মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে এ মাসের শেষে জর্ডানে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। সেই সফরের জন্য আজ বাফুফে ঘোষিত ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দলে জায়গা পেয়েছেন কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ৯ ফুটবলার।

তাঁরা হলেন রুপনা চাকমা, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও মোসাম্মত সাগরিকা।

দলে জায়গা হয়নি সাফজয়ী পাঁচ ফুটবলার সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, মাতসুশিমা সুমাইয়া, কৃষ্ণা রানী ও সানজিদা আক্তারের৷

গত ৩০ জানুয়ারি বাফুফে ক্যাম্পে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে সাবিনার নেতৃত্বে ১৮ জন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে জানান, কোচকে দায়িত্বে বহাল রাখা হলে তাঁরা খেলবেন না। এ বিষয়ে বাফুফে সভাপতিকেও চিঠি দিয়েছিলেন তাঁরা।

সর্বশেষ গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের স্কোয়াডে থাকা ১১ জনকে এই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের দলে রেখেছেন কোচ। তাঁরা হলেন আফঈদা খন্দকার (অধিনায়ক), মেঘলা রানী, জয়নব বিবি, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, হালিমা আক্তার, শাহেদা আক্তার, সুরভী আকন্দ, মোসাম্মত সুলতানা ও নবীরণ খাতুন।

এই সফরে নতুন মুখ তিনজন—গোলকিপার ফেরদৌসী আক্তার, মিডফিল্ডার শান্তি মার্ডি ও ফরোয়ার্ড উমেলা মারমা।

২৩ জুন থেকে শুরু এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাই, চলবে ৫ জুলাই পর্যন্ত। মিয়ানমারে ‘সি’ গ্রুপের খেলায় বাংলাদেশের তিন প্রতিপক্ষ মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান।

গুরুত্বপূর্ণ সেই টুর্নামেন্টের আগে ৩১ মে ও ৩ জুন স্বাগতিক জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল সকাল ১০টায় জর্ডানের বিমান ধরবেন তাঁরা।

২৩ সদস্যের বাংলাদেশ দল

গোলরক্ষক
রুপনা চাকমা, মেঘলা রানী, ফেরদৌসী আক্তার

ডিফেন্ডার
শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র, আফঈদা খন্দকার, জয়নব বিবি

মিডফিল্ডার
মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, হালিমা আক্তার, শান্তি মার্ডি

ফরোয়ার্ড
ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, মোসাম্মত সাগরিকা, শাহেদা আক্তার, সুরভী আকন্দ, মোসাম্মত সুলতানা, নবীরণ খাতুন ও উমেলা মারমা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ম মত স ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ছোটদের সাফেও জয়ের আশা

এই কয়েক দিন আগে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেছিলেন আফঈদা খন্দকার। তাঁর নেতৃত্বে মিয়ানমারে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ নারী দল। প্রথমবার উঠে যায় এএফসি এশিয়ান কাপে; যে আসরটি অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায়। আবারও নেতৃত্বের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। এবার ছোটদের সাফে বাংলাদেশের অধিনায়ক আফঈদা। সিনিয়রদের দলের অধিনায়ক হলেও শুধু বয়সসীমার কারণে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে অনায়াসে খেলতে পারছেন এ ডিফেন্ডার। 

জাতীয় দলের মতো আগামীকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুরু হতে যাওয়া ছোটদের সাফেও জয়ের আশা আফঈদার। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপাল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। সর্বোচ্চ পয়েন্টধারী দল হবে চ্যাম্পিয়ন। ভারত না থাকায় টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট স্বাগতিক বাংলাদেশ। উদ্বোধনী দিনে বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার মেয়েদের বিপক্ষে।

মিয়ানমারে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে খেলা দলের ১১ ফুটবলার বয়সের কারণে অনূর্ধ্ব-২০ সাফে খেলার সুযোগ পাবেন। তবে কোচ পিটার বাটলার জাতীয় দল থেকে নিয়েছেন আট ফুটবলার– আফঈদা খন্দকার, মোসাম্মৎ সাগরিকা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, স্বর্ণা রানী মণ্ডল, জয়নব বিবি রিতা, মিলি আক্তার ও উমহেলা মারমা। নবিরন খাতুন, সুরমা জান্নাত, কানান রানী বাহাদুর, অয়ন্ত বালা মাহাতো, পূজা দাসের মতো নতুন কিছু প্রতিভাবান আছেন, যারা কিনা নজর কাড়তে পারেন। 

একসঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ খুব একটা না পেলেও এই দল নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক আফঈদা। গতকাল বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়কের কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাই করার পর আমরা যদিও এই দলের সঙ্গে অনুশীলন করার বেশি সময় পাইনি। যে কদিন অনুশীলন করেছি, কোচ আমাদের যেভাবে বলেছেন, সেভাবে অনুশীলনের চেষ্টা করেছি। ২০২৩ সালে এই টুর্নামেন্টে আমরা চ্যাম্পিয়ন। এখানে ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কাউকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। ওরাও ভালো খেলে। তবে আমরাও ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেতে চাই। যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি আমরা।’

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের নারী ফুটবলে পরিবর্তন এনেছেন কোচ পিটার বাটলার। গত বছর নেপালে সাফ,  মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে গ্রুপ সেরা হওয়ার পর বাটলার আশাবাদী অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে, ‘এই মেয়েরা সবাই দায়িত্ববান। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে দুর্দান্ত খেলেছে। তাদেরই বেশির ভাগ এখানে খেলবে। সাত ফুটবলার এই দলে খেলার যোগ্য। মেয়েরা প্রস্তুত। গত কিছুদিন ওরা দারুণ অনুশীলন করেছেন। আশা করি, এখানে আমরা ভালো কিছুই উপহার দেব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৃষ্টিভেজা অনুশীলনে সাফের প্রস্তুতি আফঈদাদের
  • ছোটদের সাফেও জয়ের আশা
  • ইতিহাস গড়া আফঈদাদের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ