টাঙ্গাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
Published: 8th, July 2025 GMT
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগম বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে সাড়ে ৮ লাখ লুটের অভিযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও জিয়াউর রহমান।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করা পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চবির অফিস সহকারী বরখাস্ত
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে বলা হয়, ছালেহা বেগমের বাড়ি থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্তপূর্বক সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ১২ এর উপধারা ১ মোতাবেক সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে তাদের প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করার আদেশ করা হয়েছে।
সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগম অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, “গত ১৮ জুন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন প্রথমে আমার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে তাদের গাড়ির তেল খরচের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমি তাদের ১০ হাজার টাকা দেই। পরবর্তীতে তারা আমাকে বাকি ১০ হাজার ঢাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে বলে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে তারা পুনরায় আমার ঘরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র এলোমেলো করতে থাকেন।”
অভিযোগে তিনি আরো বলেন, “প্রায় ৩ ঘণ্টার অধিক সময় নাটকীয়ভাবে অভিযান চালিয়ে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখানো হয়। একপর্যায়ে তারা ঘরের আলমারির তালা খুলে সেখানে থাকা নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা নেন। আমার ছেলের ঘরে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র এলোমেলো করে ও ঘরের আলমারির ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে, আমাকে ও আমার ছেলের স্ত্রীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে জবানবন্দি ভিডিও রেকর্ড করা হয়।”
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করে। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়াও দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বরখ স ত অভ য গ কর মকর ত বরখ স ত
এছাড়াও পড়ুন:
পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে সহকারী প্রকৌশলী পদে
প্রকৌশল খাতের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, নবম গ্রেডের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে কোটার ভিত্তিতে পদোন্নতি নয়, বরং নিয়োগ হতে হবে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা হতে হবে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি।
গতকার মঙ্গলবার বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে কর্মসূচি শুরু করেন। তারা ‘কোটা না মেধা; মেধা, মেধা’ এবং ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও’ স্লোগানে মুখর করে তোলেন ক্যাম্পাস।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, বর্তমানে প্রকৌশল খাতে চরম বৈষম্য চলছে। ডিপ্লোমাধারী উপসহকারী প্রকৌশলীরা অভ্যন্তরীণ কোটার মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত পদোন্নতি পাচ্ছেন। ফলে সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রবেশাধিকারে বাধা তৈরি হচ্ছে। নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তা বাতিল করে ডিপ্লোমাধারীদের পদোন্নতি দেওয়ার নজিরও রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
তারা বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে ৩৩ শতাংশ পদোন্নতির হার নির্ধারিত থাকলেও বাস্তবে তা অতিক্রম করে ৪০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত প্রবেশ পর্যায়ের পদ সংকুচিত হচ্ছে এবং নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সুযোগ কমে যাচ্ছে, যা সংবিধানের ‘সুযোগের সমতা’র নীতির পরিপন্থি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতীয় যোগ্যতা কাঠামো অনুযায়ী ডিপ্লোমা ডিগ্রি ‘লেভেল-৬’ এবং বিএসসি ডিগ্রি ‘লেভেল ৭’-এর অন্তর্ভুক্ত। যেখানে ডিপ্লোমাধারীরা দশম গ্রেডের পদে আবেদন করতে পারেন, সেখানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিএসসি প্রকৌশলীরা সেই পদে আবেদন করতে পারেন না– এটি অবিচার ও বৈষম্যের উদাহরণ। এমন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রতিবেশী দেশগুলোতেও নেই।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা তিনটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেন। প্রথমত, ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদেরই নিয়োগ দিতে হবে। কোনো কোটার মাধ্যমে বা ভিন্ন নামে সমমান পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
দ্বিতীয়ত, দশম গ্রেড বা উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়ের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। তৃতীয়ত, বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নন-অ্যাক্রিডেটেড বিএসসি কোর্সগুলোকে যথাযথভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের অ্যাক্রিডিটেশনের আওতায় আনতে হবে।