Samakal:
2025-05-23@03:11:11 GMT

হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগ

Published: 23rd, May 2025 GMT

হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগ

 অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস এমন একটি রোগ, যা হাড়ের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে রক্ত সরবরাহ বন্ধের ফলে হয়। রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে হাড়ের টিস্যু মারা যায় এবং হাড় ভেঙে যায়। যখন কোনো জয়েন্ট, যেমন– হিপ জয়েন্টের কাছাকাছি হয়, তখন জয়েন্টের পৃষ্ঠটি ভেঙে যেতে পারে। এ অবস্থা যে কোনো হাড়ে হতে পারে। এটি সাধারণত লম্বা হাড়ের শেষ মাথায় হয়। সাধারণত একটি হাড় একই সময়ে অনেক হাড় অথবা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হাড়কে ক্ষয় করে।

কোথায় কোথায় নেক্রোসিস হতে পারে গোড়ালি, চোয়াল, হাঁটু, হাতের হিউমেরাস ও কাঁধের জয়েন্ট, পায়ের ফিমার ও হিপ জয়েন্টে। 

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের কারণ

কোনো কারণে জয়েন্টে আঘাত পেলে; জয়েন্ট ভেঙে গেলে; রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে; দীর্ঘদিন ধরে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ সেবন করলে; অতিরিক্ত মদ্যপান করলে; দীর্ঘদিন ধরে কোনো রোগে আক্রান্ত হলে, যেমন– ডায়াবেটিস; রক্তে কোনো রোগ থাকলে, যেমন– সিকেল সেল অ্যানিমিয়া  লিউকেমিয়া; রেডিয়েশন বা কেমোথেরাপি কারণে; এইচআইভি/এইডস রোগের জন্য; অটো ইমিউন রোগের জন্য; হাইপার লিপিডেমিয়ার কারণে; হাইপার কোয়াগুলেবেল অবস্থায় থাকলে; প্যানক্রিয়াটাইটিস; গাউচার রোগ; সিস্টেমেটিক লুপাস ইরাইথিম্যাটাস রোগ থাকলে; কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে, জয়েন্ট ডিসলোকেশন হলে।

রোগের লক্ষণ

হাঁটাচলা করার সময় ব্যথা লাগা, পায়ে টান লাগা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ব্যথা অনুভব করা, দাঁড়ানোর সময় ব্যথা অনুভব করা, হাঁটু ভেঙে বসতে না পারা, আক্রান্ত অঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়া, কুঁচকিতে-ঊরুতে-নিতম্বে ব্যথা হওয়া, বিশ্রাম নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব হওয়া, ক্রস পায়ে বসতে না পারা ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়

এক্স-রে, এমআরআই, সিটিস্ক্যান, হাড়ের স্ক্যান, বায়োপসি, হাড়ের কার্যকারিতা পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়। 

চিকিৎসা

এ রোগের চিকিৎসা কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, যেমন– বয়স, রোগের পর্যায়, হাড়ের ক্ষতির পরিমাণ।

নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসা

আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা বা গরম সেঁক, কিছু ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ওষুধ,  ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং কার্যকর বিশ্রাম।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা 

কোর ডি কম্প্রেশন, হাড় গ্রাফটিং, অস্টিওটমি, সম্পূর্ণ হিপ জয়েন্ট প্রতিস্থাপন।

জটিলতা 

চিকিৎসা করা না হলে এই রোগ ধীরে ধীরে খারাপ রূপ ধারণ করে। অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের ফলে হাড়ের মসৃণ আকৃতি নষ্ট হয়। ফলে আর্থ্রাইটিস হতে পারে। ব্যথা বা অন্য কোনো লক্ষণ প্রকাশ পেলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন  হতে হবে।  

লেখক : ফিজিওথেরাপি, ডিজঅ্যাবিলিটিজ ও রিহ্যাবিলিটেশন স্পেশালিস্ট এবং সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালট্যান্ট ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চার-পাঁচ হাতবদল হওয়াসহ পণ্যের দাম বৃদ্ধির যত কারণ

পণ্যের দাম বাড়ার প্রাথমিক কারণ সরবরাহের ঘাটতি। তবে মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার কারণেও পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। কৃষকের মাঠ থেকে উৎপাদিত প্রতিটি পণ্য চার–পাঁচ হাত ঘুরে ক্রেতার হাতে পৌঁছায়। যদিও পণ্যের দামের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন কৃষক বা উৎপাদকেরা। অর্থাৎ লাভ কিংবা লোকসান—দুটিরই বড় হিস্যা যায় কৃষকের ঘাড়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের ১৪টি জেলায় অত্যাবশ্যকীয় পাঁচটি কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করতে জরিপটি করেছে। যে পাঁচটি পণ্যের ওপর জরিপ করা হয় সেগুলো হচ্ছে—চাল, আলু, পেঁয়াজ, ডিম ও ব্রয়লার মুরগি।

জরিপে উঠে আসে বছরের যে সময়ে ধান, আলু ও পেঁয়াজের মতো পণ্যের উৎপাদন মৌসুম থাকে না, ওই মাসগুলোতে এসব পণ্যের দাম বেশি বাড়ে। এ জন্য মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে এসব পণ্য আমদানি উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোরও সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যের পেছনে যে খরচ হয়, তার প্রায় চার ভাগের এক ভাগ যায় চাল কিনতে। উৎপাদন পর্যায় (কৃষক) থেকে অন্তত পাঁচ–ছয় হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে চাল বিক্রি হয়। এ কারণে একজন ক্রেতাকে উৎপাদন ব্যয়ের দ্বিগুণ বা তার বেশি দামে চাল কিনতে হয়। জরিপে বলা হয়েছে, এক কেজি মোটা চালের (ধান) উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৩৪ টাকা; সেই চাল খুচরায় ক্রেতারা কেনেন ৬২–৬৩ টাকায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত বছর দেশে বন্যা ও অতিরিক্ত পোকার আক্রমণে আমন ধানের উৎপাদন কম হয়েছিল। এতে বাজারে চালের ঘাটতি দেখা দেয়। এ ছাড়া ডলার–সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চাল আমদানিও সম্ভব হয়নি। এ কারণে চালের দাম বাড়তি ছিল। এ ছাড়া ধান চাষের কৃষিজমি কমে যাওয়া; বিদ্যুৎ, সার, ডিজেল, শ্রমিকের মজুরি ও সুদহার বৃদ্ধি—প্রভৃতি কারণও চালের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

চার পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণ

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গত অর্থবছরে ১ কোটি ৬ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছিল। আর দেশে আলুর চাহিদা বছরে আনুমানিক ৯০ লাখ টন। তারপরও গত বছরের নভেম্বরে আলুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল। কারণ, চাহিদা ও উৎপাদনের তথ্যে বেশ গরমিল ছিল। এ সুযোগে আলুর সরবরাহব্যবস্থায় থাকা মধ্যস্বত্বভোগীরা দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। গত বছর প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের ব্যয় হয় ১৭ টাকা, যা তাঁরা ১৮ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। সেই আলু বাজার থেকে খুচরায় ক্রেতারা কিনেছেন ৪০ থেকে ৯০ টাকা দরে। চালের মতো আলুও চার–পাঁচ হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে পৌঁছায়। এর মধ্যে হিমাগার থেকে আলু ছাড়ের সময় দামে বড় পার্থক্য তৈরি হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, দাম স্থিতিশীল রাখতে আলুর সঠিক চাহিদা ও উৎপাদনের তথ্য জানা জরুরি। সে আলোকে হিমাগার থেকে ধাপে ধাপে আলু ছাড়ের ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। হিমাগার থেকে আলু ছাড়ের ক্ষেত্রে বাজার পরিস্থিতি অনুসারে প্রতি মাসে দামের সীমা নির্ধারণেরও প্রস্তাব করা হয় প্রতিবেদনে।

জরিপে উঠে আসে, কয়েক বছর ধরেই দেশে পেঁয়াজের দাম উৎপাদন খরচের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ২৫০ টাকায় উঠেছিল। গত বছর কয়েক দফা অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে বহু পেঁয়াজ নষ্ট হয়। এসব কারণে মূলত সরবরাহ সংকট থেকে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের মজুতের কারণেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কৃষকের মাঠে উৎপাদনের পরে অন্তত পাঁচ হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে পৌঁছায় পেঁয়াজ। অবশ্য গত বছরের তুলনায় এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম অনেক কম। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চলতি বছর প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয় ছিল ৫৪ টাকা। গত জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি মাসে সেই পেঁয়াজ কৃষক বিক্রি করেছেন ৩৫–৪৮ টাকায়। গত বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজে কৃষকেরা ১৭৪ শতাংশ মুনাফা করেছিলেন। সেখানে এ বছর ২৪ শতাংশ লোকসান হয়েছে তাঁদের। লোকসানের কারণ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর অতিরিক্ত মুনাফা করায় এ বছর বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। পাশাপাশি পেঁয়াজ বীজ, জমি ইজারা, শ্রমের মজুরিও বেড়েছে।

ডিম ও ব্রয়লার মুরগির বাজারেও ২–৩ ধরনের মধ্যস্বত্বভোগী রয়েছে বলে জরিপে উঠে আসে। তবে এই দুই পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে পোলট্রি খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার দাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিম উৎপাদনের ৭৪ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় খাদ্যের পেছনে। আর বাচ্চা কিনতে ১৪–২০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়। পোলট্রি খাদ্যের প্রায় ৭০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। গত তিন–চার বছরে বৈশ্বিক বাজারে খাদ্যের কাঁচামালের দাম বেশি থাকায় দেশেও পোলট্রি খাদ্যের দাম বেশি ছিল। এদিকে বাড়তি ব্যয় সামলাতে না পেরে অনেক ছোট খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পোলট্রি খাদ্য ও বাচ্চার দাম কমানো এবং ছোট ও মাঝারি আকারের খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে, কমেছে মিনিকেট চালের দাম
  • পানিসংকটে চরম দুর্দশায় গাজাবাসী, লবণাক্ত পানি পান করছে শিশুরা
  • সিলেটে পাঁচ দিন ৩৯ এলাকায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে
  • চার-পাঁচ হাতবদল হওয়াসহ পণ্যের দাম বৃদ্ধির যত কারণ
  • নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  • লোডশেডিংয়ে ‘নাকাল’ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
  • ইবিতে স্থাপিত হবে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র
  • মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা: ভালো হতে চেয়ে হলেন মাদক সম্রাট
  • ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের বৃহৎ খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান কো-অপ