জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার পক্ষে গণসংহতি আন্দোলন
Published: 18th, June 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষমতা যদি একচ্ছত্রভাবে সরকারের হাতে থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনও ভুয়া নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলে চালিয়ে দিতে পারে। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে এ কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেখেছি। তাই সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান তৈরির কথা বলেছি।’
ইতিপূর্বে সাংবিধানিক পদগুলোতে রাজনৈতিক আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজকের আলোচনা রাজনৈতিক ইতিহাসের আনন্দঘন দিন। এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের বিষয়ে যদি আমরা একমত হতে পারি, এটা ঐতিহাসিক হবে।’
এনসিসি গঠনের বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের অবস্থান তুলে ধরে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এনসিসি প্রতিষ্ঠায় আমরা নীতিগতভাবে একমত। তবে এর গঠন নিয়ে আমাদের কিছু পর্যালোচনা রয়েছে। আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে ঐকমত্য হবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। যদিও এখনো অনেক রাজনৈতিক দল একমত হয়নি।’
অনেক রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে এনসিসি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এনসিসির আওতা নিয়েও অনেকের দ্বিমত রয়েছে। তবে আমরা মনে করি, আলোচনা চলমান রাখা দরকার। এই কাউন্সিল রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব : আলী রীয়াজ
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অসমাপ্ত আলোচনা শেষ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এ কথা বলেন আলী রীয়াজ। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোড অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে অংশ নিতে দেখা যায়নি জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যে সহযোগিতা দেখাচ্ছেন সে জন্য রাজনীতিক দলগুলোর প্রতি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। "
আলী রীয়াজ বলেন, "আমরা আশা করছি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে, আমাদের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি সমস্ত বিষয়গুলোতে যাতে আমরা সকলে একমত না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে মতে আসতে পারি।" তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হতে পারব না, কিন্তু তারপরেও আমরা জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেন খানিকটা হলো ছাড় দিয়ে এক জায়গায় আসতে পারি। সবগুলি বিষয়ে শেষ করতে পারব এমন নিশ্চয়তা নেই।’
আজকের আলোচনায় সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব সহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ),প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া সহ বেশ কিছু বিষয় আলোচনার কথা রয়েছে। আগামী ১৭, ১৮ এবং ১৯ জুন তিন দিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত রয়েছেন আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।