মাকে ঘরে আটকে মেয়েকে নিয়ে পালালেন বাবা
Published: 18th, June 2025 GMT
মেয়েকে ১৫ মাস ধরে খুঁজছিলেন মা। খোঁজ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরে সাবেক স্বামীর ভাড়া বাসায় মেয়েকে দেখতে যান। তখন তাঁকে ঘরে আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে। এই সুযোগে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
৯৯৯-এ ফোন পেয়ে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে ওই নারীকে ঘরে আটকে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার নবাবগঞ্জের কোমরগঞ্জ এলাকার মহিউদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে সেলিমের সঙ্গে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার আজিজুল ইসলামের মেয়ে তাবাসসুম লামিয়ার ২০১৩ সালে বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ছয় বছরের এক মেয়েসন্তান আছে। পারিবারিক কলহের জেরে ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মেহেদী তাঁর মেয়ে আফিয়া মায়ামিনকে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে নিয়ে নবাবগঞ্জে চলে আসেন। এর পর থেকে তাবাসসুম মেয়েকে পেতে সাবেক স্বামীর বাড়িতে বারবার খোঁজ করতে থাকেন। গত ১৫ মাসে তিনি পুলিশের সহায়তায় আট থেকে দশবার নবাবগঞ্জে এসেছেন। এ সময়ের মধ্যে মেহেদী বাসা বদল করে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন।
গতকাল বিকেলে খবর পেয়ে তাবাসসুম নবাবগঞ্জের কাশিমপুর এলাকার আদনান ভিলার ভাড়া বাসায় মেয়েকে দেখতে যান। মেয়ে মায়ামিনকে কোলে নিতে গেলে মেহেদী তাঁকে দেখে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন। সঙ্গে থাকা স্বজনেরা জাতীয় জরুরি নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। এই সুযোগে মেহেদী মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান।
তাবাসসুম লামিয়া বলেন, ‘আমার সাবেক স্বামী মেহেদী আমাকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। আমার মেয়েকেও দেখতে দেননি। আমার মেয়েকে ফিরে পেতে চাই। মেয়েকে আমার কাছ থেকে আড়াল করতেই মেহেদী বারবার বাসা বদল করেছেন।’
মেহেদী হাসান ওরফে সেলিম মুঠোফোনে বলেন, ‘শিশুটিকে নিয়ে আদালতে মামলা আছে। আদালত এটা ফায়সালা করবেন। তাঁকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।’
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন পেয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেহেদীর স্বজনেরা সময় নিয়েছেন। তাঁরা থানায় এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আদালতে মামলা থাকলে থানার কিছু করার এখতিয়ার নেই।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ হলো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া ‘টাইগার শার্ক’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া ‘টাইগার শার্ক’ সফলভাবে শেষ করেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, পারস্পরিক সমন্বয় এবং দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই মহড়ার মাধ্যমে দুই পক্ষের প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব জোরদার হয়েছে।
শনিবার ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকারের প্রতিফলন টাইগার শার্ক মহড়া। এই মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ড এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা একসঙ্গে চিকিৎসা প্রশিক্ষণ, টহল, লক্ষ্যভেদ অনুশীলন, সাঁতার, ডুবসাঁতার এবং ক্লোজ কোয়ার্টারস কমব্যাটসহ বিভিন্ন সমন্বিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত) ট্রেসি জ্যাকবসন বলেন, ‘এই যৌথ সামরিক মহড়া নিরাপদ, শক্তিশালী ও আরও সমৃদ্ধ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করে। এটি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্বেরও প্রতীক।’
কৌশলগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি টাইগার শার্কে অন্তর্ভুক্ত ছিল বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের বিনিময়, যৌথ পরিকল্পনা সেশন এবং কৃত্রিম অনুশীলন পরিবেশে প্রশিক্ষণ। এসব কার্যক্রম ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল গঠনে সহায়তা করা।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ড হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম যুদ্ধ কমান্ড, যা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম তদারকি করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে।