খুলনায় গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের কাছ থেকে চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়েছেন তার সহযোগীরা। 

বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকের ঘটনা এটি। 

দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাটের হারুন মোল্লার ফার্ণিচারের দোকানে নাসিমকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। 

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে পুকুরে ডুবে কলেজছাত্রের মৃত্যু

ক্ষেতে গরু যাওয়ায় মাকে মারধর, ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নাসিম পালিয়ে গেলেও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে অংশ নেওয়া তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। 

রাতে ঘটনার বিষয়ে তথ্য দেন দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহীন। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যার দিকে দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এসআই তারেকের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পাটির নেতা এবং একাধিক হত্যা মামলার আাসামি নাসিমকে গ্রেপ্তারের জন্য উপজেলার ফরমাইশখানা ঘোলারঘাট এলাকায় অভিযানে যায়। 

দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযানে নামে। তবে নাসিমকে ধরতে পারেনি। যদিও রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিমের দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।

ওসি শাহীন বলেন, উপজেলা ফরমাইশখানা গ্রামে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নাসিমকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার বাহিনী পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে নাসিমকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। নাসিমের সহযোগীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।

সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে; একই সঙ্গে অভিযানও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

চবির বিশেষ ভোজের টোকেনে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘অতিথি’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন

চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ

এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”

তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”

তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”

এ বিষয়ে শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ