ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী থাকবে
Published: 22nd, May 2025 GMT
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী থাকবে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসকে লেখা এক চিঠিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এ কথা বলেছেন।
ইরান এবং ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার পঞ্চম দফায় পারমাণবিক আলোচনা করবে। তবে ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর মতবিরোধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে। তবে তেহরান ধারাবাহিকভাবে বোমা তৈরির চেষ্টা অস্বীকার করে আসছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বেসামরিক উদ্দেশ্যে।
বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “ইরান ইসরায়েলের ইহুদিবাদী সরকারের যেকোনো দুঃসাহসিকতার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্কতা দিচ্ছে এবং এই সরকারের যেকোনো হুমকি বা বেআইনি কাজের প্রতি দৃঢ়ভাবে জবাব দেবে।”
তিনি বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলি হুমকির ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছি, যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে আমাদের পারমাণবিক স্থাপনা ও সরঞ্জাম প্রতিরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।”
মন্ত্রী বলেন, তেহরান এই ধরনের যেকোনো হামলায় ওয়াশিংটনকে ‘অংশগ্রহণকারী’ হিসেবে দেখবে।
তিনি বলেন, “আমাদের পদক্ষেপের প্রকৃতি, বিষয়বস্তু ও ব্যাপ্তি এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তাদের বিধিবদ্ধ কর্তব্য ও বাধ্যবাধকতা অনুসারে গৃহীত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সমানুপাতিক হবে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউএনওর সঙ্গে তর্কের জেরে অফিসে আসেন না পিআইও
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয় নিয়ে গত শুক্রবার ইউএনওর সঙ্গে মাহবুবুর রহমানের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন পিআইও।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মাহবুবুর রহমান উপজেলায় টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির বিভিন্ন প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। এ বিষয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে একাধিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি অফিস করছেন না। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকায় প্রকল্প কমিটির সদস্যরা পিআইও কার্যালয়ে কাজ করে বিলের টাকা পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে পিআইও হিসেবে যোগ দেন কে এম মাহবুবুর রহমান। তিনি যোগ দেওয়ার পর থেকে উপজেলায় বিভিন্ন প্রকল্পে লাখ লাখ টাকার ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। শুধু ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পে পিআইওর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ইউএনওর কাছে অনেকে অভিযোগ জানাতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে গত ১৬ মে এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে দেখা করেন পিআইও। এক পর্যায়ে ইউএনওর সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা হয়। প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে পিআইওকে জানিয়ে দেন ইউএনও। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারী নাজমুল ইসলাম। পরদিন রাতে ইউএনও বরাবর তিন দিনের ছুটি চেয়ে একটি আবেদন লিখে নিজ কার্যালয়ের টেবিলে রেখে যান পিআইও। এরপর থেকে অফিসে আসছেন না তিনি।
পিআইও কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইউএনওর বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এনেছেন পিআইও। এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই সূত্রটি আরও জানায়, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশ হওয়ার ভয়ে গত মঙ্গলবার অফিসের কার্যসহকারী নাজমুল ইসলামকে ছাতক থেকে বদলি করিয়েছেন পিআইও। নাজমুলকে রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।
পিআইও কে এম মাহবুবুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ সবকিছুই ইউএনওর ষড়যন্ত্র। তিনি আমাকে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।’ এ বিষয়ে গত রোববার জেলা প্রশাসকসহ নিজ দপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সহকারী কমিশনার হাসিবুল হাসান বলেন, গত ১৯ থেকে ২১ মে পর্যন্ত ছাতকের পিআইও ছুটিতে ছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ইউএনওর বিরুদ্ধে পিআইওর অভিযোগের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এ বিষয়টি জেলা প্রশাসক দেখবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারীর সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা কে এম মাহবুবুর রহমানের কিছু ঝামেলা হয়েছিল। এজন্য তাঁকে ডেকে বকাঝকা করে সতর্ক করা হয়েছিল, লাঞ্ছিত করা হয়নি। পিআইওর বিরুদ্ধে তাঁর দপ্তরে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।