বগুড়ায় ‘তারুণ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ কাল
Published: 23rd, May 2025 GMT
বগুড়ায় আগামীকাল শনিবার ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ করবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের লক্ষাধিক তরুণের সমাগম ঘটাতে চায় আয়োজকরা। সে জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর আগে আজ শুক্রবার বগুড়া শহরের হোটেল মমইনে ‘তারুণ্যের সেমিনার’ হবে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৩টায় শহরের সূত্রাপুর সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে তারুণ্যের সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মাঠ সাজানো হয়েছে ফেস্টুন-ব্যানার দিয়ে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কলেজ কমিটির নেতাকর্মীকে সমাবেশে আনার জন্য সাত দিন আগে থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রস্তুতি সভা অব্যাহত আছে। প্রতিটি জেলা থেকে অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মী যাতে আসে, সংশ্লিষ্ট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। সব জেলা থেকে বাস ও কোচ ভাড়া করা হয়েছে। ট্রেনে করেও আসবে অনেকে। ইতোমধ্যে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল নেতারা।
সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে মাসব্যাপী একটি বিশেষ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচির উদ্দেশ্য– বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা। এই আয়োজনে বিষয়ভিত্তিক পলিসি সংলাপকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রযুক্তি, পরিবেশ ও রাজনৈতিক অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তরুণদের মতামত ও ভাবনা। এই ধারাবাহিকতায় আজ বগুড়ায় তৃতীয় সেমিনার হবে। পরদিন হবে সমাবেশ।
সেমিনার ও সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। আয়োজকরা জানান, এই সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি তারুণ্যের আকঙ্ক্ষা ও প্রত্যয়ের এক ঐতিহাসিক মিলনমেলা। নানা মত-পথ, শ্রেণি-পেশা চিন্তাধারায় তরুণরা একত্র হবেন একটি ন্যায্য, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।