৫ বছরেও শেষ হয়নি শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের কাজ
Published: 27th, May 2025 GMT
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স বর্তমানে ৫০ শয্যায় চলছে রোগীদের চিকিৎসা সেবা। শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। তবে নির্ধারিত সময় পার হলেও নতুন ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভবন এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ, কাজ শেষ হলেও এখনও ১০০ শয্যা ভবনে রয়েছে বেশকিছু ত্রুটি। যেকারণে এখনই কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না নতুন ভবনটিতে।
নতুন হাসপাতালটিতে আধুনিকমানের আইসিইউ, সিসিউ, ল্যাব, উন্নতমানের কেবিন, এক্সরে-রুমসহ আধুনিক মানের কনফারেন্স রুম থাকবে। শিবচরের মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবেন হাসপাতালটি চালু হলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩৩২ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের শিবচর উপজেলা ১৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত একটি আধুনিক জনবহুল উপজেলা। জরুরি প্রয়োজনে উপজেলার অধিকাংশ মানুষ চিকিৎসা সেবার জন্য ছুটে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এছাড়া দরিদ্র, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের চিকিৎসা ভরসা সরকারি এই হাসপাতালটি।
নির্ধারিত সময়ে নতুন ভবনের কার্যক্রম শুরু না হওয়ার ফলে চিকিৎসাসেবাসহ প্রয়োজনীয় সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি এবং রোগীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে এই তথ্য।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০শয্যায় উন্নতিকরণে ২০২০ সালের নভেম্বরে কার্যাদেশ হয়। ২০২৪ সালের ২০ জুন কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তরের কথা ছিল। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। কাজ পেয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজাদ এন্ড হামীম (জেভি)।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে পট পরিবর্তনের পর কাজের অগ্রগতি কমে যায়। সম্প্রতি কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তরের কথা থাকলেও কিছু ত্রুটিযুক্ত কাজের কারণ দেখিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০০ শয্যা হাসপাতালটি গ্রহণ না করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ত্রুটি সংশোধনের জন্য চিঠি দেয়।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, কাজ শেষে হাসপাতাল ও হাসপাতালের কোয়াটারগুলোতে পানির সমস্যা দেখা গেছে। পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া এক্সেরে রুমে পর্যাপ্ত রেডিয়েশন প্রুফ থাকার কথা থাকলেও তা নেই। স্যানিটেশন ফিটিংয়ে কিছু ত্রুটি দেখা গেছে। তাছাড়া কর্মকর্তারা লিফট পরিদর্শনে গিয়েও বিড়ম্বনায় পড়েন।
নতুন ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভবনটির কার্যক্রম চালু হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান স্বাস্থ্য সেবা পেতে আসা সাধারণ রোগীরা। দ্রুতই নতুন ১০০ শয্যার কার্যক্রম চালুর দাবি জানান তারা।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মাদারীপুরের সহকারী প্রকৌশলী মো.
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবিন বলেন, “কিছু ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে, যেকারণে ভবনটি বুঝিয়ে দিতে পারেনি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে বলে নিশ্চিত করেছেন।”
ঢাকা/বেলাল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ য কমপ ল ক স শ বচর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সালাউদ্দিন কাদের-দেলাওয়ার হোসাইন এভাবেই ফিরে আসতে পারতেন: সারজিস
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী বেঁচে থাকলে জামায়াত নেতা এ টি আজহারুল ইসলামের মতো কারামুক্তি পেতেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
মঙ্গলবার (২৭ মে) একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে জামায়াতে ইসলামীর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস পাওয়ার পর ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।
সেখানে তিনি লেখেন, “মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহার আজকে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আওয়ামী দুঃশাসনের শিকার, মিথ্যা মামলায় জীবন হারানো এমন কিছু মানুষকে আজ মনে পড়ছে। হয়তো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী কিংবা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমাদের মাঝে আজ এভাবেই ফিরে আসতে পারতেন! ফিরে আসতে পারতেন নাম না জানা গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হওয়া হাজারো আমাদের ভাই-বোন।”
“কিন্তু সেই সুযোগ আর নেই। আমাদের যাদের সুযোগ হয়েছে এই মা, মাটি ও দেশের জন্য কিছু করার, তারা যেন সৌভাগ্যক্রমে পাওয়া এই সুযোগ এবং আমানতের খেয়ানত না করি।”
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি আপিল করেন। আপিলের শুনানি শেষে আজহারুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেন। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
রায় প্রকাশের পর পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল। এই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লিভ মঞ্জুর করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে পাশাপাশি দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দিতে বলা হয়। পরে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দেওয়া হয়।
এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ রায়ের ফলে তার মুক্তিতে আর বাধা নেই।
এর রায়ের পর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, “নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম খালাস পেয়েছেন।”
ঢাকা/ইভা