনসুর মুসা, সাহিত্যিক মোহিত কামাল, বাদল সৈয়দ, আলতাফ পারভেজ, আফসানা বেগম, শিল্পী শাহীনুর রহমান, সাংবাদিক দীপ্তি চৌধুরীসহ অনেকে। সন্ধ্যার আয়োজন ছিল গান ও আবৃত্তিতে পূর্ণ। ওয়ারদা আশরাফ, দীপংকর দে, গার্গী ঘোষসহ অনেকেই পরিবেশন করেন সুরের মূর্ছনা।
বাতিঘর এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের চারটি বিভাগীয় শহরে–চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে। শাহবাগ ও বাংলাবাজারেও রয়েছে দুটি বিক্রয়কেন্দ্র। ২০১৭ সালে পূর্ণাঙ্গ প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চার শতাধিক বই প্রকাশ করেছে।
একুশ বছরে পা রাখার এই গৌরব উদযাপনে প্রতিষ্ঠানটি ছয় মাসব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটের শাখাগুলোয় হবে বইমেলা, আলোচনা, পাঠ, প্রকাশনা ও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।