প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপের পর সংলাপে জামায়াত
Published: 18th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপে একদিনের বয়কটের পর আজ বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে দ্বিতীয় ধাপের মূলতবি সংলাপে অংশ নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে। একটি দলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন অভিযোগ করে প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সংলাপ বয়কট করে জামায়াত।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ সংলাপে অংশ নিতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসেন।
মধ্যাহ্নের বিরতিতে ডা.
মঙ্গলবার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে করে ডা. তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। তিনি কিছুটা অনুধাবন করতে পেরেছেন। আশ্বস্ত করেছেন সরকার নিরপেক্ষ, কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর প্রতি ঝুঁকে নেই। আগামীতে এসব ব্যাপারে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন এবং যত্নবান হবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আজকের সংলাপে এসেছি। কিছুতে অচল অবস্থার সৃষ্টি হোক চাই না। সরকারকে সহযোগিতা করেছি সবসময়। কিন্তু ব্যত্যয় হলে কথা বলতে হবে।
জামায়াত নায়েবে আমির বলেন, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এর প্রতিবাদে জামায়াত মঙ্গলবারের সংলাপ বয়কট করে। প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়েছেন পুরস্কার আনতে, পাচার করা টাকা ফেরত আনতে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ও নির্বাচনের তারিখের বিষয়েও আপত্তি নেই। জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য তারিখ বলার পরও, তা আলোচনার মাধ্যমে পরিবর্তন করা যেতে পারে। কিন্তু ভালো হতো বাংলাদেশে এসে আলোচনা করে তারিখের বিষয়ে পুনরায় বলা। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা তা করেননি।
সরকার ও বিএনপির বৈঠকের যৌথ বিবৃতিকে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল আখ্যা দিয়ে ডা. তাহের বলেন, বিভিন্ন দেশে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল বা সংসদের প্রতিনিধিত্বকারীদের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি হয়। দেশে শতাধিক দল আছে। তাহলে তো এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি হবে, প্রধান উপদেষ্টা যার সঙ্গে কথা বলবেন, একটা যৌথ বিবৃতি দিতে হবে। এতে অন্যান্য দল বিব্রত হয়েছে। তবে বিএনপির ব্যাপারে জামায়াতের বক্তব্য নেই।
নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে অনিশ্চয়তা নেই- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে জামায়াত। এছাড়া মেয়র পদের জন্য নগর ভবন তালাবদ্ধ করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে ডা. তাহের বলেন, যিনি একমাসেও একটি ভবনের তালা খুলতে পারেন না, ৩০০ সংসদীয় আসনের কিভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবেন, সেটাও বিস্ময়ের ব্যাপার। আমি উনাকে সংযতভাবে কথা বলার অনুরোধ করছি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কী হবে, এটা বুঝার জন্য অনুরোধ করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ব এন প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আফ্রিদি-জয় শাহর ভাইরাল ভিডিওটি এশিয়া কাপের নয়
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাসছে। স্টেডিয়ামে বিশেষ অতিথিদের গ্যালারিতে পাশাপাশি বসে বর্তমান আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। বেশ হাসিমুখে কথা বলছেন দুজন। জয় শাহর পাশেই বসে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। মাঝে একটি আসন দূরে বসে বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংসদ সদস্য অনুরাগ ঠাকুর। তিনিও জয় শাহ ও আফ্রিদির সঙ্গে বেশ হাসিমুখে কথা বলছিলেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ এশিয়া কাপে কয়েকবারের ‘চ্যাম্পিয়ন’, ভেবেছিলেন আফগানিস্তান কোচ১০ ঘণ্টা আগেদুবাইয়ে গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই দাবি করেন, এই ভিডিও চলমান এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের। সমালোচনা করে অনেকেই বলেন, ভারতে যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কটের দাবি উঠেছে, সেখানে তাঁদের মধ্যে এত হৃদ্যতা আসে কোত্থেকে? একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর জনতার ক্ষোভের মধ্যেই এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে জয় শাহ ও অনুরাগ ঠাকুরকে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। গোটা দেশ যখন ম্যাচটি বয়কটের ডাক দিয়েছে, তখন বিজেপির নেতা অনুরাগ ঠাকুর ও জয় শাহ শহীদ আফ্রিদি ও মহসিন নাকভির সঙ্গে মজা করছেন ও সময়টা উপভোগ করছেন।’
ভিডিওটির সত্যতা পরীক্ষা করে ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের নয়। এটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ভিডিও। তখন দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচের এই ভিডিও নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই এটাকে গত পরশুর ম্যাচের ভেবে ভুল করেছেন। ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গত ২২ এপ্রিল। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার আগে।
আরও পড়ুনকেন পাকিস্তানের এমন হার—ব্যাখ্যা দিলেন আকরাম, আফ্রিদি ও গাভাস্কার১০ ঘণ্টা আগেভিডিওটি আরেকটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় মাঠের হোর্ডিংয়ে ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫’ লেখা। পাশাপাশি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ‘এক্স’ ব্যবহারকারী একই ভিডিও শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন, ‘দুবাই স্টেডিয়ামে শহীদ আফ্রিদি ও জয় শাহ একসঙ্গে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ দেখছেন।’ ক্যাপশনের নিচে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ভারত–পাকিস্তান ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি লেখা। গত ফেব্রুয়ারি–মার্চে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচিতেও দেখা যাচ্ছে, দুবাইয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচে ৬ উইকেটে জেতে ভারত।
এশিয়া কাপে গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ বয়কটের দাবি তুলেছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাই। দেশটির সাবেক অফ স্পিনার হরভজন সিং ও সাবেক ক্রিকেটার কেদার যাদবরা এই ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানান। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস (ডব্লুসিএল) টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর পর থেকে এশিয়া কাপের ম্যাচটি বয়কটের ক্যাম্পেইন আরও বেশি করে শুরু হয় ভারতে। এমনকি ম্যাচটি বাতিলে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) আবেদন করা হয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। যদিও জরুরি ভিত্তিতে তা শুনানির জন্য রাজি হননি আদালত।