মুসিয়ালার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন, মাঠের বাইরে থাকবেন কয়েক মাস
Published: 8th, July 2025 GMT
বায়ার্ন মিউনিখের তরুণ তারকা জামাল মুসিয়ালা সফলভাবে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেই চিকিৎসকের ছুরির নিচে যেতে হয় এই জার্মান মিডফিল্ডারকে।
বায়ার্ন মিউনিখ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনের (পিএসজি) বিপক্ষের ম্যাচে ভয়াবহ চোট পান ২২ বছর বয়সী মুসিয়ালা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই তার বাঁ পায়ের ফিবুলা হাড় ভেঙে যায় এবং গোড়ালিতে মারাত্মক স্থানচ্যুতি ঘটে।
অস্ত্রোপচারের পর মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) থেকেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন তিনি। তবে ডাক্তারদের মতে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে তার কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলিয়ান আগুন নিভিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন
সান সিরোতে ইন্টারের বায়ার্ন পরীক্ষা
এই ভয়াবহ চোটের খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুসিয়ালাকে সমবেদনা ও শুভকামনা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য খেলোয়াড়, কোচ ও ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেখা গেছে ব্যাপক সাড়া।
ভবিষ্যতের অন্যতম সম্ভাবনাময় তারকা হিসেবে বিবেচিত মুসিয়ালার এমন চোট নিঃসন্দেহে বায়ার্নের জন্য বড় ধাক্কা। তবে তার দ্রুত সুস্থতা কামনায় আপাতত ফুটবল দুনিয়া একসঙ্গে প্রার্থনায় ব্যস্ত।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশ দুর্লভ হওয়ার ইতিকথা
ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর বলা হলেও খোদ চাঁদপুরের মানুষই ইলিশ পায় না। বাস্তবেও চাঁদপুরের চেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায় বরিশাল ও বরগুনায়। তবে এবার কোথাও সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না ইলিশ। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ভরা মৌসুমেও মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ। চাঁদপুর, বরগুনা, বরিশাল কিংবা পটুয়াখালীর মোকাম– কোথাও ভোক্তার নাগালের মধ্যে নেই ইলিশ। এ বছর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ইলিশের দাম বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে, সে অর্থে তা কার্যকর হয়নি। গত মাসের শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ইলিশের দাম যেন কোনো অবস্থাতেই অস্বাভাবিকভাবে না বাড়ে, সে বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ইলিশের দাম ধরে রাখার কথা বললেও বাস্তবে ইলিশ আকাশচুম্বী।
ইলিশের দাম অনেক দিন ধরেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেও উপদেষ্টা সাধারণ মানুষকে ইলিশ খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন মাত্র ৬০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ বিক্রির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন ও মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ‘স্বল্প মূল্যে’ ইলিশ বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন বটে, সে দিন অনেকেই ইলিশের জন্য এসে খালি হাতে ফিরেছেন। অল্প সময় পরই বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কথা ছিল প্রথম লটে বিক্রি হবে ৮৫০ কেজি। সেখানে বিক্রি করা হয়েছিল মাত্র ১০০ কেজি। আয়োজকরা এর বেশি ইলিশ নাকি সংগ্রহই করতে পারেননি!
এখন এক কেজি ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার টাকায়ও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। জেলেরাও ঠিকমতো ইলিশ পাচ্ছেন না। প্রত্যাশা নিয়ে সাগর বা নদীতে জাল ফেলেও অনেকটা খালি হাতে ফিরছেন। সাগরে গিয়ে অনেকের খরচও উঠছে না। আগে যেখানে জাল ফেললেই ইলিশ পেতেন, এখন সেই জালে ইলিশ ধরা দিচ্ছে না। অবশ্য বড় ইলিশ ধরতে পারলে তা সোনায় সোহাগা।
সোমবার প্রকাশিত সমকালের খবর, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামে এক জেলের জালে ধরা পড়ে দুই কেজির এক ইলিশ, যা বিক্রি হয় ৭ হাজার ৭০০ টাকায়। ইলিশ দুর্লভ হয়ে ওঠার কারণেই এর দাম আকাশচুম্বী। আগেই ইলিশের দাম বেশি ছিল, এবার আরও বাড়ল। অথচ বাংলাদেশেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইলিশ হয়। কয়েক বছর আগের হিসাব বলছে, বিশ্বের ৮০ ভাগ ইলিশের উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। যদিও প্রশ্ন উঠছে, ইলিশ উৎপাদনের সরকারি হিসাব বাস্তবসম্মত কিনা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। তাহলে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন কেন? দিন দিন ইলিশের উৎপাদন বাড়লে এবারও তো তেমনটা হওয়ার কথা। অথচ বাজারে তার প্রতিফলন নেই। অনেক মধ্যবিত্ত এমনকি উচ্চবিত্ত পরিবারও এখন ইলিশ কিনতে পারছে না।
সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে অনেকের ক্ষোভ ও অনাস্থা উঠে এসেছে। ইলিশ জাতীয় মাছ হিসেবে সাধারণ মানুষের জন্যও এর প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দরকার। কিন্তু প্রতিবেশ-পরিবেশের কারণে ইলিশ মাছ হয়ে উঠছে বিরল। তার পরও জাতীয় ইলিশ সবার জন্য হোক– এ প্রত্যাশা রাখতেই হবে। কীভাবে ইলিশের উৎপাদন বাড়তে পারে, সে জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশিত। জাটকা সংরক্ষণসহ ইলিশের সব ঝুঁকির বিষয় চিহ্নিত করে এর বৃদ্ধিতে নজর দিতে হবে। জেলেরা ইলিশ পেলে যেমন তাদের মুখে হাসি ফুটবে, তেমনি ভোক্তাও লাভবান হবেন।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com