নেদারল্যান্ডসের মসজিদের ইমাম কেন গেলেন ইসরায়েলে
Published: 8th, July 2025 GMT
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের সঙ্গে সাক্ষাৎ করায় নেদারল্যান্ডসের একজন ইমামকে মসজিদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ইমামের নাম ইউসুফ মসিবিহ। তিনি নেদারল্যান্ডসের উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলকমারের বিলাল মসজিদের ইমাম ছিলেন।
ইউরোপের ১৫টি দেশের মুসলিম নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ইসরায়েল সফরে যায়। ওই প্রতিনিধিদলে ইউসুফও ছিলেন। গতকাল সোমবার তাঁরা ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত রূপান্তর করে আরবি ভাষায় একটি গান পরিবেশন করেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিলাল মসজিদ ওই ইমামকে বরখাস্তের কথা জানায়। মসিবিহকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের’ ঘোষণা দেওয়া হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইমামের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদ তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ মুহূর্ত থেকে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর আর কোনো সম্পর্ক নেই।’
এ সফরের আয়োজন করে এলনেট নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। তারা ইসরায়েল ও ইউরোপের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছে। প্রতিনিধিদলটি গতকাল ইসরায়েলের পার্লামেন্টসহ অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ওল্ড সিটিতে থাকা মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করে।
প্রতিনিধিদলটি ইয়াদ ভাসেম নামের একটি হলোকাস্ট মেমোরিয়াল সেন্টার পরিদর্শন করবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরবি মুখপাত্র আভিখাই আদরিয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাদের। সম্প্রতি তেল আবিবে ইরানের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করবে তারা।
এরপর গাজায় জিম্মি ফিলিস্তিনি বেদুইন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করবে প্রতিনিধিদলটি। পাশাপাশি ইসরায়েলের অধিকৃত গোলান মালভূমিতে বসবাসরত সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে তারা, যাঁদের স্বজনেরা সন্দেহভাজন হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় নিহত হয়েছেন।
ইউরোপের মুসলিম প্রতিনিধিদলে ইতালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মুসলিম নেতারা আছেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন ফ্রান্সের বিতর্কিত ইমাম হাসেন চালগুমি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ষ ৎ কর ইসর য় ল বরখ স ত ইসর য মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই শীর্ষ তালেবান নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) আফগানিস্তানের তালেবানের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশটির নারী ও কিশোরীদের নানাভাবে দমন–পীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আইসিসি গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, আফগানিস্তানে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসে। এর পর থেকে দেশটিতে নারী ও কিশোরীদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগের ‘যুক্তিসংগত ভিত্তি’ রয়েছে।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নারী ও কিশোরীদের ওপর একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অনেক চাকরি থেকে নারীদের বিরত রাখা।
আফগানিস্তানে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীরা কত দূর ভ্রমণ করতে পারবে, সে বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে তালেবান। এমনকি জনসমক্ষে নারীদের কথা বলার বিষয়েও নির্দেশনা জারি করেছে তারা।
এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের জনগণের ওপর কিছু নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। তবে তারা নারী ও কিশোরীদের বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করেছে। জাতিসংঘ এসব বিধিনিষেধকে ‘লিঙ্গবৈষম্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তালেবান। তারা বলেছে, তালেবান এই আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না। আদালতের এমন পরোয়ানাকে ‘সুস্পষ্ট শত্রুতামূলক পদক্ষেপ’ এবং ‘বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের বিশ্বাসের প্রতি অপমান’।
তালেবান সরকারের দাবি, তারা আফগানিস্তানের সংস্কৃতি ও ইসলামি আইন অনুযায়ী নিজস্ব ব্যাখ্যার ভিত্তিতে নারীদের অধিকারকে সম্মান করে।
গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে কাজ করে আইসিসি। কোনো দেশ এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে বা বিচার করতে না চাইলে আইসিসি এ উদ্যোগ নেয়।