কক্সবাজারে ইতিমধ্যে অপরিকল্পিতভাবে পাঁচ শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস, কটেজ ও কয়েকশ রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়কসহ অলিগলি ডুবে যায়। হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে সমুদ্র ও নদীর পানিতে। তাতে পরিবেশ-প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশও নানা কৌশলে ধ্বংস হচ্ছে। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বিনোদনে নতুন ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে না।

বিষয়টি মাথায় রেখে কক্সবাজারে হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট।

স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের তত্ত্বাবধানে প্রথমবারের মতো এ আয়োজনের শিরোনাম ‘ডিসকোর্স বাই দ্য শোর: ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট-২০২৫’।

কক্সবাজারের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতের পরিবেশবান্ধব ‘মারমেইড বিচ রিসোর্টে’ ১১ ও ১২ জুলাই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আয়োজিত এই সম্মেলনে মূলত পরিবেশবান্ধব পর্যটন এবং জলবায়ু নিয়ে আলোচনা হবে।

দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে স্থাপত্যের মাধ্যমে কীভাবে টেকসই পর্যটনকে সমর্থন করা যায় এবং পরিবেশগত ভারসাম্য ও সাংস্কৃতিক ঐহিত্য তুলে ধরা যায়—তার একটা উপায় বের করা হবে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য স্থপতিরা টেকসই পর্যটন, স্থাপনা নির্মাণ, উপকূলীয় প্রতিরোধক্ষমতা এবং স্থানীয় বাস্তবতাভিত্তিক স্থাপত্যচর্চার সংযোগ নিয়ে আলোচনা করবেন।

সম্মেলন শুরু হবে ‘ইকো ট্যুরিজম এবং স্থাপত্যচর্চায় টেকসইতা’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম, খোন্দকার হাসিবুল কবির ও এহসান খান।

বিকেলে ৭জন স্থপতি তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করবেন। পরে একটি গাইডেড সান-সেট মেডিটেশনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশে নকশা তৈরি করা হবে।

দ্বিতীয় দিনে আরো ১০ জন স্থপতি দুটি সেশনে তাদের ধারণাগুলো তুলে ধরবেন। সম্মেলন শেষ হবে একটি ওপেন ফ্লোর প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে, যার মডারেটর হিসেবে থাকবেন মাহমুদুল আনওয়ার রিয়াদ ও নাহাস খলিল। সমাপনী বক্তব্যে সম্মেলনের সারমর্ম তুলে ধরবেন মেরিনা তাবাসসুম।

সম্মেলনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান মারমেইড বিচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, “কক্সবাজার এখনো বিকাশমান একটি অঞ্চল, পরিবেশবান্ধব কক্সবাজার গড়তে এই সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনে উপকূলীয়, সাংস্কৃতিক এবং টেকসই প্রসঙ্গে কাজ করা স্থপতিরা অংশ নেবেন। তারা পর্যটননির্ভর উন্নয়নে স্থাপত্যের ভূমিকা পুনর্নির্মাণ করবেন।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ স থপত

এছাড়াও পড়ুন:

পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে সহকারী প্রকৌশলী পদে

প্রকৌশল খাতের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, নবম গ্রেডের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে কোটার ভিত্তিতে পদোন্নতি নয়, বরং নিয়োগ হতে হবে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা হতে হবে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি।
গতকার মঙ্গলবার বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে কর্মসূচি শুরু করেন। তারা ‘কোটা না মেধা; মেধা, মেধা’ এবং ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও’ স্লোগানে মুখর করে তোলেন ক্যাম্পাস।

লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, বর্তমানে প্রকৌশল খাতে চরম বৈষম্য চলছে। ডিপ্লোমাধারী উপসহকারী প্রকৌশলীরা অভ্যন্তরীণ কোটার মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত পদোন্নতি পাচ্ছেন। ফলে সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রবেশাধিকারে বাধা তৈরি হচ্ছে। নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তা বাতিল করে ডিপ্লোমাধারীদের পদোন্নতি দেওয়ার নজিরও রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
তারা বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে ৩৩ শতাংশ পদোন্নতির হার নির্ধারিত থাকলেও বাস্তবে তা অতিক্রম করে ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত প্রবেশ পর্যায়ের পদ সংকুচিত হচ্ছে এবং নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সুযোগ কমে যাচ্ছে, যা সংবিধানের ‘সুযোগের সমতা’র নীতির পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো অনুযায়ী ডিপ্লোমা ডিগ্রি ‘লেভেল-৬’ এবং বিএসসি ডিগ্রি ‘লেভেল ৭’-এর অন্তর্ভুক্ত। যেখানে ডিপ্লোমাধারীরা দশম গ্রেডের পদে আবেদন করতে পারেন, সেখানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিএসসি প্রকৌশলীরা সেই পদে আবেদন করতে পারেন না– এটি অবিচার ও বৈষম্যের উদাহরণ। এমন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রতিবেশী দেশগুলোতেও নেই।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা তিনটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেন। প্রথমত, ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদেরই নিয়োগ দিতে হবে। কোনো কোটার মাধ্যমে বা ভিন্ন নামে সমমান পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। 

দ্বিতীয়ত, দশম গ্রেড বা উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়ের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। তৃতীয়ত, বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নন-অ্যাক্রিডেটেড বিএসসি কোর্সগুলোকে যথাযথভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের অ্যাক্রিডিটেশনের আওতায় আনতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ