মেয়েকে ১৫ মাস ধরে খুঁজছিলেন মা। খোঁজ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরে সাবেক স্বামীর ভাড়া বাসায় মেয়েকে দেখতে যান। তখন তাঁকে ঘরে আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে। এই সুযোগে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

৯৯৯-এ ফোন পেয়ে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে ওই নারীকে ঘরে আটকে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার নবাবগঞ্জের কোমরগঞ্জ এলাকার মহিউদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে সেলিমের সঙ্গে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার আজিজুল ইসলামের মেয়ে তাবাসসুম লামিয়ার ২০১৩ সালে বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ছয় বছরের এক মেয়েসন্তান আছে। পারিবারিক কলহের জেরে ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মেহেদী তাঁর মেয়ে আফিয়া মায়ামিনকে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে নিয়ে নবাবগঞ্জে চলে আসেন। এর পর থেকে তাবাসসুম মেয়েকে পেতে সাবেক স্বামীর বাড়িতে বারবার খোঁজ করতে থাকেন। গত ১৫ মাসে তিনি পুলিশের সহায়তায় আট থেকে দশবার নবাবগঞ্জে এসেছেন। এ সময়ের মধ্যে মেহেদী বাসা বদল করে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন।

গতকাল বিকেলে খবর পেয়ে তাবাসসুম নবাবগঞ্জের কাশিমপুর এলাকার আদনান ভিলার ভাড়া বাসায় মেয়েকে দেখতে যান। মেয়ে মায়ামিনকে কোলে নিতে গেলে মেহেদী তাঁকে দেখে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন। সঙ্গে থাকা স্বজনেরা জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। এই সুযোগে মেহেদী মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান।

তাবাসসুম লামিয়া বলেন, ‘আমার সাবেক স্বামী মেহেদী আমাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। আমার মেয়েকেও দেখতে দেননি। আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই। মেয়েকে আমার কাছ থেকে আড়াল করতেই মেহেদী বারবার বাসা বদল করেছেন।’

মেহেদী হাসান ওরফে সেলিম মুঠোফোনে বলেন, ‘শিশুটিকে নিয়ে আদালতে মামলা আছে। আদালত এটা ফায়সালা করবেন। তাঁকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।’

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন পেয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেহেদীর স্বজনেরা সময় নিয়েছেন। তাঁরা থানায় এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আদালতে মামলা থাকলে থানার কিছু করার এখতিয়ার নেই।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের রামুতে বন্য হাতির হামলায় ভাই নিহত, বোন আহত

কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড়ে বন্য হাতির আক্রমণে আবদুর রহমান নামের দেড় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার বোন আহত হয়। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের মইত্তাতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন বিভাগের ঈদগড় রেঞ্জ কর্মকর্তা তৌকির হাসান প্রথম আলোকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্য রাতে আমির হামজার বাড়িতে বন্য হাতি হামলা চালায়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, একপর্যায়ে আমির হামজার দেড় বছরের শিশু আবদুর রহমান ও মেয়ে বিলকিস আকতার (১০) হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আবদুর রহমানের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে চট্টগ্রাম নেওয়ার পথে আজ বুধবার ভোরে আবদুর রহমান মারা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ